একমুঠো নীল জোসনা

Ads Inside Post

একমুঠো নীল জোসনা






পর্ব-৭

মায়া ইলমাজের ভয়ে পিছুতে পিছুতে একবারে দেয়ালের সাথে ঘেঁষে দাঁড়ালো।মায়ার থেকে ইলমাজের দূরত্ব টা ও বেশি না একদম ছোয়া ছোয়া।।
মায়া ঘামছে আর ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে ঢোক গিলছে।
ইলমাজ এমনভাবে তাকিয়ে আছে যেনো হাজার বছরের সাধনা তার পুরন হয়েছে।।

লোকের পায়ের দিকে তকিয়ে থাকতে বুঝি বেশ ভালো লাগে তোমার? অত্যন্ত নম্রতার সাথে বললো ইলমাজ।।

স,স,,,,স্যার আমার আনইজি লাগছে প্লিজ একটু সড়ে দাঁড়ান।ভয়জড়িত স্বরে বললো মায়া।

ইলমাজ এক হাত মায়ার বামপাশ কাধের হাল্কা উপরে দেয়ালের সাথে ঠেকিয়ে দাঁড়ালো।
মায়া আরও ভয় পেয়ে থরথর করে কাপা শুরু করলো।

আমি যা বলবো তার বিপরীতে একটা শব্দও যেনো উচ্চারন না করো।।চুপচাপ শুনবে আর তার অনুধাবন করবে।। is that clear?(ইলমাজ)

,,,,,,,,,,,,,,,,৷মায়া চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।

কিছু জিজ্ঞেস করেছি শুনতে পাচ্ছো না?(ইলমাজ)

আপনিই তো বলেছেন একটা শব্দ উচ্চারণ না করতে,ঢোক গিলতে গিলতে বললো মায়া।

বিপরীতের মানে বুঝো না?বিপরীত কথা বলতে না করেছি,প্রশ্নের জবাব দিতে না করি নি।নাক ফুলিয়ে বললো ইলমাজ।।

জ,,জ্বী স্যার।।মাথা নিচুতেই জবাব দিলো মায়া।

রাত ৮ টায় রেডি থাকবে,যাতে আর বলতে না হয়।।(ইলমাজ)

ক,ক্ক,কিন্তু স্যার আমি তো আগেও বলেছি আপনার কালচারের সাথে আমি মানানসই নই,আর তাছাড়া আমি পার্টি এ্যাটেন্ড করার মতো তেমন কোন ড্রেসও আনি নি, আই হোপ আপনি বুঝতে পারছেন।।(মায়া)

তোমাকে আদেশ করেছি,তোমার মন্তব্য জানতে চাই নি।।কথা একবার বললে কানে ঢুকে না?চোখ রাঙ্গিয়ে মায়ার থুতনি ধরে তার মাথা উপর করে বললো ইলমাজ।
মায়া চোখ খেটে রেখেছে ইলমাজের দিকে তাকাচ্ছে না ভয়ে।
মায়ার এই ভীতু চেহারা দেখতে বেশ মজায় পাচ্ছিলো ইলমাজ।।

অনেক নিস্পাপ লাগছে মায়াকে,ইলমাজ একপ্রকার নেশায় পড়ে যাচ্ছে,তাকিয়ে আছে সে মায়ার দিকে।নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে মায়া থেকে দূরে সরে আসলো ইলমাজ।

মায়া এখনো স্ট্যাচুর মত দাঁড়িয়ে আছে।।মায়ার থেকে সামান্য দূরে তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলতে লাগলো,,

যে ইউজলেস এক্সকিউজ টা তুমি আমাকে দিয়েছো, এই টাইপের ডাউন মার্কেট এক্সকিউসেজ নেক্সট টাইম থেকে যেনো আর আমার সামনে আটার না করো।বলা মাত্র মায়ার হাতের কব্জি ধরে টেনে রুমে থেকে বের হয়ে সোজা পার্কিংয়ে নিয়ে গেলো মায়াকে।মায়া যেনো এখন পাগল হয়ে যাবে।।মায়াকে ঠেলে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি নিজেই ড্রাইভ করতে লাগলো ইলমাজ।

একটা শপিং কমপ্লেক্স এর সামনে গিয়ে গাড়ি ব্রেক করলো ইলমাজ।মায়া কিছু বলার জন্য সাহস পাচ্ছে না বেচারি।

