ছায়ামুর্তি

Ads Inside Post

ছায়ামুর্তি

আপনি কাজটা মোটেও ঠিক করেন নি অফিস এ যাবো বলে বাস স্ট্যান্ড এ বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু বাস আসতে আজ কেনো জানি খুব দেরি করছে। তাই ফোনটা পকেট থেকে বের করে ক্লাশ অফ ক্লান গেম খেলছি মনোযোগ দিয়ে। ঠিক তখনি উপরের কথাটি শুনলাম। তবে ফোন থেকে চোখ সরালাম না। ঠিক সেসময় আবার শুনলাম.. – মন চাচ্ছে থাপ্পড় দিয়ে গালটা লাল করে দিই। কথাটি শুনেও না শোনার ভান করে গেমস খেলতে লাগলাম। ঠিক আবার বললো,, – ওহ, কত ভদ্র ছেলে দেখো, কথা বলছি কিন্তু শুনছে না। এই যে হ্যারিপোটার? এইবার আমি চোখ তুলে সামনে থাকালাম। দেখি পিচ্চি একটা মেয়ে খুব সম্ভব ইন্টার ২য় বর্ষে পড়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তবে মুখের রাগের লাল আভা ফুটে উঠেছে। কথাগুলো আমাকেই বললো কিনা সিওর হওয়ার জন্য আশে পাশে তাকালাম। কিন্তু না সে রকম তো কাউকেই মনে হল না যে, মেয়েটি তাদের বলেছে। – এই যে ইমরান সাহেব, কথাগুলো আপনাকেই বলেছি। (মেয়েটি) আমি এইবার খুব বড় রকমের অবাক হলাম। কারন, মেয়েটিকে তো আমি চিনি না। আর কেনই বা কথাগুলো বললো? আর কি করেছি আমি এর কাছে? – দেখুন আপু আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। (আমি) – ঐ আপনার কিসের আপু আমি? আর ভুল হচ্ছে মানে? আমি আপনাকেই বলেছি হুমম? – মানে? আমাকে কেনো? আর আমি তো চিনিনা আপনাকে। – চিনতে হবে না, কিন্তু বেশি পাকামো করলে ঠ্যাং ভেঙ্গে রেখে দিবো বুঝছেন মি, ইমরান সাহেব? – এ্যাঁ….?? – হুমম ঠিক সেসময় দেখলাম রিকশাতে করে আরেকটি মেয়ে আসলো। আর সামনে থাকা মেয়েটি বললো, – থাকেন, কলেজে যাচ্ছি, আর যা বললাম, বেশি পাকামো করতে দেখলেই আপনার খবর আছে বলে দিলাম। কথাটি শুনেই আমি তো হাবার মত দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছি। কি যে করলাম সেটা তো বুঝলামই না,আর কেনই বা সকাল সকাল বকা খেলাম সেটাও বুঝলাম না। তবে রিকশাতে ওঠার পর মেয়েটি বললো.. – আমার নাম আরোহী , এখন থেকে আমাকে নিয়েই ভাববেন। (আরোহী ) আমি এখনো অবাক হয়ে তাকিয়ে চলে যাওয়া দেখছি। কি করলাম জানি না, অথচ সকাল সকাল বকা দিয়ে গেল। তবে অবাক হলাম আরোহীর শেষের কথায়। “আজ থেকে আমাকে নিয়ে ভাববেন” মানে কি? পিচ্চি মেয়েটা কি বলে গেল? যাচ্ছে তাই, সকালে যে কি করলাম যার জন্য এতগুলা বকা খেতে হচ্ছে। অফিস এ এসে কাজে মন দিলাম। কিন্তু সকালের সেই পিচ্চি মেয়েটার কথা খালি মনে পড়ছে আর রাগ হচ্ছে। (অফিস শেষে) অফিস শেষ করে আবার বাস এর জন্য দাড়িয়ে আছি। তখনি শুনলাম.. – তোর