জেনে নিন সিকিম ভ্রমনের টুকি-টাকি সহ দর্শনীয় প্লেসগুলো সম্পর্কে ।

Ads Inside Post

জেনে নিন সিকিম ভ্রমনের টুকি-টাকি সহ দর্শনীয় প্লেসগুলো সম্পর্কে ।

✏️সিকিম নূ্ন্যতম জনবসতি এবং পাশাপাশি ভারতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য সিকিম , প্রকৃতি প্রেমিকদের কাছে এটি এক স্বর্গ। দেশের উত্তর-পূর্ব অংশে অবস্থিত সিকিম রাজ্যটি দক্ষিণদিকে পশ্চিমবঙ্গ দ্বারা বেষ্টিত রয়েছে এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এটি তার আন্তর্জাতিক সীমানা ভূটানের সাথে ভাগ করে নিয়েছে, পশ্চিমদিকে নেপাল এবং উত্তর-পূর্ব দিকে চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তিব্বত দ্বারা সীমান্তবর্তী রয়েছে। সুন্দর পাহাড়, গভীর উপত্যকা এবং জীব বৈচিত্র্যে ভরা সিকিম পর্যটকদের জন্য একটি পছন্দের জায়গা। গ্যাংটক এই রাজ্যের রাজধানী সহ সিকিমের বৃহত্তম শহর হিসাবেও পরিচিত এবং এটি শিবালিক পর্বতের উপরে ৫৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম পর্বত, কাঞ্চনজঙ্ঘার অতীব সৌন্দর্য এই গ্যাংটক থেকেও দেখা যায়। মোট ৬ লাখেরও বেশি জনসংখ্যা সহ সিকিমের মোট আয়তন হল মোটমুটি প্রায় ৭০০০ বর্গ কিলোমিটার। রাজ্যের অধিকাংশ এলাকা পার্বত্যময় হওয়ায় সিকিমে গ্রীষ্মকাল বেশ মনোরম, তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রীর বেশি অতিক্রম করে না। অন্যদিকে শীতকালে তাপমাত্রা হিমাঙ্কেরও নীচে নেমে যায়। ✏️গ্যাংটক সিকিমের রাজধানী শহর। ভারতের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত সিকিমের রাজধানী হল গ্যাংটক। এছাড়াও এটি রাজ্যের বৃহত্তম শহর হিসাবেও পরিচিত। এটি রাজ্যের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে শিবালিক পর্বতের উপরে ৫৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থান করছে। গ্যাংটক, স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ হল ‘পর্বত শৃঙ্গ’, এটি দেশের এক সর্বোত্তম আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্যস্থল। এছাড়াও এটি হিমালয় শৃঙ্গের মধ্যে অবস্থিত রাজ্যের বৃহত্তম শহর হিসাবেও পরিচিত। পাশাপাশি গ্যাংটক হল, পূর্ব সিকিমের জেলাগুলির সদর দপ্তর। পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ, কাঞ্চনজঙ্ঘা-কে এই শহরের পূর্বদিক থেকে দেখা যায়। ✏️সিকিমের বিভিন্ন আবহাওয়া সিকিমের বাসিন্দারা দুই প্রকার জলবায়ু অনুভব করে। রাজ্যের উত্তর অংশ তুন্দ্রা জলবায়ু অনুভব করে, অন্যদিকে, রাজ্যের দক্ষিণ অংশে উপ-ক্রান্তীয় জলবায়ু লক্ষ্য করা যায়। তুন্দ্রা জলবায়ুর উপস্থিতির কারণে, এই রাজ্যের উত্তর অংশ বছরের প্রায় ৪ মাস বরফাবৃত থাকে, এইসময় এখানে রাত্রের তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রী-র নীচে নেমে যায়। ✏️ পেলিং (Pelling): ওয়েস্ট সিকিম এর খুব পরিচিত হিল স্টেশন যা ৬৭০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এবং এটি কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ শোভা দেখার জন্য বিখ্যাত। মূলত তিনটি ভাগে পেলিংকে ভাগ করা হয়েছে – আপার, মিডল এবং লোয়ার পেলিং। অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা পেলিং এর আশেপাশে ছড়িয়ে আছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। পাগল করা ঝর্ণা, নদী, কমলালেবুর বাগান, পাহাড়ঘেরা লেক, উপত্যকা, সুপ্রাচীন বৌদ্ধ মনাস্ট্রি, বিখ্যাত ব্রীজ – এ সবই পেলিং ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণ। একনজরে পেলিং এর দর্শনীয় স্থানগুলো- সাঙ্গাচোলিং চেনরেজিগ ট্যুরিজম পার্ক এবং স্কাই ওয়ার্ক, সাঙ্গাচোলিং মোনাস্ট্রি ( সিকিমের সবচেয়ে পুরানো মনেস্ট্রি্‌ ছাঙ্গে জলপ্রপাত, রিম্বিক জলপ্রপাত , রক গার্ডেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা জলপ্রপাত, খেচিপুড়ি পবিত্র লেক এবং মনাস্ট্রি ✏️ পেলিংয়ে সূর্যোদয়— পেলিংয়ে হোটেল ভাড়া কমবেশি হয় সূর্যোদয়ের জন্য। কাঞ্চনজঙ্ঘার উপরে এত সুন্দর রঙের খেলা অন্য কোথাও চট করে পাবেন না। প্রধান চুড়োর একেবারে মাথায় একটু আলো পড়ে প্রথমে। তার পরে সেই আলো মাখামাখি হয় কাঞ্চনজঙ্ঘার গায়ে। পাল্টাতে থাকে রং। প্রকৃতির এক অনবদ্য কারসাজি। ✏️লাচুং-ইয়ুমথাং: পর্যটকদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় উত্তর সিকিমের সফর। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত অত্যধিক বরফের জন্য। আর বর্ষাকালটা (জুলাই-অগস্ট) রাস্তা প্রায়শই ভেঙে যাওয়ার কারণে, এই সফর কিছুটা অনিশ্চিত হলেও, বছরের বাকি সময় দিব্যি উপভোগ করা যায় এই সফর। এপ্রিল-মে মাসে ‘ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার’ ইউমথাং উপত্যকা ভরে থাকে বিভিন্ন রঙের রডোডেনড্রনে, সঙ্গে প্রিমুলা ও অন্য নানান প্রজাতির ফুলও শোভা বাড়ায় সেই অসাধারণ সৌন্দর্যে। বছরের বাকি সময় চোখজুড়োনো সবুজ উপত্যকা, তার বুক চিরে বয়ে যাওয়া নীল নদী, তুষারমুকুট মাথায় পড়া পাহাড়শ্রেণি দারুণ ভাবে আকর্ষণ করে ভ্রমণার্থীকে। ✏️বরফের চাদরে মুখ ঢেকেছে সুন্দরী ইয়ুমথাং গ্যাংটক থেকে ভোর ভোর বেরিয়ে কাবি, ফোদং, মংগন, সিংঘিক, চুংথাং হয়ে পৌঁছে যাবেন লাচুং-চু নদীর পাশেই অবস্থিতি এই পাহাড়ি গ্রামে। গ্রামের কার্পেট বুনন কেন্দ্র ও গুম্ফাটিও দেখে নিন সময় নিয়ে। রাতটা লাচুং-এ কাটিয়ে পর দিন সকালে যাত্রা শুরু করুন ইযুমথাং-এর দিকে। লাচুং থেকে দূরত্ব মাত্র ২৩ কিলোমিটার। ১১,৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই ইউমথাং উপত্যকা শীতকালে পুরোপুরি ঢেকে যায় শ্বেতশুভ্র বরফচাদরে, তখন তার এক অন্য রূপ। বাকি সময় সবুজ ঘাসের কার্পেটে মোড়া এই উপত্যকা, আর নীলরঙা নদীর বয়ে চলা মুগ্ধ করবে ভ্রমণপিপাসু মানুষজনকে। উপত্যকার শুরুতেই রয়েছে একটি উষ্ণ ঝর্না, সেটাও দেখে নিতে ভুলবেন না। ✏️ইয়ুমথাং সফর শেষ করে ফেরত আসতে হবে আবার চুংথাং-এ। দু’দিক থেকে বয়ে আসা লাচুং-চু আর লাচেন চু নদীর মিলনে, তিস্তা নদীর জন্মও হচ্ছে চুংথাং-এই। চুংথাং থেকে লাচেন চু নদীর ধার দিয়ে পৌঁছে যাবেন লাচেন। উচ্চতা ৯৪০০ ফুট। গ্যাংটক থেকে চুংথাং-এর দূরত্ব ৯৬ কিলোমিটার, চুংথাং থেকে লাচেন-এর দূরত্ব ২৯ কিলোমিটার। দেখে নিতে পারেন লাচেন গুম্ফাটিও। ✏️জরুরি তথ্য: গ্যাংটক থেকে (উচ্চতা ৫৫০০ ফুট)। উচ্চতাজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। লাচুং, ইয়ুমথাং (১১৮০০ ফুট)। অধিক উচ্চতার জায়গায় বেশি দৌড়ঝাঁপ না করাই ভাল, শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।


Post a Comment

0 Comments