এমন মেয়েরাই হল সবার জন্য গৌরব

Ads Inside Post

এমন মেয়েরাই হল সবার জন্য গৌরব

এক যুবক পিতা-মাতার সাথে নিজের জন্য বউ দেখতে গিয়ে মেয়েটিকে প্রশ্ন করল. আমি_আপনাকে_কেন_ বিয়ে_করবো ?" উপস্থিত সবাই অবাক এবং কেউ কেউ লজ্জা ও পাচ্ছে। তখন মেয়ের এক বান্ধবী বলে উঠলো, এটা কেমন প্রশ্ন, আপনি কেন বিয়ে করবেন তাকে সেটা জানেন না? আপনার রান্না বান্না করবে, বাসন কোসন মাজবে, আপনার কাপড় কাঁচবে এজন্যই..... আমি খানিক টা রেগে গিয়ে বললাম, আমি গত ৮-১০বছর ধরে নিজে রান্না করে খাই।নিজেই বাসন কোসন মাজি,কাপড় ও অনেক ভাল কাঁচতে পারি....তাহলে আপনার বান্ধবীকে বিয়ে করবো কেন? প্রথম বান্ধবী আমার রাগি মুখ টা দেখেই হোক আর উপযুক্ত উত্তরের জন্যই হোক চুপ হয়ে গেল। মেয়েটি তখনো মাথা নিচু করে ভেবেই যাচ্ছে।তখন তার দ্বিতীয় বান্ধবী হুট করে বলে উঠলো, বিয়ে করবেন সংসার হবে বাচ্চাকাচ্চা হবে, বাচ্চাকাচ্চা লালন পালন করবে। তখন আমি আবার বলে উঠলাম, আমাদের একটা খুব ভাল সংসার আগে থেকেই আছে।আর বাচ্চাকাচ্চা নেবার জন্য বা বাচ্চাকাচ্চা লালন পালন করার জন্য বিয়ে করতে হবে এমন তো কোন কথা নেই।এতিম খানা থেকে একটি বাচ্চা নিয়েও লালন পালন করে মানুষ করা যায়। যার জন্য আমাকে বিয়ে করতে হবে না। দ্বিতীয় বান্ধবী চুপ হয়ে গেলে এবার তৃতীয় বান্ধবী বলে উঠলো তাহলে তো আপনার বিয়ে করার দরকার নেই।সব ই তো আপনি নিজেই পারেন।তাহলে মেয়ে দেখতে আসছেন কেন? আমি তখন বলে উঠলাম সত্যি বলছি আমি মেয়ে দেখতে আসি নি বিয়ে করতে এসেছি। কিন্তু আমি যাকে বিয়ে করবো তাকে তো জানতে হবে আমি কেন তাকে বিয়ে করছি। তাই নয় কি? এবার তৃতীয় বান্ধবী চুপ হয়ে গেল। অনেকক্ষন গম্ভীর থাকার পর মেয়েটি বলতে শুরু করলো, আপনি বিয়ে করবেন কেন? প্রথমত, যেহেতু আপনি আমি মুসলিম।তাই বিয়ের উপযুক্ত হলে বিয়ে করা ফরয... মহানবী (সাঃ) এক হাদিসে বলেছেন, " যেই পুরুষ অথবা মহিলা উপযুক্ত সময়ে বিয়ে করলো, তারা যেন পুর্ন ঈমান গ্রহন করলো "। তাই পুর্ন ঈমানদার হবার জন্য আপনি আমাকে বিয়ে করবেন। আমার প্রথম বান্ধবীর মতে,বিয়ে করা মানে খাবার রান্না করা, এবং কাঁপড় কাঁচার জন্য বিয়ে করা।আসলে এটা ভুল,মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাবারের দরকার হয় তাই খাবার রান্না করতে হয়। এটা যে শুধু মেয়েদের কেই করতে হবে এমন টা কোথাও বলা নেই।আবার আমাদের লজ্জা নিবারন করার জন্য আমার বস্ত্র পড়ি। আমাদের সেই বস্ত্র পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়।এটা যে শুধু মাত্র মেয়ে রাই করবে সেটা কোথাও বলা নেই। মহানবী (সাঃ) বলেছেন, "পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ"।তাই শুধু মাত্র মেয়েদের কে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে এমন কোন কথা কোথাও উল্লেখ নেই। আমার দ্বিতীয় বান্ধবীর মতে, বাড়িতে টূকটাক কাজ আর সন্তানের জন্ম দেবার জন্যই বিয়ে করবেন।আসলে এই কথাটিও সম্পুর্ন সঠিক নয়।