বয়ফ্রেন্ড কিন্তু দেখতে সেই। – দেখতে ভালো, কিন্তু খচ্ছর একটা। খালি টাংকি মেরে বেড়ায়। কন্ঠটি শুনে আমি চমকে উঠলাম। চিনতে বাকি নেই এটা আরোহীর কণ্ঠ। আবার ওর দিকে তাকালাম। দেখি, দুইজন হাসিতে ফেটে পড়েছে। তাও আবার দুষ্টামির হাসি। – এই যে পিচ্চি, এখানে কি? (আমি) – আর বলবে জান্টুস, এক বান্ধবির বাসায় গেছিলাম তাই সেখান থেকে ফিরছি। কিন্তু তোমার সাথে আবার দেখা হয়ে গেল। (আরোহী ) আরোহীর কথা শুনে আমি লাফিয়ে উঠলাম। জানিনা, চিনিনা এক দিনের কথা বলাতে পিচ্চিটা আমাকে তুমি করে বলছে। মন চাচ্ছে থাপ্পড় দিয়ে গাল লাল করে দিই। – এই যে মেয়ে, তাও আবার পিচ্চি নিজেকে সামলাও ওকে? চিনিনা তোমাকে, কিন্তু তুমি এত পাকারাম, যে আমার মত ছেলে ভয় পেয়ে গেছে। কিসের জান্টুস? থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দিবো। (আমি) – ইসসরে…বাবুটা কি বলে। তোমাকে তো আমি থাপ্পড় দেয়নি এখনো বলতে হয় ভালো। – ধুরর,,যত্তসব আজাইরা,ফালতু। (আমি) কথাটি বলেই আমি চলে আসলাম। কি মেয়েরা বাবা। বলা নেই কওয়া নেই এসে বকা দিবে আবার টিজ করে।সন্ধ্যার আকাশে হালকা সাদা মেঘ বোঝা যাচ্ছে। সূর্যের অস্তির লাল আভা কিছুটা এখনো বোঝা যাচ্ছে। ছাদের কর্নারে দাড়িয়ে সেই দিকটাতে অপলক চেয়ে আছি। ছাদের টবে লাগানো ফুলের গন্ধে চারিদিকটা কেমন যেন মো মো করছে। ভাবলেশহীন মানবের মত এই প্রকৃতিটাকে উপভোগ করছি। পিছন ঘুরে ফুলের কাছে আসতেই দেখি.. পাশের বাড়ির ছাদে একটা ছায়ামূর্তি হুটট করেই আমার তাকানো দেখে সরে গেল। আজ বেশ কদিন ধরেই লক্ষ্য করছি, ছায়ামূর্তিটা আমাকে ফলো করে। আমি যখনি ছাদে উঠি, তখনি সেও আসে। সন্ধ্যার কালো ছায়া চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই সেই ছায়ামূর্তিটাকে ঠিক চিনতে পারছি না কে? তবে শেফ দেখে এতদিনে বুঝেছি ছায়ামূর্তিটা হল একটি মেয়ে। যা কিনা আমাকে ছাদে আসলেই ফলো করে। (পরেরদিন) – এই যে বাবু, তোমাকে না বলেছি টাংকি মারবা না। তবুও মারছো? পাকনামি করতে মানা করেছি তবুও করছো, তোমাকে না খুন করতে ইচ্ছে হচ্ছে। (আরোহী ) – হুমম. (আমি) – খুন করি? – হুমম – তুমি এমন কেনো? – হুমম – উফফ অসহ্য। – হুমম চোখ থেকে মোটা ফ্রেমের চশমাটি খুলে নিল। আমি আবারো আরোহীর দিকে তাকিয়ে আছি। বাসস্ট্যান্ডের চারিদিক একবার তাকালাম। সেরকম কেউ দেখছে না আমাদের দিকে। কিন্তু অবাক হলাম মেয়েটার সাহস দেখে। – কি হচ্ছে কি এসব? (আমি) – চুপপ বেশি কথা বলো। – আপু, সরি ছোট আপু, কি সমস্যা তোমার? ললিপপ লাগবে নাকি? আচ্ছা দাড়াও টাকা দিচ্ছি কিনে নিও। – ঐ কি বললে..? আমি ছোট আপু?? ঐ কি দেখে আমার পিচ্চি মনে হচ্ছে? আর ললিপপ না? দেখাচ্ছি ললিপপ..