পিন কোড

Ads Inside Post

পিন কোড

golpo-ghar.blogspot.com
golpo-ghar.blogspot.com

৭ম পর্বের লিংকঃ পিন কোড

#পর্বঃ-৮

মৌ কোনো ভাবে মানতে রাজি না,,,
আমার বাবা কখনো মশা মারছে কি না তা নিয়ে আমি সন্দেহ আছি আর সেখানে কি না একটা মানুষ কে খুন? আমি মৌ এর কথা শুনে বললাম,,

- তুমি নিজের বাবা দেখে এইসব বলে যাচ্ছ। তুমি রাহির জায়গায় দাঁড়িয়ে কথাটা বলো একবার দেখি।

- তাই বলে কি আমার বাবা একজন খুনী হতে পারে?

- আমি কি কখনো তোমার বাবা কে খুনী বলেছি শুধু এইটুকু বলেছি যে তোমার বাবার ছবি সেখানে কিভাবে গেলো?

- বাবা কে জিজ্ঞেস করার পর হয়তো বুঝা যাবে!

- কখনো কোনো আসামী স্বীকার করে যে আমি আসামী?

- তার মানে আপনি কি আমার বাবা কে আসামী ভাবছেন?

- একদমই না তবে হয়তো আসামী কে খুঁজে পাওয়ার এই একটা পথ অবলম্বন করতে হবে! মানে এক কথায় তোমার বাবা কে এইসব না বলে বরংচ উনাকে ফলো করার উচিত উনি কোথায় যায় কি করে?

- আপনি যা ভালো মনে করেন  তা করেন,"তবে এইটুকু মনে রাখবেন আমার বাবার যেনো কোনো ক্ষতি না হয়।"

- সেইটা নিয়ে ভাবতো হবে না। আমি আর একটা কাজ করতে চাই যদি তোমার সম্মতি থাকে!

- অবশ্যই বলেন।

- যেহেতু আমাদের মাঝে বিয়ের কার্যক্রম শেষ তাহলে আমরা স্বামী স্ত্রী। সে হিসেবে আমার দায়িত্ব হচ্ছে তোমাকে আজ থেকে আমার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া। তবে আমি একটা পরিকল্পনা করেছি যদি তোমার সম্মতি থাকে।

- ইতস্ততবোধ না করে বলে ফেলেন নির্দ্বিধায়।

- তুমি না হয় কিছুদিন নিজের বাড়িতে থাকো আর আমি যা বলি তা একটু মনোযোগ দিয়ে শুনো তারপর না হয় তোমার সিদ্ধান্ত আমাকে জানিও। যদি তুমি বাসায় থাকো তাহলে সম্ভবত তোমার বাবা কাদের সাথে যোগাযোগ করে তা হয়তো তুমি আমাকে জানাতে পারবে।
তারপর তোমার বাবা আশেপাশে দোকানপাটে কাদের সাথে আড্ডা দেয় এইসব তথ্য তুমি বাড়ি থেকে জানাবে তাহলে সম্ভবত ওই আসামী টা কে খুঁজে বার করা আমাদের জন্য সহজ হবে।

- ঠিক আছে তবে আমার একটা শর্ত আছে!

- কি শর্ত?

- আমার বাবার ক্ষতি যেনো কেউ না করে!

- একবার তো বললাম সেইটা আমি দেখবো।

মৌ এর সাথে কথা বলে ফিরে দেখি আমাদের সামনে দাড়িয়েছে আছে মৌ এর বাবা। মনে মনে ভাবতে লাগলাম হয়তো সবকিছু শুনে ফেলেছে। এখন কি হবে?  ছয় নয় ভাবার আগে চমকে দিয়ে মৌ বলে উঠলো,,

- বাবা আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

- কি সিদ্ধান্ত মা?