বের হয়ে দাঁড়াও,(ইলমাজ)

কিন্তু স্যার হচ্ছে টা কি?(মায়া)

ইলমাজ মায়ার দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে তাকাতেই মায়া তড়িঘড়ি গাড়ি থেকে বের হয়ে একপাশে গিয়ে দাঁড়ালো।ইলমাজ গাড়ি লক করে মলে প্রবেশ করতে লাগলো মায়াও তার পিছু পিছু যাচ্ছে।

ইলমাজ একটা শো-রুমে ঢুকলো সাথে মায়াও,মায়া বেকুবের মতো হা করে তাকিয়ে আছে ইলমাজের দিকে।।

চুজ এ ড্রেস,,মায়াকে বললো ইলমাজ।

কিন্তু স্যার,কেন?(মায়া)

কি বলছি?এক কথা বার বার রিপিট করতে হয় কেনো?ধমক দিয়ে বললো ইলমাজ।

এমতাবস্থায় মায়ার জন্য অসম্ভব ছিলো ড্রেস চুজ করা,মায়া কেবল হাবলুর মতো হা করে তাকিয়ে আছে।।

মায়াকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ইলমাজ নিজেই মায়ার জন্য ড্রেস চুজ করতে লাগলো।।

টার্কিশ কালারের একটা বল গাউন প্যাকিংয়ের জন্য দিয়ে জুয়েলারির ডিপার্টমেন্টের দিকে মায়াকে টেনে নিয়ে গেলো ইলমাজ।

একটা সিম্পল নেকলেস চুজ করে তাও প্যাকিংয়ের জন্য এগিয়ে দিলো ইলমাজ।।মায়া শুধু বোকার মতো তাকিয়ে আছে আতংকে তার গলা দিয়ে কোন শব্দ বের হচ্ছে না।।

শপিং ব্যাগ গুলো হাতে নিয়ে মায়াকে টেনে গাড়িতে নিয়ে বসালো ইলমাজ।।শপিং ব্যাগ গুলো গাড়ির পিছনের সীটে রেখে ড্রাইভ করতে শুরু করলো।।

মায়া কিছু বলতে যাবে এমতাবস্থায় ইলমাজ মায়ার দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে তাকাতেই মায়া চুপচাপ ইলমাজের দিকে তাকিয়ে থাকলো।

একটা শব্দ ও যেনো বের না হয় মুখ থেকে।।হুমকির স্বরে বললো ইলমাজ।
মায়া নাক ফুলিয়ে আড়চোখে তাকাচ্ছে ইলমাজের দিকে।

হোটেলে গিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো মায়া।।মায়ার রুমে গিয়ে ইলমাজ শপিং ব্যাগ গুলো বিছানার দিকে ছুড়ে মেরে বলতে লাগলো,,

,,,,,রাত ৮ টার মধ্যে যেনো রেডি দেখি তোমাকে।।

মায়াকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো ইলমাজ।।
মায়া হা করে ইলমাজের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।

যাই হোক ইলমাজের মুখের উপর কথা বলার সাহস নেই মায়ার,না আছে ইলমাজ এর কথা না শোনার।সন্ধ্যা হতেই মায়া রেডি হতে শুরু করে দিলো।।৮ টা না বাজার আগেই মায়া তৈরী।মায়া অতিরিক্ত ফর্সা হওয়ার কারনে মেকাপ ও তেমনটা করে না।।তাই সব ঠিকঠাক করে নিজেকে পরিপাটি করে নিলো সে।।
লাইট রেড লিপ্সটিক,হাল্কা কাজলে যেনো আরো সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে মায়ার মায়াবী চেহারায়।
ম্যাসি বেনি করে একপাশ ছেড়ে দিয়েছে চুলগুলো।। (এতো ধাপ্পাবাজি করতে জানি না আমি😑😑)

মায়া বিছানায় বসে অপেক্ষা করছে ইলমাজের। ৮ টা বাজতেই ইলমাজ কল করে মায়াকে রুমের বাহিরে আসতে বললো। মায়া তড়িঘড়ি নিজেকে একবার আয়নায় দেখে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।।
ইলমাজ রুমের বাহিরের ক্যারিডোরে দাঁড়িয়ে আছে,মায়া পিছন থেকে ডাক দিলো,,

