দুই বউ

Ads Inside Post

দুই বউ


পর্ব---১

ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং
ফারজানা: ঐ হারামি কুত্তি বিলাইহুনুমান সেজারু ফোন রিসিভ করিস না কেন?
জুনায়েদ: হ্যালো আপু কাকে ফোন দিয়েছেন?
ফারজানা: শালাই কই কি।
জুনায়েদ: আপুরে বোনরে আপনি মনে হয় ভুল নাম্বারে ফোন দিয়েছেন।
ফারজানা: উফ সরি ভাইয়া আমার ভুল হয়ে গেছে মাফ করে দিন।
জুনায়েদ: ওকে ওকে আর ফোন করবেন না যেনো।
ফারজানা: আমি না ভাইয়া আমার বান্ধবির কাছে ফোন দিছিলাম।
জুনায়েদ: হুম বুঝলাম আর ফোন দিয়েন না প্লিজ আমার গল্প লেখায় প্রবলেম
হচ্ছে।
ফারজানা: হুম... ভাইয়া পরে যেনো কি বললেন?
জুনায়েদ: ফোন রাখতে বলেছি।
ফারজানা: ওহ আচ্ছা, বাই .........ভালো থাকবেন।
জুনায়েদ: হুম।
...
জুনায়েদ.... উহ কি মেয়েরে বাবা ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে এলোপাতাড়ি
কোকটেল ছুড়ছে কিন্তু কন্ঠ টা কেমন চেনা চেনা লাগছে আর মনে হয় মেয়ে টা আমার চেয়ে বয়সে বেশিই হবে। কোথায় থেকে যে এরা আসে ধুর আমার গল্প লেখার বারোটা বাজায় দিছে। এখন মন দিয়ে গল্প লেখি।
...
...
ফারজানা.... ধুর লোকটাকে কত খারাপ কথা বলে ফেলেছি। নিশ্চয় সে আমাকে খারাপ মেয়ে ভাবছে। লোকটা যদি জানে আমি কলেজের শিক্ষিকা তাহলে ত
আমার মান সম্মানের বারোটা বাজায় দিবে তবে কন্ঠ টা কিন্তু সেই লাগছিলো মনে হচ্ছে এক্ষুনি একটা পাপ্পি দিয়া আসি।
আর যার জন্য এমন হলো সেই হারামিনি বান্ধবি টা ত মনে হয় সিলেট গিয়ে
উইধুরা আনন্দ করছে। যদি ওদের কলেজে চাকরি টা নিতাম তাহলে খুব ভালো
হতো।

.
দাড়ান এদের পরিচয় দিয়ে দিই।
.
জুনায়েদ তারা ৩ভাই বোন আর বাবা মা ভাই বোন কে নিয়ে সুখে আছে
তারা। তারা মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির মানুষ। জুনায়েদের বাবা কিছু ফসলি জমি
আছে সেগুলো দেখাশুনা করেই সংসার চলে। জুনায়েদ এবার অর্নাস-২ইয়ারে পরীক্ষা দিচ্ছে রসায়ন থেকে আর ছোট ভাই এস এস সি পরীক্ষা দিবে। আর তাদের সব চেয়ে হাসি খুশির মানুষ টা হলো তার বড় বোন সাথী। সাথী কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজে শিক্ষিকা।
.
আর এই দিকে ফারজানা বড়লোক বাবার আদরের দুলালি। ফারজানার
ছোট কালের ইচ্ছে তার মায়ের সখ পুরন্য করবে। ফারজানার বয়স যখন ১০ বছর তখন তার মা মারা যায়। ফারজানার কষ্ট ভেবে আর পরে বিয়ে করে নাই তার বাবা। ফারজানা এখন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষিকা। ২ বছর হলো
কলেজে শিক্ষিকতা করা।

