একমুঠো নীল জোসনা

Ads Inside Post

একমুঠো নীল জোসনা

golpo-ghar.blogspot.com
golpo-ghar.blogspot.com


গত পর্বের লিংকঃ একমুঠো নীল জোসনা

পর্ব-৫

এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করে ইলমাজ নিজ গতিতে হাটছে তার তার পিছু পিছু মায়া ও দৌড়াচ্ছে।

স্যার একটু আস্তে হাটলে এমন কি ক্ষতি হবে আপনার?(মায়া)

ধীর গতির মানুষ গুলো ব্যাক্তিত্বহীন।।(ইলমাজ)

আপনি আর আপনার ব্যাক্তিত্বের গুষ্টিরে কিলাই।😠মনে মনে মায়া।

ইলমাজ পার্কিংয় গিয়েই থামলো, আর মায়া তার পিছু পিছু থেমে হাঁপাচ্ছে।।

এইটুকুতেই হাঁপিয়ে উঠেছেন আপনি?না জানি বাকি সময় কি করবেন।।মুখ বেঁকে বললো ইলমাজ।

আপনি ওভাবে দৌড়াচ্ছিলেন তাতে আমার কি দোষ?আমার হাতে ব্যাগ ও বটে😒(মায়া)

আচ্ছা??এটাকে ব্যাগ বলে আগে জানতাম না।।আর এতবড় বস্তা আই মিন ব্যাগটা সবসময় ঝুলিয়ে রাখতে বিরক্ত লাগে না আপনার?(ইলমাজ)

না স্যার,এখানে আমার কলিজার টুকরোরা থাকে😎।(মায়া)

আচ্ছায়ায়ায়ায়ায়া,,,কলিজার টুকরো ইদানীং ব্যাগেও অবস্থান করে,আর তা মিস মায়া আজহারি দ্বারা আবিস্কৃত।।bravo...মুখ ভেটকে হাত তালি দিতে দিতে বললো ইলমাজ।।

কোন কথা না বলে মায়া মুখ বেঁকে দাঁড়িয়ে আছে।।

এখানে দাঁড়িয়ে আছি কেন আমরা?(মায়া)

লোকাল বাসের অপেক্ষা করছি আমরা।।(ইলমাজ)

এয়ারপোর্টে লোকাল বাস?😳(মায়া)

মায়ার কথায় কোন জবাব দেয় নি ইলমাজ।। ফোন হাতে নিয়ে কাউকে কল দিচ্ছে।।

চলো,
ফোন পকেটে রেখে আবার হাটতে শুরু করলো সে।।
মায়াও হাটতে শুরু করলো।।।পার্কিংয়ে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো ইলমাজ।।

মায়া গাড়ির দিকে চোখ উল্টে তাকিয়ে আছে, গাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আবারও তাকিয়ে দেখছে ইলমাজকে।।

কি সমস্যা আপনার?ভিতরে আসার জন্য কি আপনাকে স্পেশালি ইনভিটিশন কার্ড দিতে হবে?(ইলমাজ)

না মানে স্যার,কার গাড়িতে বসে যাচ্ছেন?গাড়ির মালিক কে?পারমিশন নিয়েছেন তো?(মায়া)

রাগে দাঁত খিলিয়ে এক হাতে ঘাড় ঘষছে আর রাগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জানালার বাহিরে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে ইলমাজ।।

গাড়ির মালিক আমিই।।আর একটা কথাও যদি মুখ থেকে বের করেছো তো এখানেই একা ফেলে চলে যাবো আমি।।তখন ফকিরের বেশে ভিক্ষা করো।।😡(ইলমাজ)

সরি স্যার,,আমি জানতাম না যে এই গাড়ির মালিক আপনি।।(মায়া)

হ্যাঁ অপরাধ হয়েছে আমার নেক্সট টাইম থেকে গাড়িতে নেইম প্লেট লাগিয়ে রাখবো।। দাঁতে দাঁত চেপে চাপা হেসে বললো ইলমাজ।

আমি তা মিন করিনি স্যার।।(মায়া)

সোজা গাড়িতে উঠে বসো আর হোটেলে না পৌছানো পর্যন্ত একটা উফ্ আর একটা শব্দের শ উচ্চারণ করবে না।।😤(ইলমাজ)

জ্বী স্যার।।ভিত বিল্লির মতো জবাব দিলো মায়া।।

ইলমাজ মুখ জানালার দিকে ঘুরিয়ে মুচকি হাসছে।।।

বেশ কিছুক্ষন যাওয়ার পর মাঝরাস্তায় হঠাৎ গাড়ি থেমে যাওয়া মাত্র চমকে উঠলো সবাই।।