,,,স্যার।

ইলমাজ মায়ার দিকে একবার তাকিয়েই চোখ ফিরিয়ে নিয়ে সোজা হাটতে শুরু করলো।।
ইলমাজ এ্যাশ শার্ট এর সাথে হোয়াইট কোট হাত ফোল্ড করে পড়েছে।।ব্ল্যাক গাবাডিং প্যান্ট ও বটে,😑।

মায়া ইলমাজের দিকে তাকিয়ে আছে,।

এই লোক টা এতো লম্বা কেন?একটা মাঝারি ইলেকট্রিক খাম্বা বলা যায়।।জীমওয়ালা বডি বানিয়ে একবারে ঢং দেখাচ্ছে হুহ।।তবে পার্ট দেখানোরই কথা,,he is soo hot, handsome and attractive 😍.মনে মনে বলছে মায়া

কিছুদুর গিয়ে ইলমাজ থামলো।। আর বলতে লাগলো,,

,,,আমার দিকে তাকানো শেষ হলে এবার আপনি আমার সাথেই আসতে পারেন মিস মায়া আজহারি। 😒(ইলমাজ)

মায়া জ্বিব্বাহ তে কামড় দিয়ে গাউন দুহাতে ধরে দৌড়াতে শুরু করলো।

গাড়িতে ইলমাজ বার বার মায়ার দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছিলো।পার্টিতে সবাই যে যার মতো হাসছে,নাচছে,ড্রিংকস্ করছে আর তা দেখেই মায়ার মধ্যে সংকোচবোধ কাজ করছে।পার্টির মহিলা গুলো এক একটা সেই লেভের ঢংগি আর তাদের লাইফস্টাইল আর ড্রেসাপ দেখে মায়া চোখ উল্টে হাঁপিয়ে উঠছে।।

ইলমাজ সবার সাথে মায়াকে পরিচয় করিয়ে দিতে নিয়ে গেলে মায়া ইলমাজের হাত ধরে থামালো।।

স্যার,,আমার অদ্ভুত লাগছে,এই পরিবেশ আমার জন্য না,আমার মোটেও স্বাভাবিক লাগছে না।স্যার প্লিজ আমাকে এখান থেকে যেতে দিন।একজন কাজের আর ছোট লোক কখনো এমন পার্টি উপভোগ করার যোগ্যতা রাখে না।।(মায়া)

মায়ার কথা শুনে ইলমাজ দাঁত কড়মড়ালো, রাগ নিয়ন্ত্রণ করে মায়ার হাত ধরে তার গ্রুপ পার্টনাররা যেদিকে আছে ওইদিকটাই নিয়ে গেলো তাকে।

সাবাই ইলমাজের সাথে খুব সম্মানের সাথে কথা বলছে৷ ইলমাজ মায়াকে সবার সামনে এনে দাঁড় করালো।

meet with my Friend,,Miss Maya Azhaari..মুচকি হেসে সবার সাথে মায়াকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে ইলমাজ।।

bt u said that she is ur maid?(তাদের মধ্যে একজন বলে উঠলো)

i was kidding..(ইলমাজ)

মায়া অবাক এর উপর অবাক হচ্ছে ইলমাজের এমন চেঞ্জিং কথাবার্তায়।
মায়া ও না পারতে হাই হ্যালো করছে আর চাপা হেসে কথা বলছে সবার সাথে।

u are like a heart of Beauty😊গ্রুপের একজন মায়াকে উদ্দেশ্য করে বললো।। মায়া চাপা হাসছে আর ইলমাজ রাগে ফুসছে।জলদি ইনট্রোডিউস করানো শেষ করে মায়াকে সেখান থেকে সরিয়ে আনলো ইলমাজ।।

এভাবে মিথ্যে না বললেও পারতেন স্যার,(মায়া)

মানে কি?(ইলমাজ)

মানে আমি আপনার ফ্রেন্ড এটা বলার কোন মানে ছিলো না।(মায়া)

আমি কি বলবো না বলবো সেটা সম্পুর্ন আমার উপর ভিক্তি করে,।।রাগান্বিত চোখে মায়ার দিকে তাকিয়ে বললো ইলমাজ।

ইলমাজের কথার কোন রিয়্যাক্ট করলো না মায়া।কারন এটা ইলমাজের স্বভাব।
ইলমাজ ড্রিংক করছে আর মায়া মুখ ভেটকে তাকিয়ে আছে ইলমাজের দিকে।।।
মায়াকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইলমাজ বললো