- গোপন ভাবে বলবো এখানে তো আরো মানুষ আছে।

মৌ এর থেকে এমন কিছু শব্দ আশা করি নি। সে প্রতিনিয়ত আমাকে চমকে দিচ্ছি তবে প্রশ্ন হচ্ছে সে তার বাবার সাথে কি বলবে আর কেনোই বা আমার সামনে বলতে পারবে না?
মৌ তার বাবা কে নিয়ে রুমে চলে গেলো। আমি নিচে গিয়ে দেখি আমার মা-বাবা আন্টির সাথে কথা বলছে। আমি সোজা নিচে নেমে আসি তাদের কথাবার্তা থামিয়ে দিয়ে মা-বাবাকে আলাদা করে কিছু বলতে যাবো ঠিক তখনই মৌ এর বাবা পিছন থেকে ডেকে বসলো। মৌ এর বাবার ডাকার শব্দ টা খুবই ভয়ানক ছিলো। পিছন ফিরে মৌ এর দিক তাকাতে মৌ একটা কৃত্রিম হাসি দিয়ে চোখ মেরে সোজা দাঁড়িয়ে রইলো। তা দেখে আমি রিতীমত বোকা হয়ে গেলাম। এইদিকে দিয়ে কাছের বন্ধুর জন্য কান্না ভেঙ্গে পরছি আর অন্য দিক দিয়ে মৌ এর এই দুষ্টুমি নিতে পারছি না। মৌ এর এই দুষ্টুমি গুলো বারবার রাহির কথা ভাবাচ্ছে। রাহি ও এইরকম সিরিয়াস মূহুর্তে কিঞ্চিৎ পরিমাণ হলেও ফাজলামো করতো। মৌ এর বাবা আমার কাছে এসে আমার দিক নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে। একবার ভাবছি মৌ তাহলে কি আংকেল কে সব বলে দিয়েছে?  এই মেয়েকে এইসব বলাটা ভুল হয়েছে ঠিক তখনই আংকেল অদ্ভুত ধরনের এক কথা বলে বসলো,,

- বাবা আমার মেয়ে আমার বাড়িতে থাকবে কিছুদিন যেদিন তোমাদের বুঝাবুঝি ভালো হবে সেদিন তুমি এসে মৌ কে নিয়ে যেও!

আংকেলের কথা শুনে তো অবাক হয়ে তাকিয়েছি। পিছন থেকে আমার মা রেগেমেগে বলল এইটা কেমন ধরনের কথা "বিয়ের পর মেয়ে নিজের বাসায় যদি থাকে তাহলে কেনো বা বিয়ে দিলেন? আমি মা'কে যে-ভাবে দূরে নিয়ে বুঝিয়ে বললাম তোমাকে বাসায় গিয়ে সব বলবো। তুমি শুধু আমার উপর বিশ্বাস রাখো আর তাঁদের কে বলো ঠিক আছে। তখন মা আর কিছু না বলে মাথা নিচু করে নিলো তার মানে সম্মতি দিয়েছে।

আমি জোর গলায় বললাম ঠিক আছে যেদিন আপনার মেয়ে আমাকে ও বুঝবে সেদিন ওই এসে নিয়ে যাবো। কথাটা এক পর্যায় চ্যালেঞ্জের মতো ছুঁড়ে দিয়ে আসলাম। চলে আসবো ঠিক তখনই মৌ এর মা আমার বাবার দিক হা করে তাকিয়ে আছে আর আমার বাবা মৌ এর মায়ের দিক তাকিয়ে আছে!
কিছুই বুঝলামনা কি হচ্ছে? কিন্তু একটু আড়াল করে যখন মৌ এর দিক তাকালাম সে আমাকে ফুঁ দিয়ে কি যানি একটা দেওয়ার বৃথা চেষ্টা করল। কারন আমার কাছে ওই ফুঁ টা পৌছানোর আগে সম্ভবত দেয়ালে ভেজে গেছে। সময়মতো বাসায় এসে মা-বাবাকে রুমে দিয়ে চললাম অন্য মা-বাবার কাছে মানে রাহির বাবা-মায়ের কাছে একমাত্র রাহি তাদের ভরসা ছিলো। আজ আমি যদি রাহি না হতে পারি তাহলে হয়তো ওপারে থেকে কখনোই রাহি আমাকে ক্ষমা করবে না। ২৫ মিনিটের ভিতরে পৌঁছে গেলাম রাহির বাসায়। গিয়ে দেখি পুরো বাড়ি থমকে আছে অন্ধকারে। দরজা গিয়ে কলিং বেল দিতেই কেউ দরজা খুলছে না। দরজা না খুলায় হয়তো আমাকে অনেক কিছু ভাবাচ্ছে। একটু পর কে যানি এসে দরজা খুলে দিলো সবকিছু অন্ধকার হয়ে আছে। হঠাৎ লাইটের আলোয় চোখ ঝাপসে উঠলো। পরে মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলাম,

- কে তুমি?

