রোদ বৃষ্টি

Ads Inside Post

রোদ বৃষ্টি

১ পাত্রী দেখতে এসে পাত্রীর বাড়িতে তিনবার টয়লেটে যাওয়া হয়ে গেছে। এই অবস্থা দেখে পাত্রীর মা অবশ্য বলে ফেলেছে “বাবা তোমার কি পেট খারাপ?” আমি কিছুক্ষন উনার দিকে তাকিয়ে ঠিকঠাক উত্তর না দিয়ে উল্টো প্রশ্ন করলাম “আপনাকে আমার এই মুহুর্তে কি ডাকা উচিৎ? আন্টি, হবু শ্বাশড়ি আম্মা নাকি শুধু পাত্রীর মা?” উনি আমার কথা শুনে হা করে তাকিয়ে থাকলেন। তবে সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছে উনার স্বামীটা। এমন কথা শুনে উনি এহেম এহেম করে দুটো কাশি দিয়েছিল। কিন্তু এতে অবাক হওয়ার কি আছে আমি কিছুই বুঝলাম না। এমন প্রশ্ন করা কি ঠিক হয়নি? আমার প্রাণ প্রিয় আব্বা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য হাসি দিয়ে বললো “আমার ছেলেটা এমোনি বুঝলেন ভাইসাব।সহজ সরল ছেলে। মুখে কিছু আটকায় না।” আব্বার সাথে তাল মিলিয়ে আম্মা বললো “আপনারা আবার কিছু মনে করবেন না।ও এমন করেই কথা বলে।” এটা বলেই আম্মা আমার দিকে তাকিয়ে চোখ বড় বড় করে ইশারা করলো। যেন আমায় বলছে “বাসায় যাইয়া নে, তোর টয়লেটে যাওয়া আমি বাহির করবো।দেখবো তুই কতবার টয়লেটে যেতে পারিস। আজ তোরে সত্যি খাইছি।” আমি চুপ থাকলাম। পাত্রীর মা মুখে চাপা হাসি এনে বললো “বাবা তুমি যেটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধকরছো সেটাই ডাকতে পারো এখন।” আমি কি বলবো বুঝতে পারলাম না। বুঝতে পারলাম না এই কথা বলাটা কি আমাকে মানাবে যে পাত্রী দেখতে এসে আমার নার্ভাস লাগছে। আমার ভিতরটাতে নার্ভাসের মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে শরীরে ঘাম দেয়। আর তখন গোসল দিতে ইচ্ছা করে। তাই হাত মুখ ধোয়ার জন্য গিয়েছি। কিন্তু এটা কেন হয় আমার, বুঝতে পারি না। কিন্তু আমি বললাম “আপনাদের মেয়ে কোথায়? তাড়াতাড়ি একটু আসতে বলবেন? আপনার মেয়ে কি সাঁজগোজ করছে? এখনকার মেয়ে মানুষের এই এক প্রবলেম আন্টি বুঝলেন যত না তারা সাঁজগোজের মাঝে সময় দেয় ঠিক তত তারা রান্নাবান্না যদি মনোযোগ দিয়ে শিখতো। আমার খুব ইচ্ছা আমার বউ আমাকে মাঝে মাঝে ভালো রান্না করে খাওয়াবে। আপনার মেয়ে রান্না পারে তো?” এটা বলার পর উনার স্বামী আরও কয়েকটা কাশি দিল। আব্বা হাসতে হাসতে আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরে বললো “তুই এতো রসিকতা কেন করিস বাবা? একটু থাম।” আমি বেশ বুঝতে পারলাম আব্বা আমাকে আর একটাও কথা না বলার জন্য এভাবে চেপে ধরেছে। আমি আব্বার হাত ছাড়িয়ে বললাম “এইভাবে কেউ ধরে? এটা