আসলে সন্তান সন্ততি আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত। বিয়ে করার পর সবার সন্তান নাও হতে পারে।তাহলে তারা কি সংসার করে না? আর সন্তান লালন পালন করার কাজ কি শুধু মায়েদের?। হযরত উমার (রাঃ) কে এক ব্যাক্তি বিচার দিতে আসছিল যে তার বউ তার সাথে সন্তান পালন নিয়ে দুর্ব্যবহার করে।তখন তিনি বলেন, "তোমার বউ কেন একা সন্তান কে লালন পালন করবে।তুমিও তো তাকে একটু সাহায্য সহযোগী তা করতে পারো।" তার মানে সন্তানকে লালন পালন করার দায়িত্ব পিতা মাতার সমান। আমার তৃতীয় বান্ধবীর মতে, আপনি সবকিছুই পারেন তাহলে আমাকে বিয়ে করবেন কেন? কথা টা মোটেও ঠিক নয়। কারন বিবাহ উপযুক্ত বয়স এবং স্ত্রীর ভরনপোষন এর ক্ষমতা থাকলে বিয়ে করা ফরয। তাই আপনি সব কিছু করতে পারলেও আপনাকে বিয়ে করতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো, আপনি কেন একটা মেয়েকে বিয়ে করবেন? একজন নারী আল্লাহ তায়ালার অপুর্ব সৃষ্টি। একজন পুরুষের জীবনকে পুর্নতা দেয়ার জন্য অবশ্যই তার একজন ভাল জীবন সঙ্গীনী প্রয়োজন। যে তার সুখ দুঃখের সাথী হবে, বিপদে সাহস যোগাবে,সবসময় হাতটা শক্ত করে ধরে রাখবে বিপদে,আর বলবে ভয় পেয়ো না আমি আছি তোমার পাশে সব ঠিক হয়ে যাবে, একজন পুরুষের জীবনে তার ব্যর্থতার পর তাকে নব উদ্যমে শুরু করার অনুপ্রেরণা দিবে। একজন নির্ভরযোগ্য নারীকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাশে পেলে একজন পুরুষের জীবনের কঠিন পথ পারি দেয়া অনেক সহজ হয়ে ঊঠে। অন্তত পক্ষে একজন নারী একটি পুরুষের জীবনে থাকলে সে অন্য নারী অথবা নারী জাতিকে সম্মান দিতে শিখে। একটা ছেলে একটা মেয়ে কে বিয়ে করার মাধ্যমেই আপন করে পায়।দুইটা আত্বা মিলে এক হয়ে যায় যখন তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।তাদের জীবনের সুখ দুঃখ একে অন্যের মাঝে ভাগ করে নেয়।একে অন্যের ছোট ছোট ইচ্ছা গুলো পুরোনের মাধ্যমে অনেক আনন্দ খুজে পাওয়া।কারো মেয়েটির মধুর শাসনে আবদ্ধ হয় ছেলেটি। মেয়েটির অন্য সব কাজের মধ্যে প্রধান একটি কাজ হলো, পরিবারের সবার খেয়াল রাখা।সবার যত্ন নেয়া।একটা পরিবারে জন্ম নিয়ে যৌবন পর্যন্ত থেকে অন্য একটি পরিবারে এসে নিজেকে সবার মাঝে বিলিয়ে দেয়া। পরিবারের সবাইকে আপন করে নেয়া।সবার মুখে হাসি ফুটানোর জন্য চেষ্টা করা। এসব একটি মেয়ে করে শুধু ভালবাসার জন্যই।নতুন করে ছেলেটির পরিবার টিকে ভালবাসার জন্য। আর পবিত্র ভালবাসার বন্ধন বিয়ের মাধ্যমেই সম্পুর্ন হয়। বিয়ের মাধ্যমেই একটা ছেলে একটা মেয়েকে সম্পুর্ন নিজের করে পায়। যেখানে হারিয়ে ফেলার কোন ভয় থাকেনা।নিজের সবটুকু ভালবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিতে চায় মেয়েটিকে। কোন ছেলে চায় তার বাঊন্ডুলে অগোছালো জীবন টাকে একটা মেয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে দিক।তার জন্য খাবার নিয়ে তার অপেক্ষায় বসে থাকবে। সারাদিন শেষে যখন ক্লান্ত হয়ে ছেলেটি ঘরে ফিরবে তখন ছেলেটি চাইবে মেয়েটি তার আচল দিয়ে ছেলেটি ম্র শরীরের ঘাম মুছে দিক।