গাড়ি থামিয়েছো কেন?(ইলমাজ)

স্যার কোন প্রবলেম হয়েছে মেবি।।চেক করতে হবে।।(ড্রাইভার)

তাহলে বসে আছো কেন,যাও গিয়ে চেক করো।😒(ইলমাজ)

ড্রাইভার বের হয়ে গাড়ি চেক করছে আর মায়া মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে আছে,ইলমাজ বার বার আড়চোখে তাকাচ্ছে মায়ার দিকে।।

স্যার,বাইরে থেকে ডাকলো ড্রাইভার।

বলো?কোনো সমস্যা? (ইলমাজ)

স্যার একটু সময় লাগবে,টায়ার পাম্পচার হয়ে গেছে।(ড্রাইভার)

কতক্ষন লাগবে?(ইলমাজ)

এইতো ২০ মিনিট।। (ড্রাইভার)

ততক্ষনে বাহিরে এসে অপেক্ষা করতে হবে।।ইলমাজ গাড়ির বাহিরে গিয়ে দাঁড়ালো।।

আর মায়া এখনো গাড়িতেই বসে আছে।।

কি সমস্যা আপনার? গাড়ির টায়ার পাম্পচার হয়েছে কি শুনেন নি?আপনার কারনে একটা অলরেডি পাম্পচার্ড আর বাকিগুলোর ও কি অবস্থা খারাপ করার ইচ্ছা জেগেছে আপনার?(ইলমাজ)

রেগে আগুন হয়ে গাড়ির ভিতর থেকে বাহিরে এসে দাঁড়ালো মায়া।

আর কতক্ষন লাগবে?খুব বিরক্ত লাগছে আমার।।(ইলমাজ)

স্যার আরেকটু সময় লাগবে।।(ড্রাইভার)

মায়া হাটতে হাটতে গাড়ি থেকে একটু দূরে গেলো।।
মায়াকে পাশে দেখতে না পেয়ে এদিক ওদিক খুজতে খুজতে ইলমাজ ও সেদিকটায় ছুটে গেলো।।

মায়া গুটি গুটি পায়ে হাটছে।ইলমাজ দৌড়ে মায়ার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।।

এখানে কি আপনার শশুরবাড়ির লোকজন থাকে নাকি?(ইলমাজ)

মানে কি?(মায়া)

মানে হাটতে হাটতে এমন ভাবে এতদুর এসেছেন যেনো এখানকার সবকিছু আপনার চেনা।।😒(ইলমাজ)

এতদুর কোথায়? সামান্যই তো আসলাম বলে পিছনে ফিরে তাকাতেই দেখছে বেশখানিকটা দূরে চলে এসেছে সে।।চমকে ইলমাজ এর দিকে তাকিয়ে চাঁপা হাসি দেয়ার চেষ্টা করছে মায়া।।

ইলমাজও দাঁত চাপিয়ে হাসছে।😤

চলো এখান থেকে।।মায়ার পিছনে কয়েকজন লোক মায়ার দিকে কুনজরে তাকাতে দেখে বললো ইলমাজ।মায়ার হাতের বাহু ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো।

ভাড়া কতো করসেন?ওই লোক গুলোর মধ্য থেকে একজন বলে উঠলো।

ইলমাজ অগ্নিয় দৃষ্টিতে লোকটির দিকে তাকালো।।

না মানে কইসিলাম কি,দাম আরও বাড়াই দিবো।(লোক)

ইলমাজের চোখ রক্তের লাল বর্ণ ধারন করেছে।।সোজা গিয়ে ওই লোকের মুখে একনাগারে ঘুষি দিতে লাগলো।।

কি বলছিলি?আবার বল?বলনা অমানুষ। 😡😠ওই লোক কে আঘাত করতেই আছে লাথির উপর লাথি মারছে ইলমাজ।
ইলমাজেকে পিছন থেকে কেউ একজন গাছের টুকরো দিয়ে খুব জোরে পিঠে আঘাত করলো।। ইলমাজ সেদিকে লক্ষ না করে ওই লোক কে আঘাত করতে আছে।।

এই মিয়া ওরে মারন বন্ধ কর নাইলে এই মাইয়ার কাপড় ছিইড়া ফালামু।।মায়ার একহাতের বাহু ধরে বললো লোক টি।