(হালকা চিৎকার করে) আমি মানুষজনের ভয়ে আরোহীর হাত ধরে বললাম.. – এই আসতে আসতে এভাবে কি কেউ চিৎকার করে? তুমি যে একটা পিচ্চি,তার প্রমান এভাবে না দিলেও হবে। – আমি পিচ্চি তাইনা? ঐ কি দেখে মনে হচ্ছে আমি পিচ্চি? -…… – আমি কিন্তু ইন্টার ২য় বর্ষে পড়ি। মোটেও পিচ্চি না। আর তুমি জব করো তো কি হয়েছে? তাই বলে আমি তোমার কাছে পিচ্চি? আর যদি কোনোদিন পিচ্চি বলো তোমার খবর আছে। অবাক হয়ে ওর কথাগুলো শুনছি আমি। কি ঝামেলাতে পড়লাম রে বাবা। এতদিনে তো ঠিকই ছিলো। কিন্তু গত কাল কোথা থেকে কিয়ে হয়ে গেল, আর পিচ্চিটা আমার জ্বালাতে চলে এসেছে। কি করেছি আমি? – এভাবে হাতটা সারাজীবন ধরে রাখবে তো? (আরোহী ) কথাটি শোনা মাত্রই আমি হাতের দিকে তাকালাম। এখনো আমি আরোহীর হাত ধরে আছি, সেটা ভূলেই গেছিলাম। ঝটকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম.. – ধুরর,, যত্তসব ফালতু। অফিসের দিকে চলে আসলাম। অফিসে কাজের ফাকে বারবার মনে হতে লাগলো ছাদে দাড়িয়ে থাকা ছায়ামূর্তিটা কে? আমাকে অনেকদিন থেকেই লক্ষ্য করে। কিন্তু কোনোদিন তাকে দেখিনি আমি। কে হতে পারে? এ দিকে আবার আরোহীর ঝামেলা। কি করেছি আমি যার জন্য ঝামেলাটা ঘাড়ে চাপল? কিছুই মাথায় আসছে না। ধুরর ভাল্লাগে না। (দুইদিন পর) – বাবু, (আরোহী ) – ঐ কে বাবু? (আমি) – তুমি,, – থাপ্পড় দিয়ে তোমার দাঁত ফেলে দিবো। বেয়াদপ কোথাকার। – সে তুমি যাই বলো, ভালোবাসার মানুষটার কাছে বেয়াদপ হলেও ব্যাপার না। – উফফ, – কি হল? – আচ্ছা তুমি পিচ্চি হয়ে এত কথা জানো কি করে হুমম? – আবার পিচ্চি বললে? – পিচ্চিই তো… – ধ্যাত, আর শোনো কথা এমনিই জানা যায়। আর তোমার নাম্বারটা দাও তো। – কিসের নাম্বার? কেন? – এ মা কথা বলবো বলে, – নাই – আরে দাওনা.. – বললাম তো নাই, – দিবা কিনা..? – নাহ ঠিক তখনি আরোহী আমার হাত ধরে বললো, নাম্বার দিতে। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি, হাত ছাড়িয়ে নিতে যাবো, সে আরে শক্ত করে ধরলো.. – ঠাসসস, আর কোনোদিন যদি দেখি না আমার সামনে তোমার খবর আছে, বেয়াদপ মেয়ে কোথাকার। ফাজিল একটা, যাও বাসায় যেয়ে চকলেট খাও বসে বসে। পিচ্চি কথাগুলো খুব রাগে বলেছিলাম। কারন, অফিসে আজ বসের হালকা ঝাড়িয়ে খেয়ে মেজাজটা খুব খারাপ ছিলো। আর অফিস থেকে বের হতেই এই আরোহীর সাথে দেখা। যার ফলে মাথাটা আরো গরম হয়ে যায়। কথাগুলো বলে সেখান থেকে বাসায় চলে আসি। ফ্রেশ হয়ে হালকা কিছু খেয়ে ছাদে গেলাম। পায়চারি করছি, চারিদিকে সন্ধ্যার ঘন্টি