রসিকতা না আব্বাজান।” পাত্রীর বাবা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন “বাবা তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে। যারা এমন করে সোজা সাপটা বলে ফেলতে পারে সেই মানুষগুলো আসলেই ভালো হয়। তাদের মনে কোন প্যাচ থাকে না। বাবা আমার মেয়ে খুব ভালো রান্না করতে পারে। নিজের মেয়ে বলে এমন বলছি না।” . এর মিনিট খানেক পরেই পাত্রী নাস্তার ট্রেতে নাস্তা নিয়ে এসে সালাম দিয়ে আমাদের বিপরীতে বসে।পাত্রীর নাম সুমাইয়া আফরিন। আমি বেশ কয়েকবার সুমাইয়ার দিকে তাকালাম। এই দেখার মাঝে উপলব্দি করলাম আমার ভিতরে যে নার্ভাসটা কাজ করছিল তা কোথায় যেন হারিয়ে গেলো।এমন সাধারন একটা মেয়েকে মায়াবতীর মত লাগবে বুঝতে পারিনি। একদম সাধারনভাবেই তেমন সাঁজগোজ না করেই সামনে এসেছে। এই সাধারণের মাঝেও আমি অসাধারন কিছুকে খুজে পাই। খুজে পাই সুমাইয়া আফরিনের চোখ দুটোর মাঝে এক ধরনের পাখির ছাপ। সেই পাখির নাম ঘুঘু পাখি। চোখ জুড়ানো ঘুঘু। এই ঘুঘু লোকালয়ে থাকলেও সবার সামনে আসে না। লুকিয়ে লুকিয়ে থাকতেই পছন্দ করে। আচ্ছা আমার কি পাত্রী সুমাইয়াকে জিজ্ঞেস করা উচিৎ কেমন আছেন সুমাইয়া আফরিন? এসব ভাবতেই সুমাইয়া আফরিন নাস্তার ট্রে থেকে একটা গ্লাস নিয়ে আমার দিকে বাড়িয়ে বললো “শুনলাম আপনি তিনবার টয়লেটে গিয়েছেন? এই স্যালাইনটুকু খান আমি নিজ হাতে বানিয়েছি।” আমি আম্মার দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে সুমাইয়ার হাত থেকে স্যালাইনটুকু নিয়ে ঢগঢগ করে খেয়ে একটা হাসি দিলাম। আমি জানতাম ঘুঘু পাখিরা একদম চুপচাপ টাইপের হয়, লজ্জাবতী হয়, কিন্তু এই ঘুঘু পাখি যে এমন করে বলে ফেলবে কে জানতো।মিস সুমাইয়া আপনার কি লাজ শরম বলতে কিছু নেই? এমন করে কেউ লজ্জা দেয়? যদিও আমি কথাগুলো মনে মনে বলেছি। এই কথা প্রকাশ করার সাহস আমার নেই। এরপর আমার বাবা মা আর ওর বাবা মা টুকটাক কথা বললো। আমি শুধু আড়াল চোখে কয়েকবার অনুভব করলাম সুমাইয়া আফরিনের চোখ দুটোকে। এই চোখ দুটোর মাঝে আমি তাকিয়ে হঠাৎ বললাম “কিছু মনে না করলে আপনি কি আমায় আপনাদের বাড়িটা একটু ঘুরিয়ে দেখাবেন? উনারা না হয় কথা বলুক। আসলে এইভাবে চুপচাপ বোবার মত বসে আছি তো তাই।” আমার কথা শুনে মিস সুমাইয়া কি মনে করলো আমার জানা নেই। ও শুধু ওর মায়ের দিকে একবার তাকালো। আর ওর মা ইশারা করলো যা না একটু ঘুরিয়ে দেখা। . এই ঘুরিয়ে দেখাতে দেখাতে আমি এখন অবস্থান করছি ওদের এই পুরানো বাড়ির ছাদে। বাড়ির দেয়ালে আঁকা নকশি ছাপ গুলো কি চমৎকার করে আকাঁ। যারা এমন