ইলমাজ অগ্নি দৃষ্টিতে লোকটির দিকে তাকালো,ততক্ষনে প্রথম ব্যাক্তি টি রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে কাত।।

মায়া ব্যাগ থেকে ফ্লাস্ক বের করে একহাত দিয়ে ওই লোকের মুখে খুব জোরে আঘাত করতেই লোক টি মায়াকে ছেড়ে দূরে গিয়ে ছিটকে পড়লো।

আমার কাপড় ছিড়বি তুই?বাড়িতে মা বোন নেই?দাঁড়া দেখাচ্ছি তোকে কিভাবে কাপড় ছিড়তে হয়।।
ফ্লাস্কের ঢাকনা খুলে সব চা ওই লোকের মুখে ছুড়ে মারলো।।
ব্যাগ দিয়ে ওই লোকের মাথায় জোরে জোরে বারি দিতে শুরু করলো।
কাপড় ছিড়বি?দেখ কাপড় কিভাবে ছিড়ে বলা মাত্রই ওই লোকের শার্টের বোতাম এর অংশ টুকু ধরে হেচকে এদিক থেকে ওদিক সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে টানতে শুরু করলো।
তোকে আমি মেরে ছেস্কা চোরের মতো সিলেটের চা বাগানে কাকতাড়ুয়া বানিয়ে রাখবো।চেহারা দেখেছিস নিজের?গরুচোরের মতো লাগে তোকে। হারামজাদা।পা থেকে জুতা খুলে সেই জুতা দিয়ে হাই লেভেলের পিটুনি দিচ্ছে মায়া ওই লোক কে।মেরে শার্ট ছিড়ে পুরা সার্কাস এর জোকার বানিয়ে দিয়েছে।।।

তাদের গ্রপের বাকি দুইজন লোক ইলমাজ যাকে পিটিয়েছে তাকে মাটি থেকে তুললো, একজন ধরলো অন্যজন ইলমাজ এর সামনে এসে দাঁড়ালো।।

তোর ও কি ওর মতো আধমরা হওয়ার ইচ্ছা জেগেছে?(ইলমাজ)

ভাই বাদ দেন যা হওয়ার হয়ে গেছে,আমরা প্রথমে আপনেরে চিনতে পারি নাই।ওদের পক্ষ থেকে আমরা ক্ষমা চাইতাসি।।আপনার বউয়েরে কন তারে ধুলায় দেয়া বন্ধ করতে,বেচারা কাইত হইয়া গেসে,আরেকটু ধুলানি খাইলে মেডিকেল নন লাগবো।। (লোক)

বউ শব্দ টা শুনে ইলমাজ মায়ার দিকে অবাক চোখে তাকালো।।

মায়া এখনো জুতা দিয়ে তাকে দর্শন করেই যাচ্ছে।থামার কোন নাম নিচ্ছে না সে।

মায়া থামো।।মায়ার বাহু ধরে টেনে মায়াকে নিজের কাছে নিয়ে আসলো ইলমাজ।।
মায়া এখনো হাতাপাই করছে ওই লোককে মারার জন্য।।

মায়া স্টপ ইট।।অনেক হয়েছে,এই ধোলায় বেচারা আগামী ১০ বছর মনে রাখবে।।এখন থামো।।(ইলমাজ)

কেনো৷ থামবো? তার কতবড় সাহস আপনার পিঠে ওভাবে আঘাত করেছে।।(মায়া)

তার জন্য এতক্ষন যাবৎ আপনি ওকে হারপিক দিয়ে ধুয়েছেন, বুঝেছি আপনি লেডি মাফিয়া,এবার থামুন।(ইলমাজ)
ইলমাজের কথা শুনে নিজেকে স্থির করলো মায়া।।লোক টি আমদানি আট্ঠান্নি খারচা রুপাইয়ার জনি লিভার যেভাবে বউয়ের হাতে ধোলায় খেয়ে চোখ উল্টে চিত হয়ে ছিলো ঠিক এই লোকটির ও একি অবস্থা হয়েছে😂।

কুত্তা,গরুচোর, যা কোথাও গিয়ে মরে যা।।চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলছে মায়া।।
ওই লোক গুলো তাৎক্ষনাক সেখান থেকে কেটে পড়লো।।

