পর্ব - --৩
-- মানে...? তুই কি বলতে চাইছিস?
-- আরে আমি তোমার কাছে স্ত্রীর অধিকার চাই নাই, আমি বলছি আমরা স্বামী স্ত্রীদের মত ব্যবহার করতে পারি কি না?পিল্জ আমার এই শেষ ইচ্ছাটা রাখ,,৷
পিচ্চিটা প্রায় কেদেই দিল,,
-- আচ্ছা ঠিক আছে !
-- সত্যিই...!
-- হুম...
পিচ্চিটা আমার হাত হালকা জড়িয়ে ধরে বলল,,
-- Thank you....
.
রিক্সা এসে আমাদের বাড়িতে দাড়াল,, ঘরে ডুকে অবাক হয়ে গেলাম,, চাচা,চাচি,শিহাব আরও অনেকই আমাদের ড্রইং রুমে বসে আছে, পিচ্চিটা ওর আম্মু আব্বুকে দেখে দৌড়ে গিয়ে ওর আম্মুকে জড়িয়ে ধরল,,
তারপর ওর আম্মুকে ছেড়ে ওর আব্বুকে জুড়িয়ে ধরার সাথে সাথেই কান্না করে
দিল,,
চাচা বললেন,
-- আরে পাগলী মেয়ে কাদছিস কেন?
-- বাবা,তুমি কেমন আছ উহুহুহুহু,,?
(পিচ্চিটা হয়তো ওর বাবাকে একটু বেশিই ভালবাসে তাই এরকম ভাবে কান্না করছে)
-- হা হা হা,,, দেখ পাগলী মেয়ের কান্ড,
আমি ভাল আছি রে মা, তুই কেমন আছিস? (মুখে হাসি দিলেও চোখ দিয়ে পানি ঠিকই পড়ছে)
-- ভ,ভাল,,,! বলেই আবার ডুকরে ডুকরে কান্না করতে লাগল ৷
চারিপাশে দেখলাম পিচ্চিটার কান্না দেখে সবার চোখে পানি চলে এসেছে ,
আমার ওদের দেখে কোনো কষ্ট হচ্ছে না, কারণ আমি জানি আর কয়েকমাস পর
পিচ্চিটা ওর আম্মু আব্বুর কাছে চলে যাবে,
তাই আমার তেমন কষ্ট হচ্ছে না ৷
.
চাচা পিচ্চিটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর শান্তনা দিচ্ছেন,
এবার পিচ্চিটাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে কপালে একটা চুমু খেলেন ৷
পিচ্চিটা এবার কিছুটা শান্ত হল,,
.
আম্মু আমাকে ইশারায় বললেন চাচ চাচিকে সালাম করতে,
আমি এগিয়ে গিয়ে চাচা চাচিকে সালাম করলাম,,
এবার আব্বু পিচ্চিটাকে বললেন,
-- যাও মা, ব্যাগ পত্র গুছিয়ে নাও, আজ তোমরা তোমাদের বাড়ি যাচ্ছ, তোমার
আব্বু আম্মু তোমাদের নিতেই এসেছেন,,
পিচ্চিটা একবার আমার দিখে তাকিয়ে উপরে রুমে যেতে লাগল,,
আব্বু আমাকে বললেন,,
-- কিরে তুই দাড়িয়ে আছিস কেন?
ব্যাগ পত্র গুছিয়ে নে, তোদের গ্রামে গিয়ে 4-5 দিন থাকতে হবে ৷
আমি অবাক হয়ে বললাম,,
-- আব্বু আমাকেও যেতে হবে নাকি?
চাচা বললেন,
-- হ্যা.. বাবা ! বিয়ের পর শশুর বাড়ি গিয়ে কয়েকদিন থাকতে হয়, এটা নিয়ম !
আর তছাড়া তুমি যেখানে যাচ্ছ সেটা ত শুধু তোমার শশুর বাড়ি না, তোমার নিজেরও বাড়ি ৷
-- চাচা বলছিলাম কি আমি না গেলে কি হয় না?
আব্বু বললেন,,
-- না হয় না ! যা তাড়াতাড়ি গিয়ে রেডি হয়ে নে ৷(ধমক দিয়ে)
.