- স্যার আমি এই বাইতে কাজের ভুয়া। ম্যাডাম আর স্যার আমারে কইয়া গেছে যে সব লাইট বন্ধ কইরা বইসা থাকতাম। কেউ আসলে দরজা না খুলতে। কিন্তু ম্যাডাম আর স্যার অনেকক্ষণ হয়ে গেছে রুমের দরজা খুলে না এহন উফায় না পাইয়া কলিং বেল বাজার পর একটুহানি ভাইবা খুইল্যা দিছি। এহন দেহেন না দরজা খুলে না কেরে?

- তুমি একটু থামো না এতো কথা বলছ কেনো? আমি দেখছি কি করা যায়।

দরজা থেকে একটু দূরে সরে একটা লাথি দিলাম সাথে সাথে দরজা টা নিচে পরে গেলো।  রুমে ঢুকে চারদিকে দেখি অন্ধকার আলো জ্বালতে দেখি আন্টি - আংকেল দু'জনে দু'দিকে পরে আছে। জলদি করে রাহির মোবাইল কল দিয়ে ফেলি হঠাৎ চোখ থেকে পানি পরে গেলো। বিপদের সময় রাহি যেখানে থাকতো দৌড়ে চলে আসতো।

পরে একটা গাড়ী করে দুজন কে হাসপাতালে নিয়ে যাই। কয়েকঘন্টা পর আন্টি আংকেলের জ্ঞান ফিরে। তাঁরা চোখ  খুলে দেখে তাঁদের পাশে বসা আমি। চোখ খুলে টলমল করছে চোখের কোনায় পানিগুলো। আচমকা কেঁদে বলল,,

- বাবা তুমি কেনো এসেছ। আমরা ও আমার ছেলের কাছে চলে যেতাম।

আন্টি কাঁদো কাঁদো স্বরে বলে যাচ্ছে আর আমি তাকিয়ে আছি চোখের পানি টলমল করে পরছে। আন্টির কথার জবাব দিলাম একটু স্বাভাবিক হয়ে,,

- আন্টি তবে কি আমি আপনার ছেলে নয়?

- নাহ বাবা এমন ভাবে বলবা না।

- তাহলে আমার জন্য কি বেঁচে থাকা যায় না।

- বাবা আমাদের ক্ষমা করে দেও আর কখনো এমন করবো না। আজ থেকে তুমি আমাদের রাহি তুমি আমাদের রাসেদ।

আন্টির মুখে শব্দ টা শুনে যেমন পুরো শরীরে হিমশিম শান্তি অনুভব করতে পারলাম। আন্টিদের কে বাসায় দিয়ে এসে ভোরে বাসায় চলে আসলাম। এসে মোবাইল চেক করে দেখি অনেকগুলো মেসেজ। মেসেজ সিন করে দেখি মৌ এর মেসেজ সবগুলো। ভোরবেলা তাই আর কল না দিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।

ঘুম থেকে জেগে দেখি ১১ টা বাজে। মোবাইলের শব্দে ঘুমটা ভেঙ্গে যায়। ঘুম ঘুম চোখে দেখলাম মৌ একের পর এক কল দিয়ে যাচ্ছে। অনিচ্ছাকৃত ভাবে কলটা উঠানো হয় ওপাশ থেকে ধমক স্বরে বলল,,

- একের পর এক কল দিয়ে যাচ্ছি কোনো খোঁজ খবর আছে নি আপনার?

- কি হয়েছে বলে ফেলো ঘুমাচ্ছি এখনো!