,,,,,,,,মুখটা কে এমন পেচার মতো বানিয়ে কি দেখছো?(ইলমাজ)

আপনি ড্রিংক করেন?😖(মায়া)

হ্যাঁ,তবে সবসময় না এমন অকেশানে,যখন খুব টেনশনে থাকি তখন করি।(ইলমাজ)

টেনশনে খেলে কি লাভ হয়?(মায়া)

মাইন্ড রিফ্রেশ হয়ে যায়।ইলমাজ মুচকি হেসে জবাব দিলো।

ওহ,চাপা হাসলো মায়া।

একজন মহিলা হঠাৎ ইলমাজের সামনে এসে দাঁড়াতেই চমকে উঠলো মায়া।।
মহিলাকে দেখা মাত্র ইলমাজ লম্বা একটা হাগ দিলো।।

হেই ইয়ানা,Whats up? (ইলমাজ)

yeah baby i m great... who is this beauty?(ইয়ানা)

thats my employ Maya Azhaari..(ইলমাজ)

ওহ,,,by the way,i m Iyaana,Elmaaz's best friend.. মায়ার দিকে হাত বাড়িয়ে বললো ইয়ানা।
মায়াও হাত বাড়িয়ে হ্যান্ড শেক করে মুচকি হাসলো।।

হেই বেবি লেটস্ হ্যাভ ফান,,come on..ইলমাজকে টেনে নিয়ে গেলো ইয়ানা।।যাওয়ার সময় ইলমাজ মায়ার দিকে তাকিয়ে ছিলো।।

Our business celebrity will sing a song...coz he is also a great singer.(ইয়ানা)

ইলমাজ মায়ার দিকে তাকিয়ে গান করা শুরু করলো।।

Tere samne aa jane se,
Dil mera dharka hai,
Yeh galti nahi hai teri,
Kosoor nazar ka hai,
Jiss baat ka tuzhko daar hai
Woh karke dikha dunga,
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

Aise na mujhe tum dekho
seene se laga lunga,
Tumko mein chura lunga tumse
Dil me chupa lunga..

ইলমাজ গিটার বাজাতে বাজাতে মায়ার সামনে এসে দাঁড়ালো।।মায়ার দিকে তাকিয়ে আবার গাইতে শুরু করলো।।

tumse pehle,tum saa koi
Humne nehi dekha,
Tumhe dekhte heee,mar jayenge
Humne nehi socha..

*******
পিছন থেকে ইয়ানা এসে সেও গাইতে শুরু করলো।।

baho me teri meri
yeh raat theher jaaye,
Tujhpe hee kahi pe meri
Subha bhi guzaar jaaye ইয়ানা ইলমাজের গলা জড়িয়ে ব্রেক ড্যান্স দিচ্ছে,
মায়ার দিকে তাকিয়ে ইলমাজ আবার গাইতে শুরু করলো,

jiss baat ka tujhko daar hai
Woh karke dikha dunga,,
Aise na mujhe tum dekho
Seene se laga lunga
Tumko mei chura lunga tumse
Dil me chupa lunga..

লাইন গুলোতে ইলমাজ যেনো মায়াকেই অনুভব করছে,।।ইয়ানাকে ইলমাজের গলা জড়িয়ে নাচতে দেখে মায়া বারের ওদিকটায় গিয়ে পর পর গ্লাসে ড্রিংকস্ করেই যাচ্ছে।
ড্রিংকস্ করতে করতে একটা সময় মায়া মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।ইয়ানাকে কে ছেড়ে দ্রুত গতিতে মায়ার দিকে দৌড়ে আসলো ইলমাজ।।
-----------------------------
ইলমাজ দৌড়ে মেঝেতে পড়ে থাকা মায়ার পাশে গিয়ে বসলো, খুবই অস্থিরতা কাজ করছে ইলমাজের মাঝে।।পার্টির সব লোকজন একসাথে জড় হয়েছে।।

মায়া,,,open ur eyes damn it...ইলমাজের পুরো শরীর থেকে ধরধর ঘাম ছুটছে, মায়ার গালে হাল্কা বারি দিচ্ছে।এরপরও মায়া জাগ্রত হচ্ছে না।।ইলমাজ ভীষণ চিন্তিত আর অতংকে আছে কেন এমনটা হয়েছে যদিও মায়া ড্রিংকস করেছে তার দিকে মোটেও ভ্রুক্ষেপ ছিলো না ইলমাজের৷