চমৎকার করে কোন কিছুর উপর সৌন্দর্যটা তুলে ধরতে পারে সে মানুষ গুলোকে কেন যেন আমার চোখে আঁকতে ইচ্ছে করে। অনুভব করতে ইচ্ছে করে সে মানুষগুলোর ভিতরটা কেমন। ছাদে এসে আমি যখন একটা দীর্ঘশ্বাস নিলাম ঠিক তখন সুমাইয়া বললো “আমরা মানুষেরা কেন হঠাৎ করে কাঁদি বলেন তো?” আমি অবাক হয়ে কিছুটা সময় নিলাম তারপর বললাম “আমরা মানুষেরা এই শহরটার মত। এই শহরটার মাঝে আলো, বাতাস, বৃষ্টি সবকিছু বিদ্যমান।সময়ের সাথে সাথে এসব কিছুই আমাদের সামনে হাজির হয়। এই হাজির হওয়ার মাঝে আমরা অনুভব করি এই আলো, বাতাস, বৃষ্টির অনুভূতিগুলো। এই অনুভূতিরা আমাদের ভিতরে একটা জায়গা দখল করে রাখে। সেই অনুভূতিরা ঘুমিয়ে থাকে। মধ্যরাতে হঠাৎ করে যখন এমন অনুভূতিরা জেগে উঠে তখনই আমাদের চোখ ভিজে।পুরানো অনুভূতির জন্য মায়া হয়। কষ্ট লাগে। আমাকে কেন এমন প্রশ্ন করলেন সুমাইয়া?” সুমাইয়া মুখে হাসি এনে বললো “এমনি বলেছি। আপনাকে কি বলা যায় ভাবতে ভাবতেই মাথায় এই প্রশ্নটা এসেছে। আপনি খুব সুন্দর করে কথা বলেন জাহেদ সাহেব।এমন সুন্দর করে কথা বলার জন্য আপনাকে একটা কবিতা শুনাতে ইচ্ছে করছে। আমার পছন্দের কবিতা।কবি নির্মলেন্দু এর কবিতা। শুনবেন?” আমি মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক ইশারা দেওয়াতে সুমাইয়া এই বিকেলের আকাশের দিকে তাকিয়েই কবিতা আবৃত্তি করলো… . আমি বলছি না ভলোবাসতেই হবে, আমি চাই কেউ একজন ভিতর থেকে আমার ঘরের দরোজা খুলে দিক। কেউ আমাকে কিছু খেতে বলুক । কাম-বাসনার সঙ্গী না হোক, কেউ অন্তত আমাকে জিজ্ঞেস করুক: ‘তোমার চোখ এতো লাল কেন?’ . আমি সুমাইয়াকে বললাম “এই বিকেলটা এখন পরিপূর্ণ লাগছে আপনার কন্ঠে কবিতা শুনে।কিন্তু আপনি আমাকে প্রশ্নটা এমনি এমনি করেন নি সুমাইয়া।আপানার চোখ দেখেই বুঝতে পেরেছি। আপনার কাউকে ভালো লাগে? আমাকে বলতে পারেন।” ও আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকলো।কথার প্রসঙ্গ বদলে বললো “চলুন যাই।” এটা বলেই যখন দু কদম হেটে গেলো আমি সাহস করে মিস সুমাইয়ার হাতটা ধরলাম। আমার ছোয়া পেয়েই সে আমার দিকে ফিরে তাকায়। হয়তো এটা আশা করেনি এমন করে ওর হাতটা আমি ধরবো। আমি হাতটা ছেড়ে দিয়ে বললাম “দুঃখিত।আপনি আমাকে চিন্তায় ফেলে যাচ্ছেন।আমি চিন্তিত থাকতে পছন্দ করি না।একদম না।” সে কিছু না বলেই চলে যায়।আর আমি পুনরায় একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে এই বিকেলের আকাশটার দিকে তাকাই।