একমুঠো নীল জোসনা

Ads Inside Post

একমুঠো নীল জোসনা


গত পর্বের লিংকঃ একমুঠো নীল জোসনা

পর্ব-৮

ইলমাজ মায়ার রুমে পৌছাতেই দেখলো মায়া একটা পানির গ্লাস হাতে নিয়ে সেটাকে উপরের দিকে তুলে খুটিয়ে খুটিয়ে অধির আগ্রহে দেখছে।।

ইলমাজ মায়ার দিকে আকষ্মিক দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে,😳আসলেই হচ্ছে টা কি?মায়া কি নরমাল আছে নাকি এখানো তার মাঝে মাতলামো কাজ করছে?ভাবছে ইলামাজ।।

ইলামাজকে রুমের ভিতরে আসতে দেখেই মায়া উঠে দাঁড়ালো আর বলতে লাগলো,,,,

এই এই,,হুসসসসসসসসস,আস্তে আসো,নাহলে এই ক্রোকোডাইল টা আমাদের সবাই কে খেয়ে ফেলবে।।মায়া চাপা আর ভয়ার্ত কন্ঠে বললো।

ইলমাজ ব্যাপক চিন্তিত সে ভেবে দিশা পাচ্ছে না আসলেই হচ্ছে টা কি।।
ইলমাজ মায়াকে শান্ত করার জন্য একপা একপা মায়ার দিকে এগুচ্ছে।।

এই এই কি করছো?বললাম না এই ক্রোকোডাইল আমাদের খেয়ে ফেলবে।।ইলমাজকে ভিতরে আসতে দেখে মায়া দুলছে আর কথাগুলো বলছে।।

আরেহ কোথায় ক্রোকোডাইল?(ইলমাজ)

ওই যে এই খালের পানিতে।।গ্লাস টা ইলমাজের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো 😑(মায়া)

তুমি আবার খাল কোথায় দেখছো আজিব😳?মায়ার এমন কথাবার্তায় বেকুব বনে যাচ্ছে ইলমাজ।।

হুসসসসসসস,নো কথা!!আমি ওকে মারবো ততক্ষন তুমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকো।।কোন কথা বলবে না।(মায়া)

ইলমাজ ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে মায়ার দিকে,মায়া দুলে দুলে গ্লাসটা কে এদিক থেকে ওদিক নেয়া করছে।।

ইলমাজ আর কথা না বাড়িয়ে মায়ার হাত থেকে গ্লাসটা কেড়ে নিতেই চিৎকার করতে করতে শুর করলো মায়া।

noooooooooo!!! ,,,,what did u do???আমি খাল কেটে কুমির তাড়াচ্ছিলাম আর তুমি এটা কি করলে??? তুমি আমায় খাল ই কাটতে দিলে না।ন্যাকা কান্না করছে মায়া।

আল্লাহহহহহহ!!এই মেয়ে কে এভাবেই জাগ্রত রাখলে আমাকেই নিদ্রাহীনতায় ভুগতে হবে।ইলমাজ কপালে এক হাত দিয়ে মুখ বানিয়ে তাকিয়ে আছে মায়ার দিকে।

হেই,ইউ একটা গান শুনবে?মায়ার কথা বেঝে বেঝে আসছে,এমন নেশা লেগেছে তার মুখ থেকে আওয়াজ বের হতে পর্যন্ত তোতলাচ্ছে।।

শুনো মায়া,,এদিকে এসে ঘুমাও u need rest!!শান্ত স্বরে বললো ইলমাজ।

noooo,আগে গান শুনবে কিনা বলো?(মায়া)

আচ্ছা তারপার কিন্তু তোমাকে ঘুমাতে হবে!ওকে???(শর্তের স্বরে বললো ইলমাজ)

ওক,,,ওক,,,ওকে।।।😜তাহলে শুনো।।

why this kolaveri,kolaveri,kolaveri diiiiiii,,মায়া চাপিয়ে,তোতলিয়ে গান গাইছে আর হাত নেড়ে নেড়ে গা দুলাচ্ছে।।

আর ইলমাজ আতংকিত প্রায়😳।।

হেই,,do u know?why this kolaveri??মায়া গাধার মতো ইলমাজের কাছে প্রশ্ন জুড়ে দিলো,।

মায়া,দেখো ঘুমাও প্লিজ।।(ইলমাজ)

