golpo-ghar.blogspot.com |
অফিস থেকে বেরুতেই দেখি জরিনা খালা R15 বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে পার্লার থেকে সেজে আসছে। চোখে কালো সানগ্লাস।
আরে নাহ! আমি হয়তো ভুল দেখতেছি। ওইটা অন্যকেউ।
কাছাকাছি আসতেই আমারে ডাকলো,
ভাইজান এইয়ানে!
আসলেই তো এটা জরিনা খালা।
কি ব্যাপার জরিনা খালা এটা কার বাইক? আর তুমি এই সাজ ক্যান?
আরে ভাইজান কইয়েন না! আর হোলার শখ জাগছে আরে আর হেতের বাপরে আবার বিয়া করাইবো।
তাই হোলার শখ হুরুনোর লাইগা আবার নতুন করি বিয়া কইরতাছি! হোলার শখ আই বাইক লই এন্ট্রি দিমু। তই বাইক ভাড়া করি লই আছি।
কথা শুনে আমার মাথা ঘুরছে।
কি সব বলো জরিনা খালা? এই বয়সে এইগুলো মানায়!
আরে ভাইজান মানায় মানায়! ক্যান আরে দেখতে কি বুড়ি লাগে। দেহেন ক্যাটরিনার ত্তুন কম সুন্দর নি!
হ হ সুন্দর! তো আমার অফিসের সামনে ক্যা?
আই পার্লারে আইছি। আফায় কইছে আন্নেরে বিয়া বাড়িতে লিফট দেয়ার লাইগা। কমিউনিটি সেন্টার আন্নে চিনবেন না। তাই আন্নেরে লই যাইবার লাই আইছি।
এর মধ্যে আরো শ খানেক মহিলা বাইক নিয়ে চলে আসছে আমাদের পেছনে।
এগুলো কারা জরিনা খালা?
ভাইজান এগুলো শহরের বুয়া কমিটির সদস্য। হেতিরাও বাইক লই আর হেছনদি এন্ট্রি দিবো।
অদভোদ ব্যাপার সব। যাকগে,
আমি তো বাইক চালাতে পারি না। ভয়ে ভয়ে জরিনা খালার পেছনে উঠলাম। জরিনা খালা দেখি বার বার ড্রস মারে। তিড়িং বিড়িং করে বাইক চালায় । স্পীড কন্টোল ও ঠিক নাই।
তুমি বাইক চালাইতে পারোতো জরিনা খালা?
হ চালাইতে হারি! কিন্তু থামাইতে হারি না। মাঝে মাঝে আশেপাশে লোকজনরে মাইরা থামাইতে অয়!
বিয়ের কাছাকাছি আইসা দুইজন লোকরে আহত কইরা থামিয়েছে বাইক। এদিকে আমার কোমর ভাঙ্গছে। কোনরকম বিয়ের আসরে পৌছালাম। ওইখানে দেখি রুপন্তী আর রুপন্তীর আম্মু দুজন ই উপস্থিত।
সবাই জরিনা খালার এন্ট্রি দেখতাছে।
হঠাৎ রুপন্তী বললো,
পাপ্পা আমিও বিয়ে করবো! আমিও বাইক নিয়ে দুম স্টাইলে এন্ট্রি দিবো। আমাকে বিয়ে করাও না পাপ্পা?
চুপ একদম চুপ! এখনো HSC হয়নি বিয়ের জন্য লাফাচ্ছো।
রুপন্তীর আম্মু আমার উপর রেগে বললো,
আপনি রুপন্তীকে বকছেন কেন? HSC না হলে ওর কি দোষ? দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা মেয়েদের বিয়ের কথা না ভাবলে সেটা ওর দোষ? আরে আমার মেয়ের মতো কতো অবলা মেয়ে এট্টুখানি বিয়ে করার জন্য মরে যাচ্ছে। তাদের একটা মাত্র ইচ্ছা বিয়েতে নাচবে, বাইক নিয়ে এন্ট্রি দিবে, ফটোশ্যুট করবে।
এতে আপনাদের এতো জ্বলে ক্যান?
কথাগুলো শুনে বেকুব হয়ে গেলাম।
এদিকে কিছু লোক আইসা আমারে বললো,
আন্নে একটু জরিনা খালার জামাইরে নিয়ে আসেন। সে লজ্জা পাচ্ছে।
ওমা! লজ্জা! এই বয়সে।
গিয়ে দেখি শালা মদ খেয়ে পড়ে আছে।
কিরে তোর আজকে বিয়া না?
হ ভাইজান এই দুঃখে মদ খাইতাছি। আপনে কখনো একই এক্সিডেন্ট দুইবার করেছেন? এক ভুল দুইবার করেছেন?
না!
তো আপনে আমারে কেমনে করতে কন? তা ও একি মহিলারে!
কোনরকম বুঝাইয়া নিয়ে আসলাম স্টেইজে জরিনা খালার জামাইরে।
বিয়ের চলছিল! এমন সময় রুপন্তীর আম্মু আমাকে বললো,
রুপন্তীর পাপ্পা চলেন না আমরা আবার বিয়ে করি। আমিও বাইক নিয়ে এন্ট্রি দিমু।
হ দিও! আর আমি গাধায় চড়ে এন্ট্রি দিমুনে।
হঠাৎ গুলির আওয়াজ! ডাকাত হানা দিয়েছে!
যার যা আছে সব চুপচাপ দিয়ে দাও।
আমি রুপন্তীর আম্মুকে সামনে এগিয়ে দিলাম।
ডাকাতরা সবার গয়না, মোবাইল, টাকা পয়সা যা আছে সব নিয়ে চলে গেল।
এদিকে জরিনা খালার জামাইও ডাকাতের গাড়িতে উঠে পালালো।
জরিনা খালা কাঁদতেছে।
আমি স্বান্তনা দিচ্ছিলাম। কাঁদিও না! সব ঠিক হয়ে যাবে।
আরে হরেন! আই হেতের লাই কান্দি নো! হেতের পকেটে টিভির রিমোর্ট আছিল। আই এহন সিরিয়াল দেখমু কেমনে? ভ্যা,,, ভ্যা ,,,ভ্যা ,,,
রুপন্তীর পাপ্পা উঠেন উঠেন! বেলা দশটা বাজে!
উঠে দেখি। জরিনা খালা মিক্সার মেশিন চালাচ্ছে!
যাহ শালা আমিতো স্বপ্ন দেখছিলাম।
(রুপন্তীর পাপ্পা-রম্য গল্প)
0 Comments
Thanks for your valuable comment. We will be back soon.
Thank you 😊😊😊