বেজেছে। এখনি আসবে সেই ছায়ামূর্তিটা। তাই সেই ছাদের দিকে তাকিয়ে আছি। কিন্তু আজ দেখা পেলাম না। এতক্ষনে তো আসার কথা, কিন্তু আজ তাকে দেখতেই পাচ্ছি না? গেল কোথায়? ছাদে দাড়িয়ে এসব ভাবছি, এদিকে সন্ধ্যা পার হয়ে রাতও হয়ে গেছে কখন সেটা বুঝতে পারিনি। তাই রুমে এসে অফিসের কাজ করতে বসলাম। (পরেরদিন) অফিসে যাবো বলে আজো স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছি। তবে আজ আরোহী নেই। চারিদিকে তাকালাম। নাহ, সে আজ নেই। যাক ভালোই হল, রোজ রোজ প্যারা থেকে মুক্তি মিললো (অফিস শেষ করে) অফিস শেষ করে বের হলাম। তবুও আরোহী নেই। ভালোই হল পিচ্চির ঝামেলা থেকে মুক্তি পেলাম। বাড়িতে চলে আসলাম এসব ভাবতে ভাবতে। এসেই ছাদে দৌড়। সেই ছায়ামূর্তিটাকে দেখবো বলে,,অনেক্ষন আছি কিন্তু তাকে আর দেখিনি। মানে সে আজো আসেনি। আজ সাত দিন হয়ে গেল ছায়ামূর্তিটাকে দেখিনা। আবার এই সাতদিনেও আরোহী আমার সামনেও আসেনি। কিন্তু সেটা বড় কথা না। আমি তো ছায়ামূর্তিটার প্রেমে পড়ে গেছি। মানুষের মনটা বড়ই অদ্ভুত। জানিনা সে কে, দেখতেও সে কেমন। শুধু জানি সে একটি মেয়ে। আর তার আগমনে আমি আজ ছন্নছাড়া। আমার সব অনুভুতিরা এখন সেই ছায়াটিকেই খোজে। আমি যে আজ পরাস্ত সৈনিক। তাকে যে আমার দরকার। (পরেরদিন) কলিংবেলটা বাজিয়েই চলেছি সেই কতক্ষণ ধরে সেই ছায়ামূর্তির বাড়ির দরজায়। কিন্তু কেই খুলছে না। মনে মনে বললাম, এই শেষবার বাজাবো, যদি না খোলে তাহলে বাসায় যাবো। ঠিক তখনি কেউ একজন দরজা খুলে দিলো। সামনে তাকিয়ে আমি অবাক… – তু তু তুমি..? (আমি) -….. – এটা তোমাদের বাসা? – কি মনে হয়? প্রশ্নটা শুনে আমি আরোহীর দিকে তাকালাম। আমার সামনে সেই দাড়িয়ে আছে। এটা যে ওদের বাসা, সেটা আমি জানতাম না। তবে একটা ব্যাপার দেখলাম আরোহীর চোখের নিচে কালি। শুকনো হয়ে গেছে। – কি দরকার..?(আরোহী) -……. (তাকিয়ে দেখছি তাকে) – কি হল…? – আচ্ছা একটা কথা বলার ছিলো. – হুমম ভিতরে আসুন। ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখি আরোহীর আম্মু দাড়িয়ে আছে। তিনি আমাকে চিনেন, কারন, তিনি প্রায় আম্মুর সাথে কথা বলতে আমাদের বাসায় যান। – আরে ইমরান যে, – জ্বি আনটি..কেমন আছেন? – হুমম ভালো, তা কি মনে করে? – না মানে. – আচ্ছা তুমি থাকো, আমি তোমার আম্মুর কাছে যাচ্ছি দরকার আছে। – আচ্ছা… আনটি চলে যেতেই আরোহীর দিকে তাকালাম। আরোহীর বোনের কথা জিঙ্গাসা করবো করবো ভাবছি, কিন্তু কেমন জানি ভয় করছে। – আচ্ছা, আমি কি একবার তোমাদের ছাদে যেতে পারি? (আমি) – ওকে.. আর না দাড়িয়ে দৌড়ে ছাদে আসলাম। ছাদে এসে দেখি, আমাদের বাসার ছাদ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। তার মানে আরোহীর বোন রোজ আমাকে দেখে এখানে দাড়িয়ে। – কেন আসছেন এখানে? (আরোহী) পিছনে ঘুরে আরোহীর দিকে তাকালাম। সেও আমার সাথে ছাদে এসেছে। পাশে দাড়িয়ে কথাটি বললো..