অতঃপর বাধ্য হয়ে আমাদের গ্রামের বাড়ি, মানে শশুর বাড়ি আসতে হল,,
বাড়ির গেটের ভিতর ডুকতেই অবাক হয়ে গেলাম,, বাড়িটা এখনও সেই বিয়ে বাড়ির মতই সাজানো,,
ভিতরে ডুকতেই কয়েকটা মেয়ে দিয়াআআআ.... চিৎকার দিয়ে পিচ্চিটাকে
জড়িয়ে ধরল,,
তারপর একটা মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
-- ওনিই কি তর বর...?
পিচ্চিটা লজ্জায় মাথা নিচু করে হ্যা বলল,,
অন্য আরেকটা মেয়ে বলল,,
-- অহ মাই গড,,, দিয়াআআ..তর বরটা কত্ত হ্যান্ডসাম রে..
আমি তো প্রথম দেখাতে প্রেমে পড়ে গেছি,,
পিচ্চিটা রেগে বলল,,
-- এই ফারিয়া তুই কিন্তু ভূলে যাস না অ আমার বর !
-- হিহিহি...রাগ করিস কেন? আমি তো দুলাভাইয়ের সাথে মজা করলাম,,
আমি বুঝতে পারলাম,,মেয়েগুলা পিচ্চিটার মতই একেকটা সয়তানের হাড্ডি..
আমি বললাম,,
-- আপনাদের কাওকে তো চিনলাম না?
পিচ্চিটা বলল,,
-- ওরা আমার বান্ধবী ৷
-- অহ..
চাচা ডেকে বললেন,,
-- কিরে তরা এখনও এখানেই দাড়িয়ে আছিস,, দিয়া মা জামাই বাবাজিকে নিয়ে
রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে
পিচ্চিটার সাথে রুমে আসলাম,, রুমে এসেই শরির এলিয়ে দিলাম বিছানাতে..
অনেক্ষণ জার্নির কারণে একটু ক্লান্ত লাগছে,,
পিচ্চিটা আমার সামনে এসে দাড়িয়ে বলল,,
-- তুমি আগে ফ্রেশ হবে নাকি আমি আগে ফ্রেশ হয়ে নিব?
--তুই যা,, আমি তর পরে ফ্রেশ হয়ে নিব,,
পিচ্চিটাকে দেখলাম রাগী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,
-- কি হল এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?
-- আমাদের মধ্যে কি কথা হয়েছিল?
-- কি?
-- তুমি আমাকে কথা দিয়েছিলে না -- আমরা যেকটা দিন একসাথে থাকব সেকটা দিন স্বামী স্ত্রীদের মত থাকব,, তাহলে তুমি আমাকে এখনও তুই তুই করে
ডাকছ কেন?
তুমি আমাকে পিচ্চি ডাকতে পার তাতেআমার কোনো সমস্যা নাই, কিন্তু এই
তুই তুই করে ডাকবে না,,
আমার কেন জানি তোমার মুখে তুই ডাকটা সহ্য হয় না !
-- ওকে চেষ্টা করব ৷
-- চেষ্টা করবা মানে ৷
-- আচ্ছা রে বাবা তুমি করেই ডাকব ৷
খুশি,,?
-- হুম অনেক খুশি ৷
-- পিচ্চি সয়তান্নি একটা ৷
পিচ্চিটা একটা হাসি দিয়ে বাথরুমে চলে গেল,,
কিছুক্ষণ পর পিচ্চিটা গোসল করে বেরিয়ে আসল,,
আমি হা হয়ে পিচ্চিটার দিকে তাকিয়ে রইলাম,,
পিচ্চিটা লজ্জা পেয়ে আমাকে বলল,,
-- কি দেখছেন,,?
আমি এবার হাসিতে ফেটে পড়লাম,,
কেন হাসছি বুঝতে পারছেন নাতো? দাড়ান আগে একটু হেসে নেই, তারপর
বলছি,,
হাহাহাহাহাহা,,,
পিচ্চিটা একটা শাড়ি পড়ে বের হয়ে আসছে, পড়ে আসছে বললে ভূল হবে বলতে হবে পেছিয়ে আসছে,, কোথায় শাড়ির মাথা কোথায় শাড়ি আচল কোনো ঠিক ঠিকানা নাই,,এমন ভাবে পড়ে আসছে মনে হচ্ছে এখনই খুলে পড়ে যাবে ৷
পিচ্চিটা যেখানে শাড়ির কুচি দেওয়া হয় সেখানটায় হাত দিয়ে ধরে দাড়িয়ে আছে,,
পিচ্চিটার পেট দেখা যাচ্ছে,, তাই লজ্জায় লাল হয়ে আমার সামনে দাড়িয়ে আছে ৷
-- এটা কি পড়ছ,,?