আপনার ভাব-স্বভাব দেখে প্রথমে ভেবেছিলাম আপনি অলিগলির কোন সাধারন লেডি গুন্ডি হবেন,কিন্তু আজকে প্রমান পেলাম আপনি লেডি মাফিয়ার ১ম ধাপে পড়েন।।ধন্য আমি।।😏🙏(ইলমাজ)
---------------------------
লোকটা কে মেরে মায়া হাঁপাচ্ছে,ইলমাজ মায়ার দিকে অকষ্মিক ভাবে তাকিয়ে আছে।।

এই মেয়েটার মধ্যে এমন কি আছে?আমি ভেবে ঠাই পাই না,সব চেয়ে আলাদা তুমি।।ভাবছে ইলমাজ।

দুজন হোটেলে যেতে যেতে প্রায় রাত ১০ টা বেজেছে।।ইলমাজ নিজের জন্য আর মায়ার জন্য আলাদা রুম বুক করেছে।।

মায়া চুপচাপ রিসেপশনে দাঁড়িয়ে আছে,মায়ার মুখে চিন্তার ছাপ দেখতে পেলো ইলমাজ।।

কি চিন্তা করছো?(ইলমাজ)

না স্যার তেমন কিছু না।।(মায়া)

তোমার জন্য আলাদা রুম বুক করা হয়েছে,সো ভয় পাওয়ার কিছুই নেই।।।কজ,আমার চয়েস এতো খারাপ না।।(ইলমাজ)
মায়ার চেহারার অবস্তা দেখে বহু কষ্টে হাসি চাপিয়ে রেখেছে ইলমাজ।

ইলমাজের পাশেই মায়ার রুম বুক করেছে যাতে কোন সমস্যা না হয়।
মায়াকে তার রুমে পৌছে দিয়ে,নিজের রুমের বিছানায় গা এলিয়ে দিলো সে।

ফ্রেশ হয়ে বের হতে হতে প্রায় আধঘন্টা লেগে গেছে মায়ার।।ফ্রেশ হয়ে ব্যাগ খুজতেই দেখছে তার রুমে ব্যাগ নেই।।চমকে উঠলো মায়া।।

সার্ভিসম্যান হয়তো ভুলে ব্যাগ ইলমাজ স্যার এর রুমে রেখে এসেছে।গিয়ে নিয়ে আসি,না না এই সময় যাওয়া কি ঠিক হবে?।(মায়া)

খুব জোরে বারি লাগাতে পিঠে বেশ আঘাত পেয়েছে ইলমাজ।।পিঠের বাম পাশে ফুলে কালচে হয়ে গেছে ইলমাজের।উদম গায়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আয়নার দিকে পিঠ ঘুরিয়ে দেখার চেষ্টা করছে ইলমাজ।।আর ব্যাথায় হাল্কা কুকড়ে উঠছে সে।।

রুমের দরজা লক না থাকায় মায়া ইলমাজের রুমের ভিতরে প্রবেশ করতেই ইলমাজ কে এমন অবস্থায় দেখে চমকে উঠলো মায়া।।

স্যারি,স্যরি,স্যরি স্যার আমি কিছু দেখি নি।।চোখে দুহাত দিয়ে চোখ ঢাকতে ঢাকতে বললো মায়া।

আতংকিত হয়ে মায়ার দিকে ফিরে তাকালো ইলমাজ।।মায়া হাত দিয়ে এভাবে চোখ লুকাতে দেখে কিছুটা অবাক হলো ইলমাজ।

স্যার আমি পরে আসবো।। চোখ হাত দিয়েই রেখেছে মায়া।

দরজা কি আমি লক করতে ভুলে গেছিলাম নাকি তুমিই লক ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকেছো?একটা ভ্রু উপরে তুলে বললো ইলমাজ।।

ন,,ন,,না না আমি কিভাবে লক ভাঙ্গবো স্যার,আমার ওতো শক্তি কবে থেকে হয়েছে?চোখে হাত রেখেই বললো মায়া।।

ওহ!আমি তো ভুলেই গেছিলাম তোমার ওতো শক্তি কোত্থেকে যে তুমি তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করবে।।মুখ বাকা করে মায়ার জুতার দিকে তাকিয়ে বললো ইলমাজ।।

আচ্ছা আমি পরে আসছি স্যার,আমতা আমতা করে বলে দরজার দিকে পা বাড়ালো মায়া।

ওয়েট!!!!(ইলমাজ)

থমকে দাঁড়ালো মায়া।।

আমার মান সম্মান নষ্ট করে তুমি এভাবে কিভাবে চলে যাবে?(ইলমাজ)

ম,,ম,,মানে কি স্যার??(মায়া)