- আপনি তো ঘুমাবেন সারাক্ষণ, "এইদিক আসামী পালিয়ে বেড়াবে একের পর এক খুন করে যাবে। একদিন আমাকে উঠিয়ে নিয়ে গেলে বুঝবেন।"

- তোমাকে আসামী উঠিয়ে নিয়ে বিপদে পড়বে সে নিজেই," তুমি কথা বলে মানুষকে মেরে ফেলতে পারবা!"

- কি বললেন?

- কিছু না ঘুম ঘুম চোখে কি না কি বলছি যানি না।

- আচ্ছা একটা তথ্য দেওয়ার ছিলো।

- কি তথ্য?

- আজকে সকালে বাবার মুখ থেকে শুনলাম
বাবা বলছে," কোনো প্রমান রাখবি না "

মৌ এর কথা শুনে এক পলকে চোখের ঘুম চলে গেলো। বিছানা থেকে নেমে জিজ্ঞেস করলাম,,

- আর কিছু বলেছে?

- নাহ, আমি এইটুকু শুনেছি।

- তোমাকে যে বলেছিলাম তোমার বাবার দিক নজর রাখার জন্য তা কি আদৌও আছে?

- অবশ্যই। বাবা আজ সকালে টং দোকানে চা খেতে গিয়েছে আমি পিছন পিছন গিয়েছিলাম তখন দেখলাম বাবা আর কয়েকজন মিলে কি যেনো আলোচনা করছে। হঠাৎ পিছনে তাকিয়ে দেখি আমাকে কে যানি ফলো করছে।  ছেলেটার বয়স খুবই কম তাই আর গুরুত্ব না দিয়ে বাড়িতে চলে আসি।

- তুমি এখন কোথায়?

- কোনো! বাড়িতে আছি।

- তুমি জলদি আমার সাথে দেখা করো।

- কোথায়?

- সাম্মি রেস্তোরাঁ।

- ওকে।

আমার কথা শুনে মৌ একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল " ভিতরে কি রোমান্স করার ইচ্ছে জেগেছে? " পরে রেগেমেগে বললাম যখন কাজের ব্যাপারে আলোচনা করব তখন এইসব নিয়ে আলোচনা করবা না। মৌ কল কেটে মুখ ভার করে হয়তো আমার সাথে দেখা করার জন্য আসছে। একটু তৈরি হয়ে বাসায় থেকে রওনা দিলাম। ৪৫ মিনিট পর রেস্তোরাঁ গেলাম গিয়ে দেখি মৌ বসে আছে। আজও আমি অনেক কথা শুনতে হবে এই মেয়েটা কিভাবে এতো punctual হতে পারে। আর কিছু না ভেবে দেখলাম মেয়েটা চুপ করে আমার দিক অধিক মায়া নিয়ে তাকিয়ে আছে। আশেপাশে দেখি একজন ও মানুষ নাই। পরে ভাবলাম হয়তো রেস্তোরাঁ মানসম্মত নয়। কিন্তু সব ভাবনা দূর করে দিয়ে মৌ আমাকে চমকে দিলো। মৌ এর আজকে বার্থডে অথচ আমি জানি না। তার উপর ওর সাথে দেখা করার জন্য আমি বলেছি রেস্তোরাঁ আমিই ঠিক করেছি শুধু কেইসে এর ব্যাপারে আলোচনা করব কিন্তু এইখানে সবকিছু স্বপ্নের মতো হয়ে গেলো। কিছুটা উদযাপন করে মৌ কে বললাম তুমি এখানে বসো আমি যাবো আর আসবো। ১০ মিনিট পর ফিরে এসে বললাম এইবার কি কেইসের ব্যাপারে আলোচনা করা যায়। মৌ এই কথাটা শুনা মাত্র মুখটা ভারী করে বসে আছে।

মৌ এর দিক তাকিয়ে বললাম,,

- মৌ তোমাকে কয়েকটা কথা জিজ্ঞেস করার ছিলো।

- আপনার তো কেইস ছাড়া আর কিছু জিজ্ঞেস করার ইচ্ছে নেই। ঠিক আছে বলেন কি জানতেন চান?