উনার ড্রিংক্স এর পরিমান বেশি হওয়ার কারনে হয়তো নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারেন নি তিনি।একজন ওয়েইটার এসে ইলমাজকে বললো।
এই কথা শুনে এবার ইলাজের মাথায় রক্ত উঠার উপক্রম।। কোন কথা না বলে মায়াকে এলোপাথারে কোলে নিয়ে সোজা হল থেকে বেরিয়ে গেলো সে।।

হোটেলে পৌছে মায়ার রুমে নিয়ে মায়াকে তার বিছানায় শুইয়ে দিয়ে,তার পা থেকে জুতা খুলে নিলো,গলা থেকে নেকলেস খোলার সময় ইলমাজের চোখ ওদিকটায় আটকে যায়।
থুতনির ঠিক ৩ ইঞ্চি নিচে একটা গাড়ো তিল খুবই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে,ইলমাজ একনাগার, এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে ওই তিলটির দিকে।।যেনো এক মাদকতার নেশা ইলমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কে ভাষিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।।নেশার প্রলেপ লেগেছে ইলমাজের এই মাতলামোযুক্ত চাহনিতে।।ইলমাজ আস্তে আস্তে মায়ার গলার দিকে মাথা নিয়ে যেই মায়ার তিল যেদিকে আছে সেদিকে নিজের ঠোঁট ছোয়াবে!!!হঠাৎ আতকে উঠে মায়া থেকে খানিকটা দূরে সরে দাঁড়ালো।।

what the hell is happening to me???have i lost my dignity??how could i have been so indecent?? নিজেই নিজেকে৷ বলছে ইলমাজ।

মায়ার দিকে এগিয়ে মায়ার শরীরে চাদর টেনে দিলো সে।।বেশ কিছুক্ষন তাকিয়ে ছিলো মায়ার ঘুমন্ত চেহারার দিকে।।

এই টার্কিশ রঙের ড্রেস এজন্যই চুজ করে দিয়েছিলাম কারন এই রঙটা আমার একদম অপছন্দের যাতে তোমার দিকে আমার নজর না যেতে পারে,এই রঙের সাথে যেনো তোমাকেও ঘৃনা করতে পারি!!কিন্তু যখন ই তুমি এই ড্রেসে নিজেকে আমার সামনে স্থাপন করলে তখন আমারও ইচ্ছে করছিলো এই রঙে রাঙিয়ে যেতে। কেন এই রঙটা আমায় এতো টানছে?নতুন করে অনুভূতির জন্ম দিচ্ছে?কেনই বা এই রঙ তোমার এতটা গহীনে মিশে গেছে?নিজের উপর অনেক রাগ হচ্ছে সব কিছু আমার পেসিয়েন্সকে ওভারক্রস করছে।।ভেবেছি এই রঙ আমাকে তোমার থেকে দূরে সরিয়ে দিবে কিন্তু তোমার পরিহিত ছায়া আমাকে এই রঙের প্রেমে পড়তে বাধ্য করেছে।কিন্তু কেন???মায়ার দিকে তাকিয়েই সব কথা বললো ইলমাজ।।মায়া জেগে থাকলে হয়তো কখনোই এমন কিছু প্রকাশ করতে পারতো না সে।।
মায়ার মাথায় হাত বুলিয়ে রুম ত্যাগ করলো ইলমাজ।। রুমের বাহিরে ক্যারিডোরে ইয়ানাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে চমকে গেলো ইলমাজ।

ইয়ানা তুমি এখানে?কখন এসেছো?অবাক চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো ইলমাজ।

আরেহ,আমি তো বেশ কিছুক্ষণ হচ্ছে এসেছি।।আর কিভাবে এসেছি তা না জিজ্ঞেস করলেও চলবে কারন আমি জানি যখনই তুমি সিলেট আসো তখনই এই হোটেলে বুকিং করাও।।আর রুম নাম্বার রিসিপশনিষ্টের কাছ থেকে জেনেছি।।(ইয়ানা)

ইলমাজ ইয়ানার দিকে ভ্রু কুচকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে দুজনেই হো হো করে হেসে উঠলো।

বক বক করার অভ্যাস এখনো যায় নি তোমার?😂(ইলমাজ)

It's by born baby...এক চোখ টিপ মেরে বললো ইয়ানা।।

তো কিভাবে আসা হলো এখানে?(ইলমাজ)