মানে তুমি আমাকে বিনা বস্ত্রে দেখেছো!!আমার ইজ্জতের ফালুদা বানিয়েছো।।এটা শাস্তিযোগ্য আপরাধ মনে হচ্ছে আমার।(ইলমাজ)

ইলমাজ মায়ার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে আর মায়া চোখ বড় বড় করে দরজার দিকে তাকিয়ে ঢোক গিলছে।।

স,,,,স,,,স,,স্যার কি বলছেন এইসব?আমি জানতাম না আপনি এমন অবস্থায় থাকবেন?আর আপনি কি মেয়ে নাকি যে আপনার ইজ্জত নষ্ট হবে? আর তাছাড়া আমি কিছুই দেখি নি স্যার সত্যি।😷(মায়া)

আমি তোমাকে দেখতে দেখেছি।তুমি নক করে ঢুকো নি যেহেতু এটা আপরাধ আর এটার শাস্তি তো তুমি পাবেই।।(ইলমাজ)

আপনি পাগল হয়ে গেছেন স্যার।।আ,আ,আমি জানতাম না স্যার,স্যরি।।নেক্সট টাইম থেকে নক করে ঢুকার কথা টা মাথায় রাখবো।।(মায়া)

সেটা পরের কথা,আগের টা তো আগে মিটিয়ে নিতে হবে।।বাকা হাসলো ইলমাজ।।

আম,,,আমি আসছি স্যার।।মায়া দরজার দিকে এগিয়ে গেলো।।
আর তখনই ইলমাজ মায়ার হাতের বাহু ধরে এক টান দিয়ে ইলমাজ এর দিকে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড় করালো তাকে।।

কি সমস্যা ওভাবে চোখে হাত দিয়ে রেখেছো কেন?আমাকে দেখতে কি বিকৃত মানব এর মতো লাগে?(ইলমাজ)

না,, মানে স্যার আমার আনিজি লাগছে তাই।।(মায়া)

হাত সরিয়ে এদিকে তাকাও।।(ইলমাজ)

মায়া হাত সরিয়ে ভ্রু কুচকে চোখ বন্ধ করে রেখেছে।

মায়ার এমন অবস্থা দেখে ইলমাজের বড্ড হাসি পাচ্ছে।।ইলমাজ মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে আর মুচকি হাসছে।।

এদিকে তাকাতে বললাম।।(ইলমাজ)

মায়া ঢোক গিললো এক চোখ খুলে ইলমাজ এর দিকে তাকালো।।ইলমাজ মায়ার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে মায়া আবারো চোখ খাটলো।

এদিকে তাকাতে এমন করছো আর যখন শাস্তির সম্মুখীন হবে তখন তোমার অবস্থা কি হবে তা চিন্তা করছি।।(ইলমাজ)

ইলমাজের কথা শুনে রীতিমতো চমকে চোখ বড় করে ইলমাজের দিকে তাকালো মায়া।।

মানে কি স্যার?(মায়া)

মানে ওই যে আমার শার্ট দেখছো? আমি এতক্ষন ওদিকেই তাকাতে বলছিলাম।। ওটা তোমার কারনে নোংরা হয়েছে সো এখন তুমি এটা ধুয়ে দিবে যেভাবে ওই লোক টা কে জুতা দিয়ে ধুয়ে কাকতাড়ুয়া বানিয়েছিলে।।(ইলমাজ)

ওহ,তাহলে এটা আমার শাস্তি ছিলো? 😅 স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললো মায়া।।

কেন অন্য কিছু আশা করছিলে নাকি?একটা ভ্রু উপরে তুলে বললো ইলমাজ।।

ন,,ন্,,না মানে ঠিক আছে।।এক্ষুনি ধুয়ে দিচ্ছি।।(মায়া)

ইলমাজ ওয়াশ্রুমের দিকে ইশারা করে যেতে বললো মায়াকে।।।

মায়া শার্ট নিয়ে ওয়াশ্রুমে ঢুকে পড়লো।।ইলমাজ পেট ধরে হাসতে হাসতে বেডে বসে পড়লো।

বেশ কছুক্ষন পর ওয়াশ্রুম থেকে বেরিয়ে চমকে উঠলো মায়া।।
ইলমাজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পিঠের আহত অংশটা ছোয়ার চেস্টা করছে,,আর ব্যাথায় কুকড়ে উঠছে।।

গম্ভীরমুখে ইলমাজের পিঠের দিকে তাকিয়ে আছে মায়া।।ইলমাজের পিঠের একাংশে কালচে সার্কেল হয়ে গেছে।।