আমি ইতস্থতা করে জিগাস করলাম.. – আরোহী, তোমার বোনকে একটু ডেকে দিবা? – মানে..? আমার কথা শুনে সে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালো। আমি আরো অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম। তবে ভয়টা বেশিই কাজ করছে। – দেখো কিছু মনে করো না, আসলে তোমাদের বাসায় এসেছি তোমার বোনের জন্য। প্লীজ একটু ডেকে দাও। – কেনো???? – কিভাবে যে বলি..? – আমাকে না বললে ডেকে দেবো না। – আসলে, হয়েছেটা কি, আমি তোমার বোনকে ভালোবাসি। – কিহহহ? – হুমম,, তাকে প্রায় আমি দেখি এই ছাদে সন্ধ্যার সময়। কিন্তু গত ৯ দিন ধরে তাকে আর দেখি না। প্লীজ একটু ডেকে দাও না। কেন সে আর আসে না শুধু এইটুকুই জিগাস করবো। – চলে যান। – মানে? – চলে যান বলছি চলে যান, কোনো কথা শুনতে চাই না। যা বলছি তাই করেন। আমি আর কিছু না বলে সেখান থেকে চলে আসলাম। কেমন অসহায় মনে হচ্ছে। আরোহীর বোনের নামটাও জানা হল না। কিছুই ভালো লাগছে না। ধুররর তিনদিন পরে ছাদে দাড়িয়ে পায়চারি করছি। সন্ধ্যা হয়ে গেছে, তখনি আরোহীদের বাসার ছাদে চোখ পড়লো অজান্তেই কেমন যেন হেসে উঠলাম। কারন, আজ তাকে দেখলাম। সেই ছায়ামূর্তি। যাকে আমি অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছি। আজ অনেক্ষন হল আমি তার দিকে চেয়ে আছি। আর বড় কথাহল আড়ালে দাড়িয়ে সেও আমাকে দেখছে। রাত হয়ে যাওয়াতে সে চলে গেল। আর আমিও চলে আসলাম। (পরেরদিন) অফিস শেষ করে বের হতেই দেখি, আরোহী দাড়িয়ে আছে। আমি সাথে সাথেই তার কাছে গেলাম.. – আরোহী বলোতো তোমার বোনের নাম কি।? – যাহ বাবা, এতদিনে দেখা হল, আমি কেমন আছি সেটা জিগাস না করেই আমার বোনের কথা জিগাস করছো? – হুমম, বলোতো নামটা বলো.. – নাহ বলবো না। – কেনো?? – কেনো বলবো..? – আরে তোমার বোনকে দরকার আমার। – কেন দরকার..? – তুমি বুঝবে না। – বলো না হলে কিন্তু হেল্প করবো না। – আচ্ছা বাবা,তোমার বোনকে ভালোবাসি। – কতটুকু? – জানিনা, তবে মনে হয় অনেক বেশিই। – তাকে দেখেছো? – নাহ, – না দেখেই ভালোবাসো..? – হুমমম – তাহলে আমার কি হবে? – তোমার কি হবে মানে? – জানিনা.. সবাই চুপ হয়ে গেলাম। আজ অফিস শেষ করতেই একটু দেরি হয়ে গেছে। তাই আরোহীর সাথে, কথা বলছি আর হাটছি.. – আচ্ছা যদি একটা সত্যিই কথা বলি..? (আরোহী) – কি..? – বলছি, তবে