এই দিকে ফারজানা ফেসবুকে যায় আর গিয়ে যাকে ফোন করেছিলো তার
নাম্বারটা র্সাস দেয় আর দেখে রাজকুমার নামে একটা আইডি সেটার প্রফাইল পিক সিগারেটের পিক দেওয়া। ফারজানার ভালো লেগে যায় তাই সাথে সাথে রিকু দিয়ে দেয়, এই দিকে জুনায়েদ দেখে ফারজানা নামে একটা মেয়ে রিকু দিছে, প্রফাইল
ঘেটে সেটা এড করে নেই হয়তবা গল্প পড়ার জন্য রিকু দিয়েছে।আর সাথে সাথে জুনায়েদ দেখে তার আইডিতে সেই মেয়ে msg করেছে।
.
.
ফারজানা: হাই..
জুনায়েদ: হ্যালো ( জুনায়েদের আইডির নাম রাজকুমার)
ফারজানা: কেমন আছেন?
জুনায়েদ: ভালো আপনি?
ফারজানা: হুম ভালো। কি করেন?
জুনায়েদ: এই তো বাড়ি পাহারা দিচ্ছি আর গল্প লেখি।
ফারজানা: মানে বুঝলাম না।
জুনায়েদ: মানে বাড়িতে কেউ নাই সবাই বেড়াতে গেছে তাই বাড়ি
পাহারা করি আর ল্যাপটপে গল্প লেখি।
ফারজানা: ওহ আমাকে কি আপনি চিনতে পারছেন?
জুনায়েদ: নাহ কে আপনি?
ফারজানা: হিহি বলবনা।
জুনায়েদ: নাহ বললে ব্লক দিবো কিন্তু।
ফারজানা: এই না না প্লিজ এমন কাজ করেন না। আমি হলাম সেই যে সন্ধ্যায়
আপনাকে ফোন দিয়ে অনেক বাজে কথা বলেছিলাম।
জুনায়েদ: তা আমার আইডি কোথায় পেলেন?
ফারজানা: আপনার নাম্বার র্সাস দিয়ে।
জুনায়েদ: হুম বুঝলাম।
.
অনেক্ষন কথা বলার পরে ফারজানা জুনায়েদ কে বলে..
.
ফারজানা: আমি এখন আপনাকে ফোন করতে পারি।
জুনায়েদ: কেনো?
ফারজানা: খুব কথা বলতে মন চাচ্ছে।
জুনায়েদ: ওহ আচ্ছা।
..
এইভাবেই চলতে ছিলো তাদের কথা এক সময় ফারজানা জুনায়েদের প্রেমে
পড়ে যায় কিন্তু জুনায়েদ.....
....
.ফারজানা জুনায়েদ কে তার ভালোবাসার কথা জানায় কিন্ত
জুনায়েদ বলে এখন সে রিলেশনে জড়াতে চাইনা।
.
যখন জুনায়েদ এই কথা বলে তখন ফারজানা জুনায়েদ কে ফোন দেই।
.
ফারজানা: কেমন আছো?
জুনায়েদ: ভালো তুমি?
ফারজানা: ভালোনা
জুনায়েদ: কেনো.?
ফারজানা: কুত্তা বিলাই হুনুমান শয়তান কলা গাছ তুই জানিস না আমি
তাকে ভালোবেসে ফেলেছি।
জুনায়েদ: প্লিজ এমন পাগলামি বন্ধ করো
ফারজানা: নাহ তোকে আমায় ভালোবাসতেই হবে।
জুনায়েদ: দেখো আমি সামান্য প্রাইমারি শিক্ষক ,রিলেশন হয়না( শিক্ষক সেটা মিথ্যা, জুনায়েদ এখন ছাত্র)
ফারজানা: আমি তোকে বসিয়ে খাওয়াবো, তাও তোকেই চাই।
জুনায়েদ: আমরা অনেক গরিব।
ফারজানা: বড়লোক করে দিবো।
জুনায়েদ: প্লিজ আমি পারব না।
ফারজানা: আচ্ছা তুই কি হলে পারবি?
জুনায়েদ: আমার সাথে রুম ডেট করতে হবে আগে।( এটা বলার কারন এটা শুনে
জুনায়েদ কে খারাপ ভেবে দূরে সরে যাবে তাই বলছে)
ফারজানা: তাও আমি রাজি কোথায় আসতে হবে বলো তাও তোমাকে চাই আমার।
জুনায়েদ: আমাকে চিনোনা আমি কোথায় থাকি, আমাকে দেখওনাই তাহলে রাজি
হচ্ছো কিভাবে।
ফারজানা: আমি এতো কিছু জানিনা তোকে আমার লাগবেই।
জুনায়েদ: বেশি পাগলামি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।
ফারজানা: জানিনা, তুই আমাকে ভালোবাসবি নাকি বল।
জুনায়েদ: নাহ পারব নাহ।
ফারজানা: তাহলে কিন্তু আমি আমার অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলবো।
জুনায়েদ: যা মন তাই করো গিয়ে।
ফারজানা: আমার আমার শরীর কেটে তোমার নাম লেখবো।
জুনায়েদ: তোমার ইচ্ছে।
ফারজানা: ওকে ১ ঘন্টা অপেক্ষা করো আমি আমার শরীর কেটে তোমাকে
দেখাচ্ছি।
জুনায়েদ: মোল্লার দোড় মসজিদ পর্যন্ত।
ফারজানা: ১ ঘন্টা পর কথা হচ্ছে বাই।
...
ফারজানা ফোন রেখে দেই।
.
জুনায়েদ ভাবে এ কেমন প্রবলেমে পড়লাম।
যদি মেয়েটা সত্যি হাত কেটে ফেলে।
রুম ডেট করার কথা বললাম তাও কেন রাজি হলো বুঝতে পারলাম না।
সে কি আমায় সত্যি ভালোবাসে না অন্য মেয়ের মতো অভিনয় করছে।.
.
.
এই দিকে ফারজানা জুনায়েদের জন্য পাগল হয়ে গেছে। ও ওর শরীর কাটবেই।
কিচ্ছুক্ষনের মধ্যে ফারজানা কষ্ট সয্য করে তার বুকে জুনায়েদের নাম লেখে।