নায়ায়ায়া,আগে বলো why this kolaveri?মায়া হাত নেড়ে নেড়ে জিজ্ঞেস করলো।

আহ,,,জানি না আমি।।😩(ইলমাজ)

এদিকে আসো আমি বলি,,,,দুষ্টু মাখা চেহারাতে হাতের ইশারায় ইলমাজকে তার দিকে কান পাত্তে বললো মায়া।।

ইলমাজ নিঃশ্বাস ছেড়ে মায়ার মুখের সামনে মাথা পেতে দিয়ে দাঁড়ালো।

Don't u really know why this kolaveri??ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলো মায়া।।

ইলমাজ মায়ার দিকে একপলক তাকিয়ে না সূচক মাথা ঝাকালো।।

আচ্ছা,, আমি বলি,,bcoz kolaveri is a Diiiiiiiii....চেচিয়ে অট্টহাসিতে লুটিয়ে পড়লো মায়া।।
ইলমাজ কানের ভিতর আঙ্গুল দিয়ে জোরে জোরে স্লাইড করতে লাগলো। ।।

এই মেয়ে তো কান ফাটিয়েই দিয়েছে,,আর নাজানি কতো টর্চার চালাবে আমার উপর।।আল্লাহহহহহ।।।😣(ইলমাজ)

আরেকটা গান শুনবে,?? বাচ্চাদের মতো ফেস বানিয়ে প্রশ্ন করে বসলো মায়া।

না,আমি আর কোন গান শুনবো না,তুমি এক্ষুনি ঘুমাবে মায়া।একটু উচ্চস্বরে বললো ইলামাজ।।

ওহহহহহ,,,তুমি রাগ ও করো😲,আল্লাহ তুমি তো আমার হিরো বুরাক ড্যানিজ তাই না,,আহহহহ তুমি আমার জন্য এসেছো এখানে।।আমি কত্তো লাক্কি।।ইপিইইইইইইইইইই,,বলেই বাচ্চাদের মতো লাফাতে শুরু করলো মায়া।।

হ্যাঁ তোমার হিরো বুরাক তোমাকে এবার ঘুমাতে আদেশ করছে।।এক্ষুনি লক্ষি মেয়ের মতো ঘুমিয়ে পড়ো মায়া।🙏(ইলামাজ)

তাই,তুমি ঘুম পাড়িয়ে দিবে আমাকে??বাচ্চাদের মতো আদুরে ফেস বানিয়ে জিজ্ঞেস করলো মায়া।।

মায়ার এমন প্রস্তাবে ইলমাজ বেশ অবাকাতর চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে।।

কিন্তু আমি কিভাবে?😧আমতা আমতা করে বললো মায়া।

তুমি কি রোজ আমার কাছে আসো নাকি?আজকে যেহেতু এসেছো আমাকে ঘুম পাড়িয়ে যেতে হবে।।বায়না ধরলো মায়া।।

ইলমাজ কি বলবে ভেবে কুল পাচ্ছে না।।সে এমন অবস্থায় পড়েছে না কিছু বলতে পারছে না সইতে পারছে,যতই সে মায়া থেকে দূরে থাকতে চাই ততই ভাগ্য তাকে তার কাছে ঠেলে দেয়।।এখন মায়ার কথায় বাধ্য সে,এ ছাড়া আর কোন উপায় নেই ও বটে।।

বেশ কিছুক্ষন চিন্তা করে ইলমাজ সংকোচজনিত স্বরে বললো,,

ঠিক আছে,কিন্তু তোমাকে মুহুর্তের মধ্যে ঘুমিয়ে যেতে হবে?(ইলমাজ)

ওকে,আগে একটা কথা শুনো?(মায়া)

আবার কি?বিরক্তির সাথে জিজ্ঞেস করলো ইলামাজ।

আগে শুনো!এদিকে এসো??ভ্রু কুচকে চোখ বন্ধ করে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে এক হাতে ইলমাজকে তার কাছে আসতে বললো মায়া।

ইলমাজ নাক ফুলিয়ে আবারও মায়ার মুখের কাছে তার মাথা নিয়ে গেলো।।মায়া তার ঠোঁট ইলমাজের কানের কাছে নিয়ে ফিস ফিস করে বলতে লাগলো,,

আমার বস আছে না?এক আঙ্গুল দিয়ে রুমের বাহিরে ইশারা করলো সে।।

ইলমাজ আড়চোখে মায়ার দিকে তাকালো।।😒

আমার বস,,ইলমাজ রেহমান আর কি!!!বলা মাত্রই মুখে হাত দিয়ে চাপা হাসলো মায়া।

তারপর কি হয়েছে তোমার বসের?(ইলমাজ)