থমথমে এই বিকেলটার মত হঠাৎ করেই আমার ভিতরটা এমন থমথমে হয়ে যায়। ভাবি বিকেলটা সব সময় এমন থমথমে কেন হয়? এই থমথমে হওয়ার কারণ কি? . ঠিক দুদিন পর সুমাইয়া আমাকে ফোন করে চুপ করে থাকলো। আমি বললাম ”কেমন আছেন?এটা যে আপনার নাম্বার আমি জানি। নাম্বারটা আমি মায়ের কাছ থেকে নিয়ে রেখে দিয়েছি। কিন্তু ফোন করা হয়নি।” সে তারপরও চুপ করে থাকলো। আমি যেই আবার কিছু বলতে যাবো ঠিক তখন সুমাইয়া বললো “আপনার ভিজিটিং কার্ড থেকে নাম্বারটা নিয়ে ফোন করেছি। আপনাকে সেদিন ওমন করে বলাটা আমার ঠিক হয়নি। ঠিক হয়নি আপনার সামনে থেকে ওমন করে চলে যাওয়ার ব্যাপারটা। আমি খুব দুঃখিত জাহেদ সাহেব।তবে আপনি যা ভাবছেন আসলে এমনটা না। আমি কাউকে এমন করে চাইনি।এই চাওয়ার যোগ্যতা আমি রাখি না।” এটা বলেই সে একটু থামে। আমি বললাম “তাহলে এমন করে চলে গেলেন কেন? আমাকে একটু ক্লিয়ার করে বলবেন প্লিজ?” সে আরও একটু সময় নিয়ে বললো “আসলে আমি আমার বাবা মায়ের আসল মেয়ে না।এই কথাটা বাবা নিশ্চয় আপনাদের জানায়নি।তারা আমাকে তাদের নিজ মেয়েই মনে করে। তাদের কোন সন্তান নেয়।হাসপাতালে আমার জন্ম হয়েছিল।আমার আসল বাবা মা কারা আমি জানি না। জন্ম হওয়ার একদিন পরই আমার মা আমাকে হাসপাতালে ফেলে রেখে চলে গিয়েছিল।উনি আমার সাথে কেন এমন করলেন এই উত্তর এখনো খুঁজে পাইনি। যদি উনাকে কখনো সামনে পাই তাহলে জিজ্ঞাস করতাম কেন তিনি এমন করেছেন? আমার বর্তমান বাবা ঐ হাসপাতালের কর্মকর্তা ছিল। আমার এই ভালো বাবাটাই ঐদিনের পর আমাকে তার রাজকন্যা করলো।এমন একটা রাজকন্যা করলেন মনে হয় পৃথিবীর সমস্ত সবুজে ঘেরা পাহাড় আমার। সেই পাহাড়ের চুড়ায় থেকে আমার ভেজা চুল শুকিয়ে নীল গগনের সাথে ভাব জমাতে পারি জানেন।”এটুকু বলেই সুমাইয়া থামলো। আমি ফোনের এপাশ থেকেও ঠিক বুঝতে পারলাম সুমাইয়ার চোখ গুলো হয়তো ভিজে গেছে।ভিজে গেছে তার সবুজে ঘেরা পাহাড়টা। সুমাইয়া আবার বলতে লাগলো “ভাবছেন হয়তো আমি কি করে আমার বিষয়টা জানলাম। সত্য কখনো চাপা থাকে না জাহেদ সাহেব। আমার সেই ছোট বেলা থেকে আমার সমস্ত অনুভূতি, একটু একটু করে হাটতে শিখা, প্রথম মা বলে ডাকা, প্রথম বাবা বলে ডাকা, আমার প্রথম স্কুলে যাওয়া, সব কিছু আমার বাবা তার ডায়েরীতে লিখে রেখেছে।বাবা এখনো লিখে রাখে। এই যে আপনারা আমাকে দেখতে আসলেন সেটাও আমার ভালো বাবাটা লিখে রেখেছে। এই ডায়েরী কাউকে ধরতে দেয় না। কাউকে দেখতে দেয় না। তার যে একটা ডায়েরী আছে সেটাও কাউকে জানাতে চায় না।