বলেই হাসতে হাসতে আবার বিছানায় গড়াগড়ি খেতে লাগলাম,,
-- তুমি খুব খারাপ,,! দেখছ আমি শাড়ি পড়তে পারছি না, আর তুমি দাত খেলিয়ে
হাসছ,,
সেখানে দাড়িয়েই কান্না করতে লাগল !
-- হাহাহা,,সরি সরি ৷ আমাকে দে আমি ঠিক করে দিচ্ছি ৷
-- সত্যিই তুমি আমাকে পড়িয়ে দিবে?
লজ্জায় লাল হয়ে বলল,,
--আমার কিযে লজ্জা লাগছে, আবার খুশিও হচ্ছে ৷
-----------------------------
-- নাহ আমি শুধু ঠিক করে দিব !
এদিকে আয়?
-- আবার তুই করে ডাকছ?
-- আচ্ছা ঠিক আছে, এদিকে আস !
পিচ্চিটা একটা হাসি দিয়ে আমার কাছে এগিয়ে আসল,,
আমি প্রথমে পিচ্চিটার আচল ঠিক করলাম,, পিচ্চিটার শরিরে আমার হাত লাগতেই
পিচ্চিটা কেপে উঠল,,
তারপর পেটের নাভী সহ কিছুটা অংশ বেরেয়ে এসেছিল সে জায়গা শাড়ি দিয়ে
ডাকতে গিয়ে আমার হাত লেগে গেল ওর পেটে,, পিচ্চিটা চিটকে আমার থেকে সরে পিছিয়ে গেল,,
আমি বললাম,,
-- কি হল? এভাবে পিছিয়ে গেলে কেন?
-- কিছুনা ! বলেই পিচ্চিটা আবার আমার দিকে এগিয়ে আসল,,
আমি এবার পিচ্চিটা যে জায়গায় হাত দিয়ে ধরে রেখেছিল সেটা ওর হাত থেকে নিলাম,, আমি ওর হাত থেকে নিয়ে শাড়িটা কুচি দিতে লাগলাম,,
কুচি দিয়ে যেই ওর নাভীর নিচে গুজতে যাব তখনই পিচ্চিটা আমার হাত ধরে ফেলল,,
-- এটা আমাকে দাও, আমি পারব !
আমি আর কিছু না বলে ওর হাতে কুচিটা ধরিয়ে দিলাম,,
পিচ্চিটা কুচি হাতে নিয়ে বাথরুমে ডুকে গেল
৷
কিছুক্ষণ পর পিচ্চিটা বাথরুম থেকে শাড়িটা ঠিক করে বেরিয়ে আসল,,
পিচ্চিটার চোখ দুটো লাল হয়ে অনেক ফুলে আছে,,
-- তর....অহ সরি, তোমার চোখ মুখ এরকম লাগছে কেন? তুমি কি কান্না করছিলে নাকি?
-- কি বল কি, আমি কান্না করতে যাব কেন?
-- অহ..আচ্ছা !
এতক্ষণ পিচ্চিটাকে আমি ভালকরে খেয়াল করি নাই,,, এখন চোখ পড়তেই আমি হা করে তাকিয়ে রইলাম,, পিচ্চিটাকে শাড়িতে এত সুন্দর মানিয়েছে যে আমি লিখে বুঝাতে পারব না,কালো শাড়িতে কালো চুলগুলা ছেড়ে আসছে পিচ্চিটা,,
একদম মায়াবতী লাগছে পিচ্চিটাকে,,
পিচ্চিটা আমার তাকানো দেখে লজ্জা পেল,,
-- কি দেখছ?
--(তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে)
এই কথা বলতে গিয়েও কিছু একটা ভেবে আটকে গেলাম,,
নিজেই নিজেকে বলতে লাগলাম,, আমি এসব কি ভাবছি,, অ তো একটা পিচ্চি
মেয়ে, ও তো আমার চাচাত বোন,, আমি তো ওকে কোনো দিনও ওকে বউ হিসেবে মেনে নিতে পারব না,, তাহলে কেন আমি ওর দিকে এরকম ভাবে
তাকিয়ে আছি??
পিচ্চিটা আবার বলল,
-- কি হল কি ভাবছ?