একটুপর জুনায়েদ কে ফেসবুকে আসতে বলে আর জুনায়েদ সেটা দেখে ত
অবাক হয়ে যায়।
সাথে সাথে ফারজানা কে ফোন দেই আর বলে এটা সে কেনো করলো?
ফারজানার উত্তর সে ভালোবাসার জন্য সব করতে পারবে।
.
জুনায়েদও আস্তে আস্তে ফারজানাকে মন প্রান দিয়ে অনেক ভালোবেসে ফেলে।
.
জুনায়েদ এখন ফারজানা ছাড়া কিছু বুঝে না।
জুনায়েদ এখন গল্প লেখলে ফারজানার নাম দিয়েই গল্প লেখে আর ফারজানা
খুব খুশি হয় এটা দেখে। এখনো দুজন দুজনাকে কেউ দেখেনি।
দুজনি বলে আমরা একদম সামনা সামনি দেখবো তাই কেউ কাউকে নিজের
পিক দেইনি।
.
এখন মাঝে মধ্যে ফারজানার ফোন ওয়েটিং পাই জুনায়েদ কিন্তু কিছু
বলেনা সে ভাবে কোনো দরকারেই হয়তবা এমন হয়। কিন্তু এখন প্রাই প্রতি দিনিই
ফারজানার ফোন ওয়েটিং পাই সেটা জুনায়েদ আর সয্য করতে পারেনা।
.
ফারজানা জুনায়েদ জিজ্ঞাসা করে...
.
জুনায়েদ: তোমার ফোন ওয়েটিং থাকে কেনো?
ফারজানা: কিছু দরকারি ফোন আসে ত তাই।
জুনায়েদ: তাই বলে প্রতিদিন?
ফারজানা: বাবু বুঝার চেষ্টা করো এখন অর্নাসের পরীক্ষা চলছে তাই অনেক
জন ফোন দিয়ে সাজেশন চাই।
জুনায়েদ: সাজেশন না অন্য কিছু।
ফারজানা: প্লিজ এমন কথা বলোনা।
জুনায়েদ: আমি তো ঠিকি বলছি।
ফারজানা: সত্যি বলছি তুমি ছাড়া আমার জিবনে কেউ নেই।
জুনায়েদ: আমি ত বুঝতেই পারছি এখন কে আছে আর কে নেই।
ফারজানা: জান সত্যি বলছি এমন কিছুই না।
জুনায়েদ: আজ থেকে তুই আর আমার সাথে যোগাযোগ করবি না। বাই
ফারজানা: প্লিজ এমন করোনা তাহলে আমি মরেই যাবো।
জুনায়েদ: আমি ছাড়া তোমার জিবনে অন্য কেউ আছে।
ফারজানা: তোমার পায়ে পড়ি প্লিজ আমায় ছেড়ে যেওনা।
জুনায়েদ: আমাকেত এখন আপনার দরকার নেই।
ফারজানা: তোমাকে আমার দরকার আর তোমাকে ছাড়া আমি বাচবো না
জান।
..
এমন ভাবে ঝগড়া ৩ দিন চলে। ৪ দিনের বেলায় জুনায়েদ একটু শান্ত হয় আর
আবার আগের মতো দুজন দুজনাকে ভালোবাসতে শুরু করে।
.
এভাবে কিছু দিন যাওয়ার পরে ফারজানার একটা ভুলের কারনে জুনায়েদ ব্রেকাপ করে দেয় কিন্তু ফারজানা জুনায়েদ কে ছাড়তে রাজি না।
ফারজানা ফোন দিলে আর জুনায়েদ ফোন ধরেনা, ফোন কেটে দেয়।