শোনার পর আমার হাত ধরে হাটতে হবে সারা সন্ধ্যা। – মানে? – আসলে ইমরান, আমার না কোনো বোনই নাই। – কিহহ, মানে? – হুমম আর ছাদে দাড়িয়ে আমিই রোজ তোমাকে দেখি। – কিহহহ? – হুমম,, তোমাকে চিনি আমি অনেক আগে থেকেই। তোমাকে ভালো লাগতো তাই রোজ ছাদে দাড়িয়ে তোমাকে দেখতাম। কিন্তু তুমি প্রথমে তা জানতেই না। তবে ভেবেছিলাম, তুমিই এসে আমাকে প্রপোজ করবে কিন্তু তুমি যে টাংকিবাজ ছেলে, তাই নিজেই এসে বলতে হলো। – ঐ কি টাংকি মারলাম আমি? – মারো নি…??? সাধু সাজবা না। আমি সব জানি। – কি জানো..? – ফেসবুকে সেদিন স্ট্যাটাস দিসিলে কেনো? প্রেম যদি করতেই হয় তাহলে বড় আপুদের সাথেই করবো। পিচ্চিরা তো বোঝেই না ভালোবাসা কি। তারা জানে খালি চকলেট খেতে। আমার লিষ্টে যারা বড় আপু আছে তারা একটু হাত তুলুন। অগ্রীম ক্রাশ খাবো।”” কথাগুলো শুনেই আমি দাড়িয়ে পড়লাম। তার মানে এ আমার ফ্রেন্ডলিষ্টে ছিলো। হায়রে, আর আমি সেটা জানতামও না? ধুরর গাধা.. – আর তার জন্যই রাগ হয় তোমার উপর, তাই এসে তোমার কাছে জ্বালাতন করতাম। যাতে অন্য মেয়েদের দিকে না তাকাও। কিন্তু তুমি আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছিলে। জানো কত কষ্ট পেয়েছি? তাই আর যেতাম না ছাদে। তবে সেদিন তোমার আমাদের বাড়িতে আসার পর সব পরিষ্কার হয়ে গেল। – ও তার মানে তুমিই ছিলে সেই ছায়ামূর্তি? – হুমমম..? – যাও কথা নেই.. – কেনো? (আরোহী) – আমি তোমাকে ভালোবাসি না। কথাটি বলে জোরে হেটে আগে আসতেই, আরোহী বললো… – সত্যিই তো..তাহলে ছাদেও আর যাবো না। কথাটি শুনেই আবার দাড়িয়ে পড়লাম। আরোহীর আমার পাশে এসে হাতটি ধরে বললো.. – হাদারাম, নিজে তো হাত ধরবে না, আমাকেই সব করতে হবে। কিছু না বলে হাত ধরার দিকে তাকিয়ে আছি। আর আরোহী টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে। আর মনে মনে ভাবছি.. শেষমেশ আমার এই পিচ্চির সাথেই প্রেম করতে হল? তাকেই কিনা ভালোবাসলাম? আমার বড় আপুদের কি হবে? – কি ভাবছো..? (আরোহী) – বড় আপুদের কথা,,তারা তো ছ্যাখা খাইলো। – মানে, – মানে তুমি বুঝবে না। আমি আছি আমার জ্বালায়, আমার সবই গেল,আর হবে না বড় আপুদের সাথে প্রেম করা। – কিহহহ…ঐ ফাজিল, যাও ব্রেক আপ। – এই না না.. – হাতটি শক্ত করে ধরে বললাম.. – রাগ করো না ললিপপ কিনে দিবোনি। – আমি কি পিচ্চি নাকি? – হুমম আমার পিচ্ছি ইয়ে.. – ঐ ইয়ে টা কি? – কিছু না,, চলো চকলেট কিনি. – ওকে আমার ইয়ে.(আরোহী) – ইয়েটা কি..? – কিছু না… চললাম চকলেট কিনতে। তবে আফসুস বড় আপুদের জন্য হতেই লাগলো। আমার কি হপপে..? সমাপ্ত


Post a Comment

0 Comments