-- কিছুনা ৷
বলেই আমি বাথরুমে ডুকে গেলাম,,
.
শাওয়ার ছেড়ে অনেক্ষণ গোসল করলাম,, গোসল শেষে মনে হল,,শিট আমি তো
টাওয়াল সাথে আনি নাই,, পড়নে যে কাপর গুলা নিয়ে বাথরুমে ডুকে
ছিলাম সেগুলাও বিজিয়ে ফেলেছি, এখন আমি বাথরুম থেকে বের হই কিভাবে?
বাথরুমের দরজা কিছুটা ফাক করে দেখলাম পিচ্চিটা কোথায় আছে,
পিচ্চিটাকে দেখলাম আয়নাতে চুল আছড়াচ্ছে,,
আমি শুধু মুখটা বের করে বললাম,,
-- এইইই মেয়ে,,
হঠাৎ আমার আওয়াজে পিচ্চিটা চমকে উঠল,,
-- ক,কে কে??
পিচ্চিটা ভয়ে ভয়ে রুমের চারিদিকে তাকিয়ে খুজতে লাগল,,
-- এই পিচ্চি আমি, বাথরুমের দরজতে দেখ
৷
পিচ্চিটা আমাকে দেখে নিজের বুকে থুথু দিল,,
-- আহহ,,তুমি?? আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম,,৷
-- তুমি সত্যিই পিচ্চি, একটুতেই ভয় পেয়ে যাও,,!
-- হুম,,! তুমি এভাবে দরজাতে মুখ বের করে দাড়িয়ে আছ কেন?
আমি এবার অসহায় হয়ে বললাম,,
-- আমার টাওয়াল টা দাও পিল্জ,,
পিচ্চিটা একটা হাসি দিয়ে ব্যাগ থেকে টাওয়াল বের করে আমার হাতে এনে দিল,,
-- Thank you...!
বলেই টাসস,, করে দরজাটা লাগিয়ে দিলাম,,
.
তারপর আরো তিনদিন এ বাড়িতে থেকে, আমাদের বাড়িতে চলে আসলাম,,
বাড়িতে আসার পরেরদিন থেকেই পিচ্চিটা কলেজে যেতে শুরু করল,,
পিচ্চিটাকে প্রতিদিন সকালে ওর কলজে দিয়ে আমি আমার ভার্সিটিতে চলে যাই,,
আবার আসার সময় সাথে করে বাড়িতে নিয়ে আসি,, এখন পিচ্চিটার সাথে স্বাভাবিক ভাবেই কথাবার্তা বলি,,
.
আজকে সকালে একটু বেশিই ঘুম পাচ্ছে.. পিচ্চিটা সেই কখন থেকে আমাকে ডাকছে,, কিন্তু আমি ঘুমে চোখই খুলতে পারছিনা,, পিচ্চিটা অনেক্ষণ ধরে আমাকে ডাকতে ডাকতে হাপিয়ে গেল,,
এবার পিচ্চিটা রেগে বলল,
-- তুমি উঠবে? নাকি আমি আব্বুকে ডেক নিয়ে আসব?
বলেই পিচ্চিটা রুম থেকে বেরিয়ে যেতে লাগল,,
আমি আব্বুর কথা শুনে ঘুম ঘুম চোখেই পিচ্চিটাকে ডাক দিলাম,,
-- এই পিচ্চি সয়তান্নি দাড়াও, আমি উঠছি আব্বুকে ডাকতে হবে না,,!
অনেক কষ্ট করে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হতে গেলাম,, ফ্রেশ হয়ে এসে রেডি হয়ে নিচে এসে দেখি পিচ্চিটা আগে থেকেই রেডি হয়ে বসে আছে
৷
আমি হালকা কিছু নাস্তা করে পিচ্চিটাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলাম,, আমি বাইকে বসে পিচ্চিটাকে বললাম বাইকে উঠে বসতে,,
কিন্তু পিচ্চিটা উঠছে না, আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,
-- কি হল এভাবে তাকিয়ে আছ কেন? দেরি হয়ে যাচ্ছে তো ৷
-- তুমি এত সুন্দর কেন? বলেই আমার চুলগুলা এলমেল করে দিল,,
চোখ থেকে সানগ্লাসটা নিয়ে নিজের ব্যাগের ভিতর ডুকিয়ে নিল !
-- এই পিচ্চি আজকে তোমার কি হইছে?