আর ফারজানার ভুল ছিলো তার আইডিতে কেনো ছেলে ফ্রেন্ড
থাকবে?
.
এর কিছু দিন যাওয়ার পরে জুনায়েদের ফোন হারিয়ে যায় তাই ফেসবুক
আইডিটাও ডিএক্টিভ করে রাখে তার এক বন্ধুর ফোন দিয়ে আর ফারজানার ওপরত একটু রাগ আছেই।
.
জুনায়েদের ফোন বন্ধ পায়, আইডি ডিএক্টিভ করা তাই ফারজানা ভাবে
জুনায়েদ তাকে ফেলে সারা জিবনের জন্য চলে গেছে তাই সব জাগায় যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।
.
ফারজানা অনেক কষ্ট পাই আর রাগে হাত কেটে জুনায়েদের নাম লেখে।
.
হাত কাটার পর ফারজানা সেন্স হারিয়ে ফেলে আর হাসপাতালে
নিয়ে যায় ফারজানার বান্ধবি সাথী আর এই সাথীই হলো জুনায়েদের বড়
বোন।
.
ফারজানা একটু সুস্থ হলে সাথী কে সব খুলে বলে আর ছেলেটার নাম যখনি
জুনায়েদ বলে আর বলে জুনায়েদ গল্প লেখে তখনি সাথী তার ভাইয়ের কথা
মনে পড়ে যায়। তাই ফারজানাকে জুনায়েদের পিক দেখাতে বলে কিন্তু পিক ত নাই তাই নাম্বার টা দেখাই আর যেই নাম্বার টা দেখে সাথীর মাথায় আকাশ
ভেঙ্গে পড়ে। কারন এই জুনায়েদ আর কেউ নয়, সে তার আপন ছোট ভাই।
সাথী এখন কি করবে ভেবে পায়না। এই দিকে ফারজানা পাগলামি শুরু
করেছে যে তার জুনায়েদ কে চাই।
সাথী অনেক বোঝায় যে ঐ ছেলের চেয়ে ভালো ছেলে পাবি কিন্তু কেশুনে কার কথা তার জুনায়েদ কেই চাই।
সাথী ফারজানার জেদের কাছে হার মেনে যায়। তাই সাথী বলে তার
জুনায়েদকে রাতে হাসপাতালে নিয়ে আসবে আর এটা শুনে ফারজানা
অনেক খুশি হয়।
.
এই দিকে সাথী পড়েছে মহা ঝামেলাই এক দিকে ভাই আরেক দিকে জানে জিগার বান্ধবি, অনেক্ষন ভেবে জুনায়েদ কে রাতে সদর হাসপাতালে আসতে বলা হলো
তার বাবার নাম্বারে ফোন দিয়ে।
..
রাত ৮:৩০ মিনিটে জুনায়েদ হাসপাতালে পোছায়। তখন ফারজানা ঘুমিয়ে ছিলো। সাথী ফারজানাকে ডাক দেই আর জুনায়েদ ফারজানার সামনে দাঁড়িয়ে।
ফারজানাকে বলে তোর জুনায়েদ এসেছে চোখ খোল।
.
ফারজানা চোখ খুলেই ভুত দেখার মত হয়ে যায় কারন এই জুনায়েদ তার ছাত্র
আর ফারজানার সব চেয়ে প্রিয় ছাত্র।
..
ফারজানা: জুনায়েদ তুমিইইইই( জরে চিল্লাইয়া)
......
.........(চলবে )...........


Post a Comment

0 Comments