কিন্তু এসব কিছু আড়াল থাকে বলুন? আমি যখন ইন্টার পাস করলাম তখনি ডায়েরীটা চোখে পড়েছে। ডায়েরীর পাতার ভিতরে ছোট্ট একটা চিরকুট পেয়েছিলাম। তাতে লিখা ছিল “ভাইজান আমার বাচ্চাটারে দেইখেন। আমি জানতে পারছি আপনার কোন বাচ্চা নাই। ওরে আপনার কাছে দিয়া গেলাম। আমারে খুইজেন না ভাইজান। ” সেদিন আমি ভয়ংকর ভাবে কেঁদেছি বিশ্বাস করুন। আমার একটুও ঘুম আসেনি।আমি অনেক কেঁদেছি অনেক। তবে আমি আমার এই ভালো বাবা মাকে বুঝতে দেই না আমি যে সত্যটা জেনে গেছি। এসব যখনি মনে পড়ে তখন কান্না পায় খুব কান্না পায়। চোখ ভিজে লাল হয়। আপনারা যখন আমাকে দেখতে আসলেন তখন বার বার মনে হয়েছে তাদের আমি হারিয়ে ফেলবো। আমার এই ভালো বাবা মাকে হারিয়ে ফেলবো। তাদের প্রতি কোন রাগ রাখবেন না কেমন? তাদের পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চেয়ে নিয়ে নিচ্ছি।” এটা বলেই সুমাইয়া আবার থামে।আমার কি বলা উচিৎ আমি ঠিক বুঝলাম না। আমার চুপ থাকা দেখে ও একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললো “যেদিন আপনারা দেখে গেলেন সেদিন বাবার পাশে বসে বলেছিলাম “বাবা তোমরা আমাকে পর করে দিবা? কষ্ট লাগবে না?” আমার কথা শুনে আমার ভালো বাবাটা কান্না করে দিয়েছিল।আমার বাবার চোখে পানি দেখলে খুব কষ্ট হয়। আমার ডাক নাম সুমাইয়া না। আদিবা। পুরো নাম সুমাইয়া আফরিন আদিবা।” আমি চুপ করে রইলাম।সুমাইয়ার কথা শুনে আমার ভিতরটা নাড়া দিয়ে উঠলো। আদিবা নামটা শুনেই মনে হলো কেউ আমার গলা চেপে ধরছে। আমার বুকে কষ্টরা জমাট বেধেছে।আকাশটা মেঘের রুপ নিয়েছে। সেই মেঘের শব্দরা একত্রে হয়ে আমাকে ঘিরে ধরেছে।আমি শুধু তাকে বললাম “আপনার সাথে পরে কথা বলি?” এরপর তার কোন উত্তরের আশা না করেই আমি ফোনটা রেখে দেই। . আমার ভিতরে একজন বাস করতো। এই বাস করার মাঝে আমার স্বপ্নগুলোকে একটা রঙ্গিন মলাটে বেধে ছিলাম।তাকে আমার জীবনের সমস্ত কিছু দিয়ে চেয়ে ছিলাম। আমি জানি না আমার এই চাওয়ার মাঝে কোন কমতি ছিল কিনা।আমি যতবার তাকে আমার এই চাওয়ার কথা বলতাম সে ঠিক ততবার আমাকে এড়িয়ে যেত।ঠিক এড়িয়ে যাওয়া না, অপমান করার মত ছিল।ভদ্র আচরনে অপমান। আমরা তখন ভার্সিটিতে অধ্যয়নরত মাঝামাঝি সময়ে। তাকে যখন আমার জীবনের প্রথম ভালো লাগার কথা জানালাম সে তখন শুধুই আমার দিকে নিরব চোখে তাকিয়ে চলে গিয়েছিল। আর যাকে ভালো লাগার কথা জানালাম তার নাম আদিবা।একদিন হঠাৎ আমাকে বললো “আমাকে এমন করে কেন ভালোবাসো জাহেদ? ভালোবাসা বিষয়টাকে আমার ভয় হয়।খুব ভয় হয়। এটা মানুষের ভিতরটাকে একদম শেষ করে দিতে পারে।যে ভালোবাসা মানুষকে শেষ করে দিতে পারে সেটার মাঝে জড়াতে ইচ্ছে করে না। আমরা না হয় বন্ধু হয়ে থাকি? খুব ভালো বন্ধু?”


Post a Comment

0 Comments