এসব কি করছ? দাও আমার গ্লাসটা দাও ৷
-- না দিব না, তোমাকে এত স্মার্ট হয়ে থাকতে হবে না ৷ কলেজের কয়েকটা
নির্লজ্জ মেয়ে তোমার দিকে কিরকম হা করে তাকিয়ে থাকে,,সেটা আমার সহ্য হয়
না ৷
-- অহ তাই নাকি?
আচ্ছা ঠিক আছে এখন তাড়াতাড়ি ওঠ, দেরি হয়ে যাচ্ছে !
বাইকে উঠতে উঠতে বলল,,
-- কি ঠিক আছে?
-- কিছুনা,, এত কথা বল কেন?
বাইক স্টার্ট দিয়ে এক টানে পিচ্চিটার কলেজে চলে আসলাম,,পিচ্চিটা বাইক নামার পর আমি বললাম,,
-- এই পিচ্চি শুনন !
-----------------------------
- কি?
-- কলেজ শেষ হওয়ার পর একটু সামনে এগিয়ে গেলেই আমাকে পাবে,, তুমি একটু হেটে চলে এস পিল্জ, আমার কিছু কাজ আছে,,আমি আবার এদিকে আসতে পারব না,
-- আচ্ছা !
পিচ্চিটা কলেজের গেটের ভিতর ডুকে গেল,, আমি বাইক স্টার্ট দিয়ে কিছু যায়গা এগিয়ে দেখি সায়ান মুখটা মলিন করে বসে আছে,, আর আবির,রিহান,রাকিব, সায়ানকে সান্তনা দিচ্ছে,,
আমি সায়ানের কাছে যেতে যেতে বললাম,,
-- কিরে মজনু তর লাইলী এখনও আসে নাই?
আমি কাছে যেতেই সায়ান আমাকে জুড়িয়ে
ধরে কান্না করতে লাগল,,
-- পিল্জ বন্ধু তুই কিছু একটা কর, আমি জেনিয়াকে ছাড়া বাচব না ৷
জেনিয়া হল সায়ানের গার্লফ্রেন্ড, তিন বছর ধরে ওদের রিলেশন, দুজন দুজনকে অনেক ভালবাসে, কিছুদিন পর জেনিয়ার বিয়ে, কিন্তু জেনিয়া না পাড়ছে
ফেমেলি ছেড়ে সায়ানের কাছে চলে আসতে, না পাড়ছে সায়ানকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করতে ! আজ জেনিয়া সায়ানে সাথে লাস্ট দেখা করতে আসছে ৷
লাস্ট দেখা করবে সেই কথা শুনেই রাতে সায়ান আমাকে ফোন করে জানিয়ে
দিয়েছিল ! অনেক্ষণ অপেক্ষার পর জেনিয়া আসল, আমাদের সবাইকে দেখে কিছুটা অবাক হল,,!
আমি বললাম,,
-- জেনিয়া এদিকে আস !
আমি জেনিয়াকে ওদের থেকে কিছ দূরে নিয়ে গেলাম,,
আমি বললাম,
-- জেনিয়া সত্যি করে বল তো তুমি কি সায়ানকে ছাড়া অন্য কারো সাথে থাকতে
পারবে?
-- ওকে ছাড়া থাকতে পারবনা বলেই তো মরার রাস্তা বেছে নিয়েছি !
-- তুমি কি মনে করেছে, তুমি মরে গেলে সায়ান বেচে থাকতে পারবে?
এবার মেয়েটা কান্না করতে লাগল,,
-- তো আমি কি করব, বলেন ভাইয়া?
-- পালিয়ে যাও !
-- কিন্তু আমার ফেমেলি?
-- দেখ জেনিয়া তোমরা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার পর যখন তোমার কোলে
ছোট্ট আরেকটা জীবন আসবে, তখন তোমার ফেমেলি অই বাচ্চাটার দিখে তাকিয়ে সব মান অভিমান ভূলতে বাধ্য হবে ৷
-- কিন্তু......
জেনিয়াকে কথাটা বলতে না দিয়েই পিচ্চিটা এসে বলল,,
-- এই যে আমি চলে এসেছি,,! আর অই মেয়েটা কে?