আমার বস একটা হনুমান।।বলেই হিহি করে হেসে উঠলো মায়া।।

ইলমাজ নাক ফুলিয়ে রাগে ফুসছে।।
মায়া আবার ইলমাজের কানের পাশে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলতে লাগলো।

তুমি কাউকে বইলো না যে আমি বসকে হনুমান ডেকেছি।।নাহলে আমাকে চাকরি থেকে বের করে দিবে ওই ইবলিশের সর্দার টা।।

ইলমাজ হাত মুষ্টিবদ্ধ করে দাঁত কড়মড়িয়ে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।।

আর কিছু?(ইলমাজ)

হ্যাঁ আরেকটা সিক্রেট শুনবে?(মায়া)

হুম,শুনছি 😤(ইলমাজ)

আমার বস আছে না??উনাকে একদম বুরাক ড্যানিজের মতো মানে তোমার মতো হট হট লাগে আমার।।বলে মাত্র বাচ্ছাদের মতো খিলখিল হাসিতে ইলমাজের গায়ে ঢলে পড়লো সে।।

আর না পেরে ইলমাজ ও মুচকি হেসে মায়াকে এলোপাথারে কোলে তুলে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে উঠে যেতেই মায়া ইলমাজের হাত ধরে থামালো তাকে।ইলমাজ অবাক চোখে তাকালো মায়ার দিকে।

তুমি না বলেছিলে আমাকে ঘুম পাড়িয়ে যাবে?ঘুম ঘুম আর কান্নাজড়িত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো মায়া।
মায়ার এমন কথায় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বিছানার একপাশে এসে বসলো ইলমাজ।।

ইলমাজ বসতেই মায়া ইলমাজের একপায়ের হাঠুতে মাথা রাখলো।।ইলমাজ পর পর ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েই চলেছে।
ইলমাজ আনইজি ফিল করে একটু নড়ে বসলো।বেশ অদ্ভুত অনুভূতির জন্ম নিচ্ছে ইলমাজের মনে।।আগে কখনো এমনটা লাগে নি তার।।যখনই ময়া তার কাছে আসে,সব কিছু ওলট পালট লাগে ইলমাজের।।মায়া ঘুমিয়ে পড়েছে,মায়ার দিকে নাগাত তাকিয়ে থাকার পর নিজের অজান্তেই ইলমাজের হাত মায়ার মাথায় এসে থামলো তারপর মাথায় হাত বুলাতে শুরু করলো সে।

হাত বুলাতে বুলাতে মুচকি হেসে মায়ার দিকে নাগাত তাকিয়ে থাকলো সে।।আর এভাবেই সারারাত মায়ার ঘুমন্ত চেহারাটাকে পাহারা দিয়েছে ইলমাজ
-------------------
সকালে খুব ভোরে ঘুম ভাঙ্গলো মায়ার,,পাশে তাকাতেই ৮৮০ ভোল্ট এর ঝটকা খেয়ে কাঁত হয়ে গেছে সে।।কারন মেঝেতে বিছানায় মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে আছে ইলমাজ।।😨
এই দৃশ্য দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না মায়া ব্যাঙ্গের মতো একলাফে উঠে বিছানা থেকে নেমে ইলমাজকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে শুরু করলো সে।ইলমাজের এভাবে ঘুমিয়ে থাকার মানে এখনো খুজে পাচ্ছে না সে।।

ঘুমের মধ্যে এতটা খারাপ লাগে না লোক টি কে।কত্তো কিউট রে বাবা,,আপনি যদি সারাজীবন এভাবেই ঘুমিয়ে থাকতেন,,তাহলে আমি শান্তিতে বাঁচতে পারতাম।।ইলমাজের মুখের কাছে নিজের মুখ কিছুটা নিয়ে বলছে মায়া।

ইলমাজ হঠাৎ চোখ খুলতেই মায়ার মুখের সাথে স্বজোরে ধাক্কা লেগে চেচিয়ে উঠলো দুজনই।।

what the hell are u doing stupid??😠রাগান্বিত স্বরে বললো ইলমাজ।

আহহহ,,,সরি স্যার,আমি জানতাম না আপনি এভাবে জেগে যাবেন।মুখ হা করে বললো মায়া।

মানে???সুযোগের ফায়েদা উঠাচ্ছিলে??ছিঃ তোমার কাছ থেকে আমি এতো জঘন্য কিছু আশা করি নি মিস মায়া।।ভ্রু কুচকে মুখ বেকে বললো ইলমাজ।