- ওইদিন কি বলেছ তোমার বাবা কে?

মৌ এর মুখে কৃত্রিম একটা হাসি চলে আসে। তারপর মৌ আমার কথার জবাবে বলল,,

- ওইদিন বাবাকে শুধু বলেছি উনি আমাকে বিয়ের আগে অনেক জ্বালাতন করেছে আমি ও শাস্তি হিসাবে উনাদের বাড়িতে কয়েকদিন যাবো না তখন বুঝবে আমার প্রয়োজন কতটুকু। ব্যাস হয়ে গেলো সমাধান।

- এইটুকু?

- হ্যাঁ

- বোকা শশুর আমার।

মৌ চেয়ার থেকে উঠে এইদিক ওইদিক করে।
মৌ রেস্তোরাঁ ভিতরে হাঁটু গেড়ে বসে আমার হাতে একটা শপিং ব্যাগ দিয়ে বলল,,

- এইটা আপনার জন্য। আপনি কি আমাকে আপনার বাসায় নিয়ে যাবেন?

আমি হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছি চারদিকে শূন্য নেই কোনো হা হা কার। মেয়েটার দিক তাকিয়ে অবাক হয়ে আছি কিভাবে পারে এইসব। আজকে তার বার্থডে অথচ আমাকে গিফট দিচ্ছে। পরে আর কিছু না ভেবে বললাম হ্যাঁ।

মৌ বসা থেকে উঠে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমার পুরো শরীর শিহরণ হয়ে কাঁপতে লাগলো। টানা ২ মিনিট জড়িয়ে রেখেছে আমায়। পরে এক পর্যায় ছেড়ে দেওয়ার পর আমি বসে ভাবছি এইসব কি হয়ে গেলো। পরে এই রোমান্টিকতা আড়াল করার জন্য বললাম,,

- তুমি যেভাবে হোক তোমার বাবার দিক নজর রাখবে কেমন?

মেয়েটা এতো কিছুর পর যখন আমার থেকে এইরকম ধরনের কথা শুনতে পায় মাথাটা নিচু করে কিছুটা সম্মতির স্বরে বলল ঠিক আছে।
মৌ একটু অবাক করে দিয়ে বললাম তোমার পা টা একটু দেখতে পারবো। মৌ আমার কথা শুনে আমার দিক এমন ভাবে তাকালো এ যেনো আমি কি না কি বলে ফেলেছি। পরে দেখি মৌ হাসি দিয়ে বলল,,

"এই যে আমার পা "

মৌ এর পায়ের দিক তাকিয়ে দেখি কতো সুন্দর করে মেহেদী একেঁ রেখেছে। শুধু মিসিং ছিলে নূপুরের আর সেইটা পূরণ করার দায়িত্ব টা না হয় আমি পালন করি। পকেটে থেকে একজোড়া নূপুর বের করে পায়ে পড়িয়ে দিলাম। মৌ আমার দিক অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে হয়তো কখনোবা এইরকম আশা করেনি যা হঠাৎ আজ পূরণ হয়ে গেলো।
আমি যে ১০ মিনিটের জন্য রেস্তোরাঁ থেকে বের হয়ে গেলাম তখনই এই নূপুর ক্রয় করে নিয়ে আসি। দু'জনে স্বাভাবিক ভাবে বসে আছি তখনই মৌ কে বললাম,,

- এইটা আমার ভালোবাসা তোমার প্রতি। তুমি এইটা সারাক্ষণ পায়ের মধ্যে পড়ে থাকবে যেখানে যাও না কেনো। আমি হয়তো কাজের জন্য সবসময় তোমার পাশে থাকবো না তবে অবশ্যই আমার ভালোবাসা তোমার সাথে থাকবে।