-- বলছি তুমি ওদের কাছে গিয়ে বস,, আমি ওর সাথে কিছু ইম্পোর্টেন কথা
বলে আসছি ৷
-- মেয়েটার সাথে তোমার কিশের ইম্পোর্টেন কথা,, নির্লজ্জ মেয়েগুলা শুধু সারদিন তোমার পিছে পিছে লেগে থাকে,, কথাগুলা বলতে বলতেই আমার হাত ধরে
টেনে নিয়ে যেতে লাগল,,
আমার রাগ উঠে গেল চরমে,, এক জটকায় পিচ্চিটার হাত থেকে আমার হাত ছাড়িয়ে গালে ঠাসসস করে একটা চর বসিয়ে দিলাম,,
পিচ্চিটা গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে,,
-- এই পিচ্চি তুই জানিস এই মেয়েটা কে?
-- হুম জানি তো, মেয়েটা তোমার গার্লফ্রেন্ড ৷
এবার অন্য গালে ঠাসস করে আরেকটা চর মারলাম,,
পিচ্চিটা দুইগালে দুইহাত দিয়ে জোরে জোরে কান্না করতে লাগল,,
-- এএএএএ,,,আআআআ,,!
-- কান্না থামা বলছি,, না হলে আরেকটা দিব,,!
-- এএএ,,তুমি খুব খারাপ,, আমি আব্বুকে গিয়ে সব বলব,, আর এও বলব যে তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে ! এবার পিচ্চিটার কথা শুনে আমার নিজেরই
কান্না চলে আসছে,
-- বোন রেএএএ,, তুই কিছু না বুঝার আগে কেন বাচ্চাদের মত পাগলামী করিস,
বাচ্চাদের মত কি তুই তো বাচ্চাই,,! ও আমার গার্লফ্রেন্ড না সায়ানের গার্লফ্রেন্ড ৷ আমি এখানে দুইটা জীবন বাচানোর চেষ্টা করছি আর তুই ডং
করছিস,,! এবার পিচ্চিটা সব কিছু বুঝতে পেরে কান্না থামিয়ে চোখের পানি মুছে একটা হাসি দিয়ে আমাকে বলল,,
-- সরিইইই,,,!
এবার পিচ্চিটার কান্ড দেখে আমারই হাসি চলে এল,,
একটু আগে কি কান্নাটাই না করল আর এখন হাসছে !
-- হা হা হা,,পিচ্চি একটা ৷
.
এতক্ষণ জেনিয়া আমাদের দিকেই তাকিয়ে ছিল,
জেনিয়া আমাদের দিকে তাকিয়ে হাসছে,,
আমি বললাম,,
-- তো কি সিদ্ধান্ত নিলে জেনিয়া?
-- আমি পালিয়ে যেতে প্রস্তুত ভাইয়া ৷ পরে অইদিনই সায়ান আর জেনিয়া
চট্রগ্রাম পালিয়ে যায় ৷
.
.
আর মাত্র 7দিন বাকি আমার আর পিচ্চিটার ডিভোর্স পেপার আসতে ৷
পিচ্চিটা আমার সাথে এমন ব্যবহার করে বুঝাই যায়না যে আর মাত্র কয়েকদিন পর ওর সাথেই আমার ডিভোর্স হবে ৷
আজ আমার ফ্রেন্ড রিহানের বার্থডে,,
রাতে পিচ্চিটাকে বললাম,,
-- এই পিচ্চি আমার জন্য অপেক্ষা কর না, রাতে বাসায় ফিরতে আমার দেরি হবে,,
-- কেন দেরি হবে কেন?
-- আজ আমার ফ্রেন্ড রিহানের বার্থডে
৷
-- অহ,, আচ্ছা !
মুখে বলছে আচ্ছা, কিন্তু আমি জানি পিচ্চিটা ঠিকই আমার জন্য না খেয়ে বসে
থাকবে !
.
রিহান বার্থডে পার্টিটা শুধু আমরা তিনজকেই নিয়েই দিচ্ছে,, আমি,রাকিব আর আবির,,! কেক কাটা শেষে রিহানকে নিয়ে কয়েকটা সেলফি তুলে ফেইসবুকে আপলোড দিলাম, তারপর কিছু খাবার খেয়ে আমি ওদের থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসছিলাম,,
তখনই আমাকে রিহান আটকাল,
-- কিরে কোথায় যাচ্ছিস? আসল পার্টিটাই তো হল না ৷
বলেই একটা ব্যাগ থেকে তিনটা বোতল বের করল,,!
-- কিরে এসব কিশের বোতল?