আসলে তোমার এম্পলয়ের কি অবস্থা জানতে এসেছি!!এখন কেমন আছে সে?চিন্তিত হয়ে বললো ইয়ানা।

তেমন সাংঘাতিক কিছু হয় নি।।ড্রিংক্স বেশি করার কারনে ওভার এ্যাফেক্ট করেছে।।(ইলমাজ

ওহ আচ্ছা আমি ভেবেছি অসুস্থ হয়ে গেছে তাই এসেছিলাম,ড্রিংক্স এর কারনে এমনটা হয়েছে জানলে আসতাম না।তবে মেয়েটা অসম্ভব সুন্দরী ছিলো, এই প্রথম কারো সৌন্দর্য দেখে হিংসে হয়েছে।।(ইয়ানা)
বলা মাত্রই আবার দুজন একসাথে হেসে উঠলো।

আচ্ছা এসেছো যেহেতু চলো ডিনারটা একসাথে করে আসি।।(ইলমাজ)

অবশ্যই, কিন্তু এই মেয়ে কে একা ফেলে ডিনার করা কি উচিত হবে?(ইয়ানা)

ও তো বেহুশের মতো ঘুমাচ্ছে,এখন জাগাতে গেলে আবার কি কান্ড না করে বসে!!এর চেয়ে ভালো শান্তিতে ঘুমাক।।উঠলে কিছু একটা ব্যাবস্থা তো করা যাবে।(ইলমাজ)

আচ্ছা।।(ইয়ানা)

দুজন একসাথে হোটেলের গ্রাউন্ড ফ্লোরের রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসলো।।

আচ্ছা ভালো কথা!!তুমি তো টার্কিশ কালারের কোন কিছুই লাইক করো না,তবে তোমার এ্যাম্পলয় যে ওই রঙের ড্রেস পড়লো কিছু বললে না যে?অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো ইয়ানা।

আমি লাইক করি না সেটা আমার সমস্যা, তার মানে এটা তো না যে আমার কারনে অন্যজনের জন্য কোন নিষেধাজ্ঞা থাকবে।।সে পড়েছে সেটা তার ব্যাপার।আমি তো আর কারও ব্যাক্তিগত ব্যাপারে নাক গলাতে পারি না তাই না?,সেই রাইট আমার নেই।।।খুব শান্ত স্বরে জবাব দিলো ইলমাজ।

হুম বুঝেছি,যাই হোক মেয়েটা আসলেই অসাধারণ সুন্দর,, টার্কিশ কালারের মতো ফ্যাকাশে রঙ টা ও যেনো তার শরীরে ফুটে উঠেছে।।মুচকি হেসে বললো ইয়ানা।।

ইলমাজ হাল্কা গলা ঝেড়ে একটু নড়েচড়ে বসলো।

খাবার এসে গেছে,ন্যাকামি বাদ দিয়ে খাওয়া শুরু করো।কড়া কন্ঠে বললো ইলমাজ।

খাওয়া শেষে ইয়ানা নিজের বাড়ি চলে গেলো।। ইলমাজ মায়ার রুমে গিয়ে একনজর মায়াকে দেখে নিজের রুমে গিয়ে শার্ট,কোট খুলে,ওয়াশ্রুমে শাওয়ার অন করে তার নিচে দাঁড়ালো।।
সে চোখ বন্ধ করে ভাবছে যখন মায়া রুম থেকে বেরিয়ে তার সামনে এসে দাঁড়ালো।যদিও ইলমাজের ইচ্ছে করছিলো তার দিকে নাগাত তাকিয়ে থাকতে,বাট ইগোর কারনে তাকাতে পারে নি।।কিন্তু আড়চোখে বার বার তাকাচ্ছিলো ইলমাজ মায়ার দিকে।গানটাও সে মায়াকেই ডেডিকেট করে গেয়েছিলো।কিন্তু তার বিন্দু পরিমানও অনুভব করতে দেয় নি সে মায়াকে।।

মায়া যখন মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলো তখন তো ইলমাজের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলো।। মায়ার মাটিতে লুটিয়ে পড়ার কথা ভাবতেই চোখ মেললো ইলমাজ।।
মায়ার কথা মনে করতেই তাওয়াল দিয়ে দ্রুত গা মুছে প্যান্ট চেঞ্জ করে উদম গায়ে দৌড়ে মায়ার রুমের দিকে এগুলো সে।।।

.....
.........(চলবে )...........



Post a Comment

0 Comments