১ম পর্ব---
ম্যাডাম বিরক্ত হয়ে লাস্ট বেঞ্চের দিকে তাকালেন।লাস্ট বেঞ্চ বেয়াদব ছাত্রদের আড্ডাখানা।তিনি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে লাস্ট বেঞ্চের সামনে এসে দাঁড়ালেন।দুটা ছেলে দুটা মেয়ে পাশাপাশি বসে হাসাহাসি করছে।ম্যাডামকে দ্যাখে তাদের হাসি বন্ধ হয়ে গেল।ম্যাডাম অসহ্য রূপবতী। বয়স ২৯।অবিবাহিত। ম্যাডাম রাগে কাঁপতে কাঁপতে বললেন,দাঁড়াও।
চারজন দাঁড়ালো।ম্যাডাম চারজনের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বিরক্তগলায় বললেন,কথা বলছিলে কেন? ঢাকা ভার্সিটি কি কথা বলার জায়গা...?
ছেলে দুটার মধ্য থেকে আমি বললাম, ম্যাডাম, আমি জাহাঙ্গীরনগর ভার্সিটি-তে পরীক্ষা দিয়েছিলাম।সেখানে একটা না চারটা দেয়ালে বড়করে লেখা ছিল, 'চুপ থাকলে ভাল লাগে'! কিন্তু ঢাকা ভার্সিটি আমরা পুরাটা ঘুরে কোথাও এই লেখাটা দ্যাখলাম না।তাই মনে হচ্ছে,ঢাবি কথা বলারই জায়গা।
ম্যাডামের চোখমুখ শক্ত হয়ে গেল।কি বেয়াদবের মতো কথাবার্তা!ভার্সিটি ছাত্রের গায়ে হাত তুলতে নেই।কিন্তু তার মনে হচ্ছে,আমাকে ধরে আচ্ছামতো একটা ছেঁচা দিতে পারলে দিলটা ঠান্ডা হতো।ম্যাডাম রেগে রেগে বললেন,আমার সামনে ওভার স্মার্টনেস দ্যাখাবে না,এটা আমার খুব অপছন্দ। বুঝলে?
আমি আবার হাসি হাসি গলায় বললাম, ওভার স্মার্টনেস কোথায় দ্যাখালাম,ঠিক বুঝলাম না।যেটা সত্য,সেটাই বললাম।
আমার পাশে তপু দাঁড়িয়ে ছিল।ম্যাডাম তার দিকে তাকিয়ে বললেন, তোমার নাম?
তপু দ্রুত উত্তর দিল, গাঁজাবাবা।
উত্তর দিয়েই চুপ হয়ে গেল,মুখ থেকে ফস করে শব্দটা বের হয়ে গেছে।ম্যাডাম হতভম্বের মতো তার দিকে তাকিয়ে আছেন।কি অদ্ভুত নাম হয় আজকালকার ছেলেমেয়েদের, কয়দিন পর তো 'What the fuck'ও একটা নাম হয়ে যাবে!তখন সেটার জেন্ডার কি হবে...?
ম্যাডাম অবাকগলায় বললেন,তোমার নাম গাঁজাবাবা কেনো? গাঁজা বেশী খাও,এজন্য?
তপু থতমত খেয়ে বলল, ম্যাডাম আমার নাম, তানভীর হাসান তপু।বন্ধুরা ডাকে, গাঁজাবাবা।কতদিন নিজের নাম শুনি না।সবার মুখ থেকে এই নামটা শুনতে শুনতে আসল নামটা প্রায় ভুলেই গেছি।
ম্যাডাম অস্বস্তি নিয়ে আমাদের দ্যাখছেন।আমার ভীষণ ভালই লাগছে।ভার্সিটিতে সুন্দর ম্যাডাম না পেলে দমবন্ধের মতো অবস্থা হতো।ম্যাডাম আমার দিকে তাকিয়ে শান্তগলায় বললেন, খুব কষ্ট লাগে কখন জানো? যখন অনেক কষ্ট করে তোমাদের পড়াই,অথচ তোমরা তা বুঝতে চেষ্টা না করে নিজেদের মধ্যে গল্প করো।তোমরা তো আমার কষ্ট বুঝবা না।কারণ তোমাদের কোনও কষ্ট নেই।
আমি অপমানবোধ করে বললাম, ম্যাডাম, আমারও কষ্ট হয়, যখন দ্যাখি এত কষ্টকরে লেখা আমার গল্পটা কপি পেস্ট হয়ে গেছে!