মায়া ঝটকার উপর ঝটকা খাচ্ছে,,😱,মুখ হা করে চোখ উল্টে দিয়েছে সে।

ছিঃ৷ স্যার আমি এতটা জঘন্য না,এই প্রশ্ন তো আমার আপনাকে করা উচিত, আ,,আপনি সারারাত আমার রুমে ছিলেন।।আর আমি না জানি কেমন অবস্থায় ছিলাম।😥আমতা আমতা করে বললো মায়া।

ওহ রিয়্যালি,!!বসা থেকে উঠে দাড়ালো ইলমাজ,,

সিরিয়াসলি,একটা মানুষ কতটা অকৃতজ্ঞ হতে পারে সেটা তোমাকে না দেখলে কখনোই বুঝতে পারতাম না 😒।।(ইলমাজ)

মানে,কি স্যার?ঘাবড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো মায়া।।

মানে আপনি গত রাতে মদ খেয়ে পাগলামি করছিলেন আর আপনার পাগলামির স্বীকার হতে হয়েছে আমাকে।।(ইলামাজ)

ক,,কি করেছি স্যার?(মায়া)

শোনার ক্ষমতা রাখেন তো?ইলমাজ মায়ার দিকে এগুচ্ছে আর মায়া সেই আবারো এক পা এক পা পিছিয়ে যাচ্ছে।।ইলমাজ মায়ার সামনে এসে দাঁড়াতেই মায়া ইলমাজকে ধাক্কা দিয়ে ওয়াশ্রুমে ঢুকে পড়লো আর সেখান থেকেই বলতে লাগলো,,

আমি কিছু করি নি,আর আমার কিছু শোনার ও দরকার নাই স্যার।।(মায়া)

ইলমাজ নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করে রুম ত্যাগ করলো।। মায়া ফ্রেশ হয়ে এসে দেখছে তার ফোন বাজছে।।ইলমাজের নাম ফোনের স্ক্রিনে দেখেই গা কাঁপলো মায়ার।
ঢোক গিলতে গিলতে ফোন রিসিভ করলো।।

হ্যা,হ্যালো জ্বী স্যার??(মায়া)

১০ টার দিকে এয়ারপোর্টে রওয়ানা দিব সো বি রেডি টু গো ব্যাক।।ফোনের ওপাশ থেকে ইলমাজ।

মায়াকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে লাইন কেটে দিলো ইলমাজ।।এখনো অলরেডি ৮:৩০ বাজে,লেট হলে আবারও ওইদিন এর মতো সবার সামনে বেইজ্জত করবে।।ব্যাস রেডি হয়ে আধা ঘন্টা আগ থেকে বসে আছে মায়া।।

গাড়িতে ওঠার সময় ড্রাইভিং সীটের পাশে কোন এক মহিলার পিছন দিক দেখে ভ্রু কুচকালো মায়া।।ইলমাজ আগে থেকেই ড্রাইভিং সীটে বসা ছিলো,, লুকিং গ্লাসে মায়াকে এভাবে তাকাতে দেখে ইলমাজ বলতে লাগলো,,

আমাদের এভাবে দর্শন করা বন্ধ হলে এবার আপনি গাড়িতে উঠতে পারেন মিস মায়া আজহারী।।😒

ইলমাজের কথায় হুশ ফিরলো মায়ার,,আর আতংকিত হয়ে বলতে লাগলো,,

জ,,জ্বী স্যার,😨।।মায়া পিছনের সীটে গিয়ে বসলো আর আড়চোখে বার বার সামনের দিকে তাকাচ্ছে।।মায়ার খেয়াল পড়লো এই মেয়ে সে যে ইলমাজের গলা জড়িয়ে নাচতেছিলো।।😵

এখন কেমন আছেন মিস কুইন??ইয়ানা মায়াকে উদ্দেশ্য করে বললো।।

মায়া গাড়ির এপাশ ওপাশ কাউকে খুজছে,,।

আপনাকে বলছি মিস মায়া।।(ইয়ানা)

আমাকে?বেকুবের মতো প্রশ্ন করে বসলো মায়া।।

জ্বী আপনাকেই বলেছি,মহিলাদের মধ্যে আমি আর আপনি ব্যাতিত তো আর অন্য কেউ নেই এখানে তাই না?খুবি ভদ্রতার সহিত বললো ইয়ানা।।

