শাশুড়ি আম্মা

Ads Inside Post

শাশুড়ি আম্মা

golpo-ghar.blogspot.com
golpo-ghar.blogspot.com


বাজার করে ফিরছিলাম। মেইন গেটের সামনে দেখি দারোয়ান বদরুদ্দীন মনের সুখে বিড়ি টানছে। আমাকে দেখে বিড়ি ফেলে দাঁড়িয়ে গেল।

আহা বিড়ি ফেললে কেন?

আমিও দু একটা টান দিতাম। কতদিন সুখটান দিতে পারিনা রুপন্তীর আম্মুর জন্য।

দেখলাম বদরুদ্দীন পকেট থেকে আরেকটা বিড়ি ধরিয়ে আমারে দিল। আমি দেয়ালে হেলান দিয়ে কিছুক্ষণ টানলাম।

বাসায় পৌছানোর আগেই দেখি আমার সিগারেট খাওয়া ছবিখানা রুপন্তীর আম্মুর কাছে পৌছে গেছে।

দূর থেকে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে এই সুক্ষ্ম কাজটা করেছে রুপন্তীর আম্মুর একমাত্র স্পাই এজেন্ট জরিনা খালা।

আহারে আমার জীবনটা বিষময় করে তুলেছে মহিলাটা।

একদিন রুপন্তীর আম্মুরে বললাম,

শুনো তুমিতো প্রতিদিন কষ্ট করে ছাদে কাপড় শুকাতে যাও। দাও আজকে কাজটা আমি করে দিই।

সাথে সাথে জরিনা খালা এসে বলে, 

আফা খবরদার! ভাইজানরে কাপড় শুকাতে দিয়েন না। পাশের বিল্ডিং এ নতুন ভাড়াটিয়া আইছে। হেতের বউয়ে এইটাইমে কাপড় শুকাইতে ছাদে উঠে।

তারপর থেকে বিকালে হাওয়া খাওয়ার জন্যও ছাদে উঠতে দেয়না আমারে।

ফেসবুকেও জরিনা খালা আমারে কুত্তার মতো ফলো করে।

সেদিন আমি রুটি বেলার একটা পোস্ট সহকারে ক্যাপশন দিছিলাম, বউরে মাঝে মাঝে হেল্প করা লাগে!

একটা মেয়ে সেখানে কমেন্ট করছে,

ওয়াও! এমন জামাই এখনো পৃথিবীতে আছে তাহলে? আপনাকে ভাড়ায় পাওয়া যাবে? ঘরের একটু কাজ করিয়ে নিতাম!

রুপন্তীর আম্মু নরমালি ফেসবুকে থাকেনা। সেদিন দেখলাম ঝড়ের গতিতে কমেন্টকারী মেয়েটাকে কমেন্টে ইচ্ছেমতো ধুঁয়ে দিল। এরপর থেকে কেউ আর কমেন্ট ও করে না। 

আর এগুলো নিয়ে আমি রুপন্তীর আম্মুকে বকতে গেলে জরিনা খালা আমার শাশুড়িকে নিয়ে আসে।

আজ তিন সপ্তাহ ধরে আমার শাশুড়ি ঘরে। মাঝখানে সীমিত আকারে লকডাউন পড়াতে আর যাওয়া হয়নি তার। 

আর না আমি জরিনা খালারে আর ছাড়ছি না।

তাই ঠিক করলাম জরিনা খালারে জামালগোটা খাইয়ে লুসমোশনে ফেলে দিবো যেনো আর পায়খানা থেকে বেরুতে না পারে।

এদিকে গরুর দুধে জামালগোটা ফেলে আমি অপেক্ষা করছিলাম। কখন শাশুড়ি আম্মা এসে দুধটুকু দিয়ে ক্ষীর বানিয়ে ফেললো। আর রুপন্তীর আম্মু সেই ক্ষীর আমাকেই খাইয়ে দিল। আমিও মজার মজার করে খেলাম।

বিশ্বাস করুন দুদিন পায়খানা থেকে বেরুতে পারিনি।

এবার মহাঅস্ত্র প্রয়োগ করতে হবে। 

রাতে যখন সবাই গভীর নিদ্রায় চলে গেল তখন আমি দারোয়ান বদরুদ্দীনরে দিয়ে জরিনা খালারে ক্লোরোফর্ম দিয়ে বেহুস করে উঠিয়ে নিয়ে এলাম।

বদরুদ্দীনরে বললাম, এমন কোথাও রেখে আসো যেনো আর কখনো ফিরে না আসে।

বদরুদ্দীন গিয়ে তারে রাতের অন্ধকারে গাবতলী বাস স্ট্যান্ডে রেখে চলে এল।

সকালে আরামছে ঘুম থেকে উঠলাম। আজ কেমন ফুর্তি ফুর্তি লাগছে। একটা চা হলে ভালো হয়।

রুপন্তীর আম্মু একটা চা নিয়ে আসো!

দেখি জরিনা খালা চা নিয়ে আসলো,

এই লন ভাইজান তাড়াতাড়ি চা খায় বাজারে যান!

আমি অবাক হতবাক নির্বাক! একি!

এদিকে রুপন্তীর আম্মু কাঁদো কাঁদো গলায় এসে বললো,

শুনেন না সকাল থেকে আম্মারে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রাতে রুমে এসির বাতাসে ঘুমাতে পারছে না বলে আমি জরিনা খালার রুমে ঘুমাতে পাঠিয়েছিলাম। 

তাহলে কি গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে এখন শাশুড়ি আম্মা!



(রুপন্তীর পাপ্পা-রম্য গল্প)




Post a Comment

0 Comments