মেয়েটি নিজ হাতে ছেলেটির জন্য খাবার বেড়ে দিক।মাঝে মাঝে নিজে ছেলেটিকে খাইয়ে দিক। সাধারনত কোন ছেলে এগুলোর জন্যই বিয়ে করে একটা মেয়েকে। আপনার ও হয়তো এমনি কিছু স্বপ্ন আছে।আর আমি আপনার সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি তাতে আপনার প্রতি আমার একটা ধারনা আছে।আপনার কাছে আপনার পরিবার সবার উর্ধ্বে। এখন কথা হল, আপনি আমাকেই কেন বিয়ে করবেন? আসলে আমাকেই বিয়ে করতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই। আমি বলি আমি কেমন। আমার পরিবার সম্পর্কে তো আপনার ধারনা আছেই।আর আমি নিজে থেকেই একটু বেশি কনজারভেটিভ মাইন্ড এর। আমি নামাজ পড়ি, কুরআন পড়ি, ইসলামী নিয়মকানুন মতে চলাফেরা করার চেষ্টা করি। আসলে যা যা বললাম ঠিক তেমন ইচ্ছা গুলোর জন্যই আপনি আমাকে বিয়ে করবেন। কারন যেই কাজ গুলোর কথা বললাম আমি ঠিক সেই কাজ গুলোই করবো আমার সংসার কে সুখি করার জন্য। আর আমি জানিনা আপনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন কি না? কিন্তু আমাকে বিয়ে করলে আমি আপনাকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়াবো। কারন আমি যার সাথে ইহজীবনে থাকবো পরকালেও আমি তার সাথেই জান্নাতে যেতে চাই। পরিবার. আব্বু আম্মু এর সাথে সদা সু ব্যবহার করার চেষ্টা করবো। সবসময় তাদের কে আমাদের উপর খুশি রাখার চেষ্টা করবো কারন তারা আমাদের উপর খুশি থাকলে আমাদের জন্য তারা দোয়া করবে আর তাদের দোয়ার থেকে বড় পাওনা আমাদের আর কি হতে পারে। আমি জানিনা আপনি কুরআন শরীফ পড়তে পারেন কি না।তবে আপনি যদি চান তাহলে কোন পুর্নিমা রাতে ছাদে বসে আমার কাঁধে মাথা রেখে আমার কুরআন তেলাওয়াত শুনতে পারবেন। মহানবী (সাঃ) বলেছেন, "কুরআন শরীফ পাঠ মনোযোগ দিয়ে শ্রবন করলে পাঠ করার সমান সওয়াব পাওয়া যায়। আমি যত টুকু পারবো ভাইয়া ভাবি আপুদের সাথে তাদের কে আমাদের উপর খুশি রাখবো। কারন তারা আমাদের গুরুজন। সব শেষে আল্লাহ যদি আমাদের উপর তার নেয়ামত রাখেন তবে অবশ্যই আমরা পিতামাতা সবার সুখ পাবো। এজন্যই আপনি চাইলে আমাকে বিয়ে করতে পারেন। আর আপনি যদি আমার বান্ধবীদের মত করে মানে, রান্নাবাড়া,কাপড় কাঁচা, ঘর গুছানো, বাসনকোসন মাজা, আর বছর বছর সন্তান উৎপাদনের জন্য আমাকে বিয়ে করতে চান, আসলে এসব আমারই কাজ আমি ই করবো। কিন্তু আমাকে বিয়ে করার আপনার উদ্দেশ্যই যদি এসব হয় তাহলে আই এম স্যরি.... আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না. ছেলেটি এতক্ষন অবাক হয়ে মেয়েটির কথা গুলো শুনছিল। তার কথা শেষ হবার পর সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। তখন ছেলেটি তার আম্মু আব্বু কে উদ্দেশ্য করে বলল তোমরা কিছু বলবে? তখন ছেলেটির আব্বু মেয়েটির বাবাকে বলে উঠলো, "বেয়াই সাহেব, কাজী ডাকতে পাঠান কাউকে, আমি আমার ঘরের লক্ষি কে আজকেই আমার বাড়িতে নিয়ে যেতে চাই।


Post a Comment

0 Comments