না,মানে মিস কুইন বলাতে একটু অবাক হয়েছিলাম তাই,চাপা হেসে জবাব দিলো মায়া।

আচ্ছা!আমি ইয়ানা,ইলমাজের বেস্ট ফ্রেন্ড,,(ইয়ানা)

ওহ!😅আ,,আমি মায়া,ইলমাজের বলা মাত্রই মুখে হাত দিয়ে জিব্বাহ্ কামড়ে ধরলো।ইলমাজ মায়ার দিকে আড়চোখে তাকালো।।,

না মানে আমি ইলমাজ স্যারের এম্পলয়।।(মায়া)

এখন কেমন আছেন আপনি?(ইয়ানা)

কেন আমি তো সবসময় ভালো থাকি।।এখনো ভালোই আছি।।😊(মায়া)

জ্বী,, কাল রাতে আপনার ঘারে চার বোতাল ভোডকার নেশা চড়েছিলো তো তাই জিজ্ঞেস করছি।।বলেই হো হো করে হেসে উঠলো ইয়ানা।

মানে,কি করেছিলাম কাল রাতে?ভয়ার্ত কন্ঠে জিজ্ঞাসা করলো মায়া।।

মাত্রাতিরিক্ত ড্রিংক্স করে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন,ভাগ্যিস ইলমাজ ছিলো নাহলে কি হতো আল্লাহ ই ভালো জানেন।।😂(ইয়ানা)

আচ্ছা,,মুখটাকে বাংলার পাঁচ বানিয়ে চাপা হাসছে মায়া।।

রাস্তায় একটা ফুসকার স্টল দেখে লাফিয়ে উঠলো ইয়ানা।।আর বলতে লাগলো।।

ইলমাজ গাড়ি থামাও,আমি ফুসকা খাবো।😀(ইয়ানা)

আজিব!!!গাড়ি থামালে ফ্লাইট মিস হয়ে যাবে আমাদের।।আর স্ট্রিট ফুড খাওয়া এখনো ছাড়ো নি তুমি।।(ইলমাজ)

আমাদের ফ্লাইট ১১:৩০ এখন মাত্র ১০ টা বাজে,আরও দেড় ঘন্টা সময় আছে,খামাকা বোর হয়ে যাবো।। মাত্র আধা ঘন্টা ই তো লাগবে,,প্লিজ্জজ্জজ্জজ।।গাড়ি একটু ব্যাক করো।।আকুতির স্বরে বললো ইয়ানা।

মায়া হাব্লুর মতো শুধু তাদের কান্ড দেখছে।।

মায়া আপনি বলেন না প্লিজ,,,(ইয়ানা)

আয়ায়ায়া,,,স্যার উনি যেহেতু এতো ইনসিস্ট করছেন গাড়ি টা একটু থামালে কি হয়।।(মায়া)

মায়ার কথা শুনে নাক ফুলিয়ে গাড়ি ব্রেক করে আবার উল্টো দিকে ব্যাক করলো ইলামাজ।।

ফুসকার স্টলের সামনে দাগাড়ি থামাতেই আনন্দের সাথে লাফিয়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলো ইয়ানা।।

মায়া আপনিও আসেন,ভাল্লাগবে।।মায়াকে উদ্দেশ্য করে বললো ইয়ানা।।

মায়া ইলমাজের দিকে একবার তাকিয়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে দুজন একসাথে ফুসকা খেতে শুরু করলো।।

ইলমাজ তুমিও আসো না প্লিজ।।বাইরে থেকে চেচিয়ে বললো ইয়ানা।
ইলমাজ ইশারা করে তাদের খেতে বললো।।

ইয়ানা আর কথা না বারিয়ে ফুসকা খেতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।।

ইলমাজ মায়ার দিকে তাকিয়ে ছিলো এতক্ষন,মায়ার কান্ড দেখছিলো,কারন মায়া যেদিকটায় থাকুক না কেন সে প্রতিটি বর্নের সাথে নিজেকে মিশিয়ে নিতে পারে।।ইলমাজ মুগ্ধ হয়ে দেখছে মায়াকে।একটা ঝগড়াটে মেয়ের ২য় রুপ এতটা মিশুক আর মাসুম হতে পারে তা হয়তো মায়াকে না দেখলে কখনোই জানতে পারতো না ইলমাজ।।