মায়ার খারাপ লাগছে কেন জানি খুব মায়া হচ্ছে তার জন্য।। মায়া অসহায় চাহনিতে তাকিয়ে আছে ইলমাজ এর দিকে। ইলমাজ মায়ার দিকে লক্ষ করতেই নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো।

কি হলো কখন এসেছো?
আর এভাবে স্ট্যাচু হয়ে আছো কেন?ওয়াশ্রুমে ভুত দেখেছো নাকি?হাসতে হাসতে বললো ইলমাজ।।

এতো ব্যাথা পাওয়ার পরও এই মানুষটি বিন্দুমাত্রা তার অনুভূতি বুঝতে দেয় নি।।একটা মানুষ এতটা সহনশীল কিভাবে হতে পারে?ইলমাজ এর দিকে অপলক তাকিয়ে ভাবছে মায়া।।

ওহ হ্যালো মিস মায়া?এভাবে কি দেখছো?এবার মনে হচ্ছে সত্যিই তুমি ভুত দেখেছো।।এই প্রথম দেখলাম মিস মায়াও কাউকে ভয় পায় নাকি ভুতও তোমাকে দেখে পালিয়ে গেছে??হাসতে হাসতে বলছে ইলমাজ।।
আজকে ইলমাজের এমন কথায় মোটেও রগান্বিত হয় নি মায়া বরং সেও হেসে দিলো।।

আমার ব্যাগে বাম আছে চাইলে পিঠে লাগিয়ে নিতে পারেন।।(মায়া)

মায়ার এমন কথায় খটকা খেলো ইলমাজ এর।।হাল্কা ঘাড় বাঁকা করে ভ্রু কুচকালো সে।

সহানুভূতি দেখাচ্ছো?যদি তাই হয় তবে বলবো সহানুভূতি প্রদর্শন করা মানুষ গুলো আমার একদম অসহ্য লাগে,আমি কখনো কারও সহানুভূতির সম্মুখীন হই নি না কখনো হবো।রাগী ভাব নিয়ে বললো ইলমাজ।

না স্যার সহানুভূতি কেন দেখাবো?আপনার পিঠে ক্ষতের দাগ হয়ে গেছে আর তা আমার কারনেই হয়েছে তাই বললাম।।(মায়া)

আমি ঠিক আছি।।মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে বললো ইলমাজ।

হুম তা আমি দেখতেই পাচ্ছি।।(মায়া)

মায়ার কথার কোন জবাব দিলো না ইলমাজ চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে সে।
মায়া বেড থেকে ব্যাগ উঠিয়ে তার ভিতর থেকে বাম নিয়ে ইলমাজ এর দিকে এগিয়ে দিলো।।

i Don't need it..i m Alright..আর তাছাড়া আমি আগেও বলেছি আমার কারও সেম্প্যাথির প্রয়োজন নেই। (ইলমাজ)

আমিও আপনাকে আগে বলেছি,আমি আপনার প্রতি কোন সহানুভূতি দেখাচ্ছি না,আপনি আমাকে প্রটেক্ট করার জন্য এমন অবস্থার সম্মুখীন হয়েছেন আর কষ্টটা ও যেহেতু আপনি আমার জন্যই পাচ্ছেন তবে এটাকে হিল করার দায়িত্বটা ও আমার।(মায়া)

আমার হাত পৌছাবে না।।(ইলমাজ)

আমি লাগিয়ে দিতে পারি যদি আপনি কিছু মনে না করেন।।(মায়া)

হুম।।দিতে পারো।( ইলমাজ)

মায়া বামের ঢাকনা খুলে ইলমাজের পিঠের ক্ষত জায়গাটায় আস্তে আস্তে লাগাতে শুরু করলো।।

ইলমাজ আয়নায় মায়ার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে আছে।

উপ্সস্,এই লোক টা এতো হট কেন?মনে মনে বলছে বড় বড় নিঃশ্বাস নিচ্ছে আর ঢোক গিলছে মায়া।।

ক্ষত অংশে হাল্কা চাপ পড়তেই আওয়াজ করে উঠলো ইলমাজ।।

ওহ স্যরি স্যার,,আমি খেয়াল করিনি।।এখন ব্যাথা কমে যাবে।(মায়া)

হুম।।ইলমাজ এখনও মায়ার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে আছে।।

.....

.........(চলবে )...........



Post a Comment

0 Comments