মৌ ভ্রু কুঁচকে বলল,,,

- আমি এই ভালোবাসা কখনো আমার থেকে আলাদা করব না।

- আচ্ছা মৌ তুমি বাসায় যাও পরে কথা হবে। আমার এইখানে একটু কাজ আছে।

- ঠিক আছে। আপনিও জলদি বাসায় গিয়ে কল দিবেন।

- ওকে।

মৌ চলে যাচ্ছে আমি মাথা নিচু করে বসে আছি। কয়েক সেকেন্ড পর কারো স্পর্শ আমার কপালে একে দিলো তাকিয়ে দেখি মৌ আমার কপালে কিস করে লজ্জা পেয়ে চলে যাচ্ছে। আমি পিছন থেকে বসে মুচকিভাবে হেসে যাচ্ছি। মৌ যাওয়ার ২০ মিনিট পরই মৌ এর বাবা এসে উপস্থিত। আমি এতোক্ষণ যাবত মৌ এর বাবার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। মৌ এর বাবা এসে আমাকে বলল,,

- বাবা এতো জরুরি তলব?

- আংকেল আপনাকে কিছু দেখাবো আশা করি আপনি যা জানেন তা সহজে বলে দিবেন।

- ঠিক আছে বাবা।

- আচ্ছা আংকেল এই ছবিটা কিসের জন্য উঠিয়েছেন?

গোপনীয় রুম থেকে যে ছবিটা পেয়েছিলাম। সেই ছবিটা দেখিয়ে আংকেল কে বললাম।
আংকেল তার জবাবে বলল,,

- বাবা এই ছবিটা তো আমি উঠায় নাই আর একজন উঠিয়েছ উনি ও সাথে ছিলো এইখানে তো উনার থাকার কথা!

- উনি টা কে ছিলো?

- রবিন সাহেব,,, উনাকে আমি তেমন ভালো করে চিনি না তবে উনি তোমার ব্যাপারে আমাকে বলেছিল তারপর ওই মৌ এর সাথে তোমার বিয়ে ঠিক করি।

- বুঝলাম!  কিন্তু এমন অপরিচিত একজনের কথা শুনে মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি হয়ে গেলেন?

- বাবা ঘটক তো সবসময় অপরিচিত থাকে।

- ঠিক বুঝলাম না!

- উনি তোমার বিয়ের ব্যাপারে ঘটকালি করেছে মানে আমার কাছে তোমার বিয়ে প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। এবং তোমার বাবার কাছেও।

আমি মূহুর্তের মধ্যে থমকে গেলাম তাহলে রবিন যা বলছে তা সত্য ছিলো।  রবিন এসব করেছ তাহলে তো আমি রবিন কে আমার সামনে মরতে দেখলাম তবে কি এর পিছনে রবিন কে ছাড়া অন্য কেউ ছিলো যে রবিন কে সাহায্য করেছে। রবিন এই ঘটনার একজন খেলোয়াড় ছিলো মাত্র তাহলে কোচ অন্য কেউ।

তাহলে কি রবিনের পরিচিত কেউ এইসব করে যাচ্ছে। ঠিক তখনই মৌ এর কল আসে আমার মোবাইলে,,

- কি হয়েছে মৌ?

- আপনি কোথায় জলদি আসেন!

- কি হয়েছে কোথায় তুমি? আর তোমার কন্ঠ এমন শুনাচ্ছে কেনো?

- আপনি জলদি আসেন ৭ নাম্বার রোডে কয়েকজন মিলে আমাকে ফলো করছে।

- তুমি একদম টেনশন করবা না আমি তোমার পিছনে আছি তুমি নির্দ্বিধায় হাঁটতে থাকো একটু ভয় পাবা না। এইটুকু বিশ্বাস রেখো আমি তোমার পাশে আছি। তুমি একটু ভয় পাইবা না আর হে তোমার নূপুরে আমি ছোট একটা ডিভাইস দিয়ে দিছি তুমি হাঁটতে থাকো।

কথাটা শেষ করতে না করতে মৌ এর কল কেটে গেলো। আমি রেস্তোরাঁ থেকে উঠে আংকেল কে বললাম আপনি বাসায় গিয়ে আন্টিকে দেখেন। আমি মৌ এর কাছে যাচ্ছি কয়েকঘন্টার ভিতরে আপনার সামনে থাকবো আমরা।

চলবে,,,,





Post a Comment

0 Comments