ইয়ানার ডাকে হুশ ফিরলো ইলমাজের।।নিজেকে সামলিয়ে ইয়ানার দিকে কন্সানট্রেট করার চেষ্টা করলো।

ইলমাজ আমি না ক্যাশ আনি নি,ক্রেডিট কার্ড আছে সাথে,বিল টা দিতে পারছি না,একটু বাহিরে এসে ব্যাপারটা কে সর্ট আউট করবে প্লিজ🙋(ইয়ানা)

হুম,,ইলমাজ মায়ার দিকে তাকিয়েই গাড়ি থেকে বের হলো, ফুসকার স্টলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।।

বিল কতো এসেছে ভাইয়া?ফুসকাওয়ালা কে উদ্দেশ্য করে বললো।।

২২০ টাকা ভাইজান।(ফুসকাওয়ালা)

ইলমাজ পকেটে হাত দিয়ে হঠাৎ চমকে উঠলো।।সেও ক্রেডিট কার্ড এনেছে।।

কি হয়েছে ইলমাজ এভাবে হা করে আছো কেন?(ইয়ানা)

শীট!!!আমিও মনে হয় ক্রেডিট কার্ড এনেছি।।ওয়েট,গাড়ির ডেক্সে চেক করে আসি।।(ইলমাজ)

একদৌড়ে ইলমাজ গাড়ির দিকে ছুটে গেলো।।মায়া আর ইয়ানা তাকিয়ে আছে।।ইলমাজ আবার এসে ফুসকাওয়ালার হাতে একটা হাজারের নোট গুজে দিয়ে বললো,

ভাগ্যিস এটা রেখেছিলাম।।নাহয় মান সম্মান সব যেতো😷(ইলমাজ)

ভাইজান আমি গরিব মানুষ এতটাকা ভাংতি কেমতে দিমু?(ফুসকাওয়ালা)

আচ্ছা আপনি রেখে দেন এটা।।চেঞ্জ লাগবে না।।(ইলমাজ)

কিন্তু ভাই আমি হিসেব এর বাইরে কাজ করবার পারি না।।এইটা রাইক্ষা আমারে ভাংতি দেন।।(ফুসকাওয়ালা)

আরেহ আপনি বুঝতে পারছেন না?ক্রেডিট কার্ড এনেছি,এটা ছাড়া আর কোন ক্যাশ নেই আমার কাছে।।(ইলমাজ)

ইলমাজের রাগান্বিত চেহারা দেখে ভয়ে ঢোক গিললো মায়া আর ইয়ানা।

আমার কাছে আছে,দাঁড়ান।।মাঝখান থেকে মায়া বলে উঠলো।

তাহলে এতক্ষন চুপ ছিলে কেন?😠(ইলমাজ)

মায়া কথার কোন জবাব না দিয়ে একদৌড়ে গিয়ে গাড়ি থেকে ব্যাগ আনলো।দুইহাত একসাথে মুষ্টিবদ্ধ করে ওরনায় ভারী কিছু ঢেলে,,এক এক করে গুনতে লাগলো।।

ইলমাজ আর ইয়ানা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে মায়ার দিকে।গুনা শেষ হলে হাতে নিয়েই অনেকগুলো দুটাকার পয়সা ফুসকাওয়ালার ভ্যানের দিকে এগিয়ে দিলো।।।

ইলমাজ আর ইয়ানার সাথে ফুসকাওয়ালা ও ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো।।

এইগুলা কতবসর ধইরা জমাইতাসেন আফা?😲(ফুসকাওয়ালা)

এগুলো ক্লাস টেন থেকে জমিয়ে রেখেছিলাম,প্রয়োজনে হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করার জন্যে।😎আজ কাজে লাগলো।। (মায়া)

আপনার ধৈর্যের জয় হোক মা।।হাত জোর করে বললো লোক টি।।

মায়া একটা রাজ্য জয় করার মতো হাসি হাসলো।।

যাক,আজকে আপনার ২ পয়সার ফিক্সড-ডিপজিট কাজে আসলো।।দ্যা দুই পয়সার ব্যাংক অফ মায়া আজহারী।।😒।।আসলেই,আপনার মতো এলিয়েন রা পৃথিবীতে আসে বলেই আমাদের মতো সাধারণ মানুষগুলো মঙ্গলগ্রহে জায়গা পায় না।।(ইলমাজ)

মায়া নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে ইলমাজের দিকে।।
.....
.........(চলবে )...........



Post a Comment

0 Comments