-- এইগুলা ম** বোলত?
-- ছি,, সরা এখান থেকে আমি এইগুলা খাই নাকি?
তরা জানিস না আমি এইগুলা খাই না !
-- হুম,, জানি তবুও আজ খেতে হবে !
আমাকে জোরাজোরি করতে লাগল ! শেষ পর্যন্ত ওদের জোরাজোরিতে
বাধ্য হয়ে নাক টিপে হাপ গ্লাস খেলাম,, হাপ গ্লাস খাওয়ার পরেই আমার নেশা ধরে
গেল,, আমার আরো খেতে ইচ্ছা করতেছে ,, আমার পাশেই এক বোতল রাখা ছিল,
বোতলটার মুখ খুলে টকটক করে বোতলের অর্ধেক শেষ করতেই আবির
আমার হাত থেকে বোতলাটা কেরে নিল,,
-- এই নিয়ান কি করছিস?
আবিরও আমার মত এইসব খায়না,
রাকিব আর রিহান অনেক জোরাজোরির
পরেও আবির খায় নাই,,
চল বাড়ি যাবি,,
আবির আমাকে বাইকে করে বাড়িতে নিয়ে আসল,,
আমাকে ঘরেের সামনে পৌছে দিয়ে আবির
চলে গেল,,
আমার কাছেই ঘরের দ্বিথীয় চাবি ছিল সেটা দিয়েই আমি ডুকলাম,,
মাথা ঘুরছে হাটতে পারছি না, কষ্ট করে রুমে আসলাম,,
দরজা ধাক্কা দিতেই খুলে গেল,,
পিচ্চিটা বিছানাতেই বসা ছিল,,
আমাকে দেখে উঠে এসে বলল,,
-- এতক্ষণে আসলে,,!
আমি কিছু বললাম না,,
পিচ্চিটার দিকে গোর লাগা চোখে তাকিয়েরইলাম,,
আজ পিচ্চিটাকে দেখে আমার ভিতরে কি রকম জানি একটা উত্তেজনা ফিল করছি,, আমি পিচ্চিটাকে বললাম,,
-- এএইই তুইই আমার বউওও না ৷
আআয় আমার কাছে আআয় ৷
-- একি তোমার মুখ থেকে কিশের গ....ওকে বলতে না দিয়েই ওর টোঠে আমার
টোঠ লাগিয়ে দিলাম,,
তারপর পিচ্চিটার টোঠ ছেড়ে দিয়ে,, পিচ্চিটাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানাতে ফেলে
দিলাম,,,
.
.
সকালে ঘুম থেকে উঠে বিছানাতে বসলাম,, মাথটা জিমজিম করছে,,
হঠাৎ আমার খেয়াল হল আমার শরিরে কোনো কাপর নাই,,কাপর নাই বলতে একটা সুতাও নাই,, শুধু পাতলা একটা চাদর দিয়ে সারাশরির ডাকা,,
কাল রাতের কথা মনে পড়তেই,, আমি চমকে উঠলাম,,
শিট এটা আমি কি করলাম,, বলেই বিছানাতে একটা ঘুসি দিলাম !আমার
প্রায় কান্না চলে আসছে ! পাশে তাকিয়ে দেখলাম পিচ্চিটা আছে নাকি?
না পিচ্চিটা নাই ৷
পিচ্চিটাকে দেখলাম গোসল করে চুল মুছতে মুছতে বাথরুম থেকে বেরিয়ে
আসছে,,
লজ্জায় আমার দিকে তাকাতে পারছে না,,
মাথা নিচু করেই আমাকে বলল,,
-- বাথরুমে গরম পানি রাখা আছে, গোসল করে নাও ৷ বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেল ৷
আমি রেডি হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম,, ফিরে এসে পিচ্চিটাকে খুজতে লাগলাম,, রান্নাঘড়ে গিয়ে দেখলাম আম্মুর সাথে রান্না করছে ৷
আমি বললাম,,
-- এই দিয়া রুমে আস !(আম্মু আব্বুর সামনে পিচ্চিটাকে নাম ধরেই ডাকি)
পিচ্চিটা রুমে এসে বলল,,
-- কিছু বলবে?
-- এটা খেয়ে নাও ৷
-- কিশের ঔষধ এটা?
-- এটা পিল,,৷
......
.........(চলবে )...........
0 Comments
Thanks for your valuable comment. We will be back soon.
Thank you 😊😊😊