ম্যাডাম চোখমুখ লাল করে বললেন,তুমি খুব অতিমাত্রায় বেয়াদব একটা ছেলে।কোন কলেজে ছিলে?
সরকারি বিজ্ঞান কলেজ।
সরকারি বিজ্ঞান কলেজের কি সবগুলা স্টুডেন্টই তোমার মতো এমন পেইন?
না ম্যাডাম,কিছু পেইন কিলারও আছে।
ম্যাডাম অবাক হয়ে বললেন,ওরা কেমন?
খুব ভাল ছেলে ম্যাডাম।নিয়মিত ক্লাস করে,পড়া নোট করে, হোমওয়র্ক করে।কলেজে উঠেও ক্লাস মিস দিলে প্রাইমারি বাচ্চার মতো দরখাস্ত লিখে,মাগরিব এর আযান দিলে ঘরে ফেরে।ভূমিকম্প না হলে রাতে বাসা থেকে বের হয় না, টঙ দোকানে দাঁড়িয়ে চা খায় না, কলেজে উঠলেও মা এখনও তাদেরকে বলেন,বাবা,আজ ক্লাসে মিস কি পড়িয়েছেন? দ্যাখেন অবস্থা, ছেলে কলেজে পড়ে,তবুও মা ছেলের কলেজের খাতা চেক করে!!! মা কলেজে দিয়ে যায়,নিয়ে যায়।মেয়ে দ্যাখলে সিটি দেয়া তো আকাশের চাঁদ, উল্টো দাঁড়িয়ে সম্মান জানায়।ম্যাডাম, এরাই হচ্ছে, পেইন কিলার।
ও আচ্ছা, এধরণের ভালো ছেলেদের তোমাদের মতো ব্যাকবেঞ্চারদের কেন পছন্দ হবে? ওরা তো ভাল ছেলে, তোমাদের মতো বেয়াদব না।আমার খুব লজ্জা হচ্ছে,তোমাদের মতো ছেলে আমি ঢাবিতে পেয়েছি।
আমি অপমানবোধ করে বললাম,আমারও খুব লজ্জা হচ্ছে ম্যাডাম।
ভ্রু কুঁচকে তিনি বললেন, কেন?
আমি দুই নম্বরের জন্য মেডিকেলে চান্স পাই নি।নইলে কি আর ঢাবিতে পড়ে থাকতাম!
তো বের হয়ে যাও না।বসে আছো কেন?
আমরা নিশ্চুপ।
ম্যাডাম একটু সময় নিয়ে বললেন,জীবনে কি হতে চাও?
আমি বললাম, লেখক।
তিনি অবাক হয়ে বললেন, লেখক!? লেখকরা কি ভাত খেতে পারে?
আমি একথায় সামান্য অপমানবোধ করলাম,কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, ম্যাডাম আমি বাসমতী চালের ভাত খাই।
ম্যাডাম অবাক হয়ে বললেন,কি চাল?
বাসমতী চাল।
ফাযলামী করো আমার সাথে?
আমি শান্তভাবে ব্যাগ থেকে এককেজি বাসমতী চাল বের করে ম্যাডামকে দ্যাখালাম।ম্যাডাম হতভম্ব হয়ে গেলেন।কিছুক্ষণ আমার দিকে চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে থেকে বললেন, তুমি বাসমতী চাল ব্যাগে নিয়ে ঘুরছো কেন?
অনেকে বিশ্বাস করে না যে, লেখকরাও বাসমতী চালের ভাত খেতে পারে।
তুমি আস্ত একটা পেইন।এমন ইডিয়ট ছেলে আমি আগে কখনও দ্যাখি নি।
বিড়বিড় করে বললাম, আপনার বয়সও বা কত?
কি বললা তুমি?
না, কিছু না।
আমার পাশে লিজা আর হৃদি দাঁড়িয়ে আছে।তারা আমার দিকে এমনভাবে তাকাচ্ছে মনে হচ্ছে যেন আমার কারণেই দাঁড়িয়ে আছে।নিজেদের কোনও দোষ নেই।তারা দুগ্ধ শিশু।
ম্যাডাম রাগে থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে বললেন, তোমাকে দশটা প্রশ্ন করবো।সবগুলার উত্তর দিতে না পারলে তোমরা চারজন সারা ঢাকা ভার্সিটি কানে ধরে হাঁটবে।
আমি হাসি হাসি মুখ করে বললাম, আর সবগুলার উত্তর পারলে?
ম্যাডামও হাসিমুখে বললেন,আমি বই থেকে প্রশ্ন করব না।কোথা থেকে করব তাই ভেবে কূল পাবা না,আর তোমার মতো পেইন সবগুলার উত্তর পারবে...! হাসালে...
যদি পারি? আত্মবিশ্বাসের সাথে বললাম।
তাহলে তোমার দুটা ইচ্ছে পূরণ হবে।
গোটা ক্লাস আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।সবাই বেশ মজা পাচ্ছে। কৌতুহল জাগছে, আমি কি চাই।আমি হাসিমুখে বললাম, আমার প্রথম ইচ্ছে আপনার সাথে কক্সবাজার ডেটিং-এ যাব।মেয়াদ -তিনদিন। আর...
আর...?
দ্বিতীয় ইচ্ছে, আপনার ঠোঁটে চুমু খাব।
পুরো ক্লাস আমার কথায় হতভম্ব হয়ে গেল।ভেবেছিলাম,আমার এই আবদারে ম্যাডাম ভয় পেয়ে যাবেন।কিন্তু তিনি ভয় পান নি।তিনি একপ্রকার ধরেই নিয়েছেন,আমি তার কোনও প্রশ্নেরই উত্তর পারবো না।
------------------------------
ম্যাডামের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।ম্যাডাম বললেন,প্রথম প্রশ্ন; সূর্য কোনদিকে উঠে?
পুরা ক্লাস হেসে উঠল।তাদের সবার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন আমি আর ম্যাডাম।আমি ধাঁধায় পড়ে গেলাম।আসলেই তো,সূর্য কোনদিকে উঠে? এত সহজ প্রশ্ন ম্যাডামের করার কথা না।নিশ্চয় এরমধ্যে কোনও রহস্য আছে।সহজ প্রশ্নের উত্তরগুলো সবসময় জটিল হয়,জটিল প্রশ্নের উত্তর হয় সহজ।আমি হাসিমুখে বললাম,সূর্য কোনওদিকেই উঠে না,সূর্য সূর্যের জায়গাতেই থাকে,শুধু পৃথিবীটাই ঘুরে যায়।
ম্যাডাম হাসিমুখে বললেন,গুডবয়! দ্বিতীয় প্রশ্ন; কোন কবির কবিতা ছাত্রাবস্থায়ই তার পাঠ্যবইয়ে চলে এসেছিল।
এপ্রশ্নের উত্তর না পারলে বিপদ।আমি বলেছিলাম, আমি লেখক হতে চাই।মানুষ ভাবে,লেখকরা সাহিত্যসম্পর্কিত সব প্রশ্নের উত্তর জানবে।এটা ভুল ধারণা।
তারাও খেটে খাওয়া মানুষ।উত্তরটা আমার জানা ছিল।বললাম, কবি জসিমউদ্দীন।
ম্যাডাম সরুচোখে তাকিয়ে বললেন, গুডবয়!তৃতীয় প্রশ্ন ; তোমার বন্ধু গাঁজাবাবা...
আমি শুধরে দিয়ে বললাম, ম্যাডাম, ওর নাম তপু।
সে যাই হোক,বন্ধুর নাম তোমরা দিলে গাঁজাবাবা,কয়দিন পর তো আমার নাম দিবে,গাঁজাআপু।কি, দিবে না?
আমি চুপ থেকে মাথানিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলাম।এর উত্তর; দিতেও পারি, নাও দিতে পারি।
ম্যাডাম আবার বললেন, তপু কথা বলার সময় অন্যদিকে তাকিয়ে কথা বলে।সে একবারও আমার চোখ বা ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে কথা বলে নি।এটা একটা রোগ।মনোবিজ্ঞানের ভাষায় এ রোগের নাম কি?
আমি বিড়বিড় করে বললাম, আমিই মানা করে দিয়েছিলাম,আপনার দিকে না তাকাতে।শুরু থেকেই আপনাকে আমার ভাল লেগে গিয়েছিল...
ম্যাডাম বিরক্ত হয়ে বললেন, স্পষ্ট করে বল।
আমি মুখে হাসি এনে বললাম, আমার ভাষায় এর নাম শ্রদ্ধা। ম্যাডামের প্রতি বিনীত শ্রদ্ধা।
ম্যাডাম প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে বললেন, মনোবিজ্ঞানের ভাষায় কি বলে ইডিয়ট?
আমি ইডিয়টের মতো হেসে বললাম, এর নাম মনোবিজ্ঞানের ভাষায় 'সোশ্যাল ফোবিয়া'। এই রোগে আক্রান্ত রোগীরা শ্রোতার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে অস্বস্তিবোধ করে।এটি 'আই কন্টাক্ট'গত (Eye contact) সমস্যা হিসেবে পরিচিত।সোশ্যাল ফোবিয়ার রোগীরা ভাবে,তাদের মুখে গন্ধ , তারা দাঁত ব্রাশ করে নি।শ্রোতা তার মুখের গন্ধ পেয়ে যাবে। তারা আরও ভাবে,কথা বলার সময় তাদের মুখ থেকে থুথু নির্গত হয়।শুধু তাই না, এই থুথু স্প্রে এর মতো করে শ্রোতাকে ভিজিয়ে দেয়।মূলত, এসবের কিছুই ঘটে না।যা ঘটে তা তার পুরাটাই নিজের মস্তিষ্কে ঘটে, আর অস্বস্তিতে ভোগে।
ম্যাডাম স্বাভাবিকভাবে হেসে বললেন, গুড!
বয়টা কেন উদাও হয়ে গেল, বুঝলাম না।আমি নিজের উত্তরে নিজেই মুগ্ধ হয়ে গেলাম,সেখানে ম্যাডাম এত স্বাভাবিক!
এরপর আমাকে দুটা রহস্য প্রশ্ন করা হলো।আমি আমাকে অবাক করে দিয়ে প্রশ্ন দুটির সঠিক জবাব দিলাম।
ম্যাডাম বললেন,এবার ষষ্ঠ প্রশ্ন; কোন জিনিস যত বড় হয়, তত ছোট হয়?
আমি ধাঁধায় পড়ে গেলাম।কিছু প্রশ্নের অনেকগুলো উত্তর হয়।এটাও এধরণের প্রশ্ন। উত্তরটা ম্যাডামের মনমতো না হলে আমার ইচ্ছে দুটি অপূর্ণই থেকে যাবে।আমি একটু মাথা চুলকিয়ে বললাম, Small - Smaller - Smallest. বানানের দিক থেকে বড় হচ্ছে,কিন্তু গঠনগতভাবে ছোটই বোঝাচ্ছে।
ম্যাডাম এই প্রথম আমার দিকে অবাকচোখে একইসাথে ভালভাবে তাকালেন।হেসে বললেন, সপ্তম প্রশ্ন ; 'ইলেভেন মিনিটস' বইয়ের লেখকের স্ত্রীর নাম কি?
এই সেরেছে! এ আবার কি ধরণের প্রশ্ন!? লেখকের স্ত্রীকে নিয়ে টানাটানি। কয়দিন পর তো বলা হবে, 'দ্য নেকেড ফেস' বইয়ের লেখকের বড় ছেলের নাম কি? কোনও মানে হয় -এসব প্রশ্নের...? কোনওই মানে হয় না।আমি ইলেভেন মিনিটস বইটা পড়েছি।দারুণ একটা বই! লেখক ব্রাজিলীয়ান, বর্তমানে তিনি সুইটজারল্যান্ডের জেনেভাতে অবস্থান করছেন। তাঁর বই বাংলাদেশে তেমনভাবে অনুবাদ করা হয় নি বলে আমরা তাঁর নাম খুব কমই জানি।তিনি যদি নোবেল পেয়ে যান,তবে বাংলাদেশের অনুবাদকরা ব্যস্ত হয়ে পড়বেন তাঁর বই অনুবাদ করতে।অনেকে নোবেলবিজয়ী লেখকদেরকে সবচে' সেরা মনে করেন।এটা ঠিক না।লিও তলস্তয়-ও নোবেল পান নি।তাতে কি তাঁর জনপ্রিয়তার কমতি ঘটেছে? আমাদের নজরুল-ও তো নোবেল পান নি।তিনি কি তার যোগ্য ছিলেন না?
আমি হাসিমুখে বললাম, লেখকের নাম পাওলো কোয়েলহো।বড়ই ভাল মানুষ। আমার আইকন।তাঁকে একবার জড়িয়ে ধরতে পারলে দিলটা ঠান্ডা হতো।
ম্যাডাম সরুচোখে আমার দিকে তাকালেন।তার বিরক্তি সপ্ত আসমানে উঠল।রাগে কাঁপতে কাঁপতে তিনি বললেন,তাঁর নাম বলি নি, তাঁর স্ত্রীর নাম জানতে চেয়েছি। তুমি কম কথা বলার চেষ্টা করবে, ঠিক আছে?
আমি লজ্জিতভাবে মাথা নেড়ে বললাম, ঠিক আছে।তাঁর স্ত্রীর নাম হচ্ছে,Cristina Oticica.
ম্যাডাম বিরক্তভঙ্গীতে মাথা নেড়ে বললেন, কারেক্ট।
ক্লাসের সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।সবাই চাচ্ছে আমি যেন জিতে যাই,কোন ম্যাডাম কোনদিন কোন অভাবীর মুখে ভাত তুলে দিয়েছেন,তা কেও মনে রাখে না।কোন ম্যাডাম কোন বাজে স্ক্যান্ডালে জড়িয়েছেন,তা সবাই রসিয়ে রসিয়ে বলেন।আমার ম্যাডামের জন্য খুব মায়া হচ্ছে।তাকে কাছে পেতে ইচ্ছে করছে।আদর করতে ইচ্ছে করছে।ক্লাসের সবাই এটাকে যৌনতা বলবে,আমি এটাকে বলব,ভালবাসা। আমি ভালবাসার কাঙাল,যৌনতার না।
এবার লাস্ট কোশ্চেন। ম্যাডাম চারপাশে একবার তাকিয়ে নিলেন।আমার মতো ছেলে নয়টা প্রশ্নেরই উত্তর পারবে,তা তার জানা ছিল না।খুব সম্ভব এখন তার ভেতর অনুশোচনা হচ্ছে।এমন চ্যালেঞ্জ না নিলেও হতো।আমাকে দুটা থাপ্পড় দিয়ে ক্লাস থেকে বের করে দিলেও তো হতো।আমি ম্যাডামের ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে আছি।ভীষণ মায়া হচ্ছে এই মেয়েটার জন্য।তিনদিন এই মেয়েটার হাত ধরে কক্সবাজার ঘুরে বেড়ালে মন্দ হয়না।ম্যাডাম ভয় পেয়ে যাচ্ছেন।তার চোখে পানি জমছে।ভালবেসে সেই পানি মুছে দিতে ভীষণ ইচ্ছে করছে।ম্যাডাম কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন, লাস্ট কোশ্চেন; একটি কুকুর একটি জঙ্গলের কতদূর পর্যন্ত দৌঁড়াতে পারবে?
আমি হতভম্ব হয়ে ম্যাডামের দিকে তাকালাম।আমার চোখমুখ থেকে হাসি উড়ে গিয়ে ম্যাডামের চোখেমুখে চলে এল।আমি মাথা চুলকাতে থাকলাম। এই একটা প্রশ্নের উপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে।তীরে এসে তরী ডুবানো বাঙালির স্বভাব। আমার মনে হচ্ছে, এই একটা প্রশ্নের জন্য বাঙালি না হলেও চলবে।আমি অস্থির হয়ে ভাবছি, উত্তরটা কি, উত্তরটা কি...?কুত্তা বিষয়ক কোনও প্রশ্নে হেরে যাওয়ার কোনও মানে হয়...?
.....
.........(চলবে )...........
0 Comments
Thanks for your valuable comment. We